অংশগ্রহণকারী কমিটি গঠন প্রণালী
[বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১৫ অনুযায়ী]
ভ‚মিকাঃ বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ (সংশোধিত-২০১৩) এর ধারা-২০৫ মোতাবেক-যে সমস্ত প্রতিষ্ঠানে অন্যূন ৫০ জন শ্রমিক কর্মরত আছেন এরূপ প্রতিষ্ঠানের মালিক উক্ত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিকদেরকে প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্ত করিয়া বিধি দ্বারা নির্ধারিত পন্থায় তাহার প্রতিষ্ঠানে একটি অংশগ্রহণকারী কমিট গঠন করতে হবে। প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিক এবং মালিক সকলেরই অঙ্গীভ‚ত হওয়ার ভাব প্রোথিত ও প্রসার করা, প্রতিষ্ঠানের প্রতি শ্রমিকগণের অঙ্গীকার ও দায়িত্ববোধ জাগ্রত করা, শ্রমিক ও মালিকের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাস, সমঝোতা এবং সহযোগীতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা চলানো, শ্রম আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করা, শৃঙ্খলাবোধে উৎসাহিত করা, নিরাপত্তা, পেশাগত স্বাস্থ্য রক্ষা এবং কাজের অবস্থার উন্নতি বিধানের লক্ষ্যে অংশগ্রহণকারী কমিটি গঠন করা হয়।
কমিটি গঠনের উদ্দেশ্যঃ অংশগ্রহণকারী কমিটির উদ্দেশ্য হচ্ছে-শ্রমিক এবং মালিকের সুবিধা ও স্বার্থ সংরক্ষণ করা। প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিক ও মালিক সম্পর্ক নিয়ন্ত্রণ এবং উভয় পক্ষের মধ্যে কোন বিভেদ, বিরোধ অথবা এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ও সহায়ক বিষয়সমূহ পরিহার ও মীমাংসা এবং শ্রমিকের দাবী ও মালিকের স্বার্থ উভয় পক্ষের আলোচনার মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য সমাধানে এসে, কাজের সুন্দর পরিবেশ বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় মধ্যস্থতা এবং সক্রিয় অংশগ্রহণ করা যেন পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত পণ্যের গুণগত মান বজায় রেখে একটি সুন্দর ও সুশৃংখলভাবে উত্তরাত্তোর উন্নতির শিখরে পৌঁছতে সক্ষম হয়।
ধারা-২০৫ মোতাবেক-অংশগ্রহণকারী কমিটিঃ
১) অন্যূন ৫০ জন শ্রমিক সাধারণতঃ কর্মরত আছেন এরূপ প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের মালিক উক্ত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিকদেরকে প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্ত করিয়া বিধি দ্বারা নির্ধারিত পন্থায় তাহার প্রতিষ্ঠানে একটি অংশগ্রহণকারী কমিটি গঠন করিবেন।
২) উক্ত কমিটিতে মালিক ও শ্রমিকগণের প্রতিনিধি সমন্বয়ে গঠিত হইবে।
৩) উক্ত কমিটিতে শ্রমিকগণের প্রতিনিধির সংখ্যা মালিকের প্রতিনিধির সংখ্যার কম হইবে না।
৪) শ্রমিকগণের প্রতিনিধি প্রতিষ্ঠানের ট্রেড ইউনিয়নসমূহের মনোনয়নের ভিত্তিতে নিযুক্ত হইবেন।
৫) সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের যৌথ দরকষাকষি প্রতিনিধি ব্যতীত অন্য প্রত্যেক ট্রেড ইউনিয়ন সমসংখ্যক প্রতিনিধি মনোনীত করিবে এবং যৌথ দরকষাকষি প্রতিনিধি এমন সংখ্যক প্রতিনিধি মনোনীত করিবে যাহা অন্য ট্রেড ইউনিয়নসমূহের মোট মনোনীত প্রতিনিধিগণের অপেক্ষা ১ জন বেশি হয়।
৬) যে প্রতিষ্ঠানে কোন ট্রেড ইউনিয়ন নাই, সে প্রতিষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী কমিটিতে শ্রমিক প্রতিনিধিগণ উহাতে কর্মরত শ্রমিকগণের মধ্য হইতে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পন্থায় নির্বাচিত হইবেন।
৬ক) যে প্রতিষ্ঠানে কোন ট্রেড ইউনিয়ন নাই, সে প্রতিষ্ঠানে ট্রেড ইউনিয়ন গঠিত না হওয়া পর্যন্ত অংশগ্রহণকারী কমিটির শ্রমিক প্রতিনিধিগণ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম পরিচালনা করিতে পারিবে।
৭) যে ক্ষেত্রে কোন প্রতিষ্ঠানে অন্যূন ৫০ জন শ্রমিক নিযুক্ত আছেন এমন কোন ইউনিট থাকে, সে ক্ষেত্রে অংশগ্রহণকারী কমিটির সুপারিশে, উহার জন্য বিধি দ্বারা নির্ধারিত পন্থায় একটি ইউনিট অংশগ্রহণকারী কমিটি গঠন গঠন করা যাইবে।
৮) উক্ত ইউনিট অংশগ্রহণকারী কমিটি মালিক এবং উক্ত ইউনিট ও উহার অধীনে কর্মরত শ্রমিকগণের প্রতিনিধি সমন্বয়ে গঠিত হইবে।
৯) অংশগ্রহণকারী কমিটিতে শ্রমিক পক্ষের নির্বাচিত বা মনোনীত কর্মকর্তা ও সদস্যদের কমিটির মেয়াদকালে তাহাদের সম্মতি ব্যতিরেকে মালিক বদলী করিবেন না।
১০) অংশগ্রহণকারী কমিটির শ্রমিক প্রতিনিধিদেরকে কমিটির দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম পরিচালনাকালে সরল বিশ্বাসে সম্পাদিত কাজের জন্য মালিক তাহাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ উত্থাপন বা প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা করিবেন না।
১১) অংশগ্রহণকারী কমিটির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য এই ধারার বিধানাবলী, ইউনিট অংশগ্রহণকারী কমিটির ক্ষেত্রেও, যতদূর সম্ভব, প্রযোজ্য হইবে।
বিধি-১৮৩ মোতাবেক-অংশগ্রহণকারী কমিটি গঠনঃ
(১) অন্যূন ৫০ জন স্থায়ী শ্রমিক কর্মরত রহিয়াছেন এমন প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের মালিক উক্ত প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু হইবার পরবর্তী ৩ (তিন) মাসের মধ্যে সেখানে একটি অংশগ্রহণকারী কমিটি গঠন করিবেন।
(২) অংশগ্রহণকারী কমিটিতে উভয়পক্ষে মোট সদস্য সংখ্যা ৬ জনের কম এবং ৩০ জনের অধিক হইবে না।
(৩) অংশগ্রহণকারী কমিটি মালিক ও শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধির সমন্বয়ে গঠিত হইবে এবং শ্রমিক পক্ষের প্রতিনিধির সংখ্যা মালিকপক্ষের সদস্য সংখ্যার কম হবে না।
(৪) অংশগ্রহণকারী কমিটির সদস্য সংখ্যা কারখানা বা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিকের সংখ্যানুপাতে নি¤œবর্ণিত ছকে উল্লিখিত হারে নির্ধারিত হইবে, যথাঃ
বিধি-১৮৪ মোতাবেক-
যৌথ দর-কষাকষি প্রতিনিধি ও ট্রেড ইউনিয়ন কর্তৃক অংশগ্রহণ কমিটিতে প্রতিনিধি মনোনয়নঃ
(১) ধারা ২০৫(৫) মোতাবেক প্রতিষ্ঠানে বিদ্যমান রেজিস্টার্ড ট্রেড ইউনিয়নসমূহ অংশগ্রহণকারী কমিটিতে শ্রমিকদের প্রতিনিধি প্রেরণের জন্য মালিকের নিকট প্রতিনিধিদের নাম ও বিবরণ তাহার নিকট হইতে অনুরোধ প্রাপ্ত হইবার ১০ (দশ) দিনের মধ্যে ফরম-৬৩ অনুযায়ী পেশ করিবে।
(২) ট্রেড ইউনিয়ন ও যৌথ দরকষাকষি প্রতিনিধি কর্তৃক শ্রমিক প্রতিনিধি মনোনয়নের সময় যাহাতে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন শ্রেণি, শাখা, অথবা বিভাগসমূহ হইতে প্রতিনিধি মনোনীত হয় উহা নিশ্চিত করিতে হইবেঃ
তবে শর্ত থাকে যে, প্রতিষ্ঠানের কোন শ্রেণি, শাখা বা বিভাগে মহিলা শ্রমিক থাকিলে সেইখানে অংশগ্রহণকারী কমিটিতে মহিলা শ্রমিকদের মনোনয়নকে অগ্রাধিকার প্রদান করিতে হইবে।
বিধি-১৮৫ মোতাবেক-অংশগ্রহণকারী কমিটিতে মালিকের প্রতিনিধি মনোনয়নঃ
(১) প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সাধারণত প্রধান নির্বাহী অথবা বিভাগীয় অথবা শাখা প্রধানগণ বা কল্যাণ কর্মকর্তা মালিকের প্রতিনিধি হইবেন এবং যেখানে এইরূপ বিভাগ অথবা শাখা নাই, সেইখানে বিভাগ অথবা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা কল্যাণ কর্মকর্তা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে মালিকের প্রতিনিধি হইবেন।
(২) উপ-বিধি (১) এ উল্লিখিত প্রতিক্ষেত্রে উক্ত প্রতিনিধি মালিক কর্তৃক মনোনীত হইতে হইবেন।
বিধি-১৮৬ মোতাবেক-অংশগ্রহণ কমিটিতে প্রেরিত প্রতিনিধিদের নাম প্রকাশঃ
(১) যৌথ দর-কষাকষি প্রতিনিধি ও ট্রেড ইউনিয়নের নিকট হইতে মনোনয়ন পাইবার ৭ (সাত) দিনের মধ্যে মালিক বিজ্ঞপ্তি মারফত অংশগ্রহণকারী কমিটি গঠন করিবেন এবং সেই বিজ্ঞপ্তি নোটিস বোর্ডে প্রদর্শন করিতে হইবে এবং যৌথ দর-কষাকষি প্রতিনিধিসহ প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য ট্রেড ইউনিয়ন এবং শ্রম পরিচালককে উহার কপি প্রেরণ করিতে হইবে।
তবে শর্ত থাকে যে, অংশগ্রহণকারী কমিটিতে যৌথ দর-কষাকষি প্রতিনিধি বা ট্রেড ইউনিয়ন কর্তৃক মনোনীত কোন প্রতিনিধির অবসরজনিত কারণে বা চাকরিচ্যূতি বা স্বেচ্ছায় চাকরি ত্যাগ করা, ইত্যাদি কারণে চাকরির অবসান ঘটিলে অথবা শারীরিক বা মানসিক কারণে দায়িত্ব পালনে অক্ষম হইলে অথবা নৈতিক স্খলনজনিত কারণে দন্ডিত হইলে অথবা পদত্যাগ করিলে অংশগ্রহণকারী কমিটিতে উক্ত প্রতিনিধির পদ শূন্য হইবে।
(২) উপ-বিধি (১) এর অধীন শূন্য পদে যৌথ দর-কষাকষি প্রতিনিধি বা ট্রেড ইউনিয়ন নতুন মনোনয়ন প্রদান করিতে পারিবে এবং উক্ত মনোনয়ন পাইবার ৭ (সাত) দিনের মধ্যে মালিক নতুন প্রতিনিধি সমন্বয়ে অংশগ্রহণকারী কমিটি পুনর্গঠন করিবেন।
বিধি-১৮৭ মোতাবেক-
প্রতিষ্ঠানে ট্রেড ইউনিয়ন না থাকিলে শ্রম পরিচালককে অবহিত করিয়া অংশগ্রহণকারী কমিটিতে শ্রমিক প্রতিনিধি নির্বাচনের পদ্ধতিঃ
(১) যে প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন বা যৌথ দরকষাকষি প্রতিনিধি (সিবিএ) নাই সেই ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ শ্রম পরিচালককে অবহিত করিয়া গোপন ব্যালটের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারী কমিটির শ্রমিক প্রতিনিধি নির্বাচনে প্রয়োজনীয় সহায়তা করিবে।
(২) শ্রম পরিচালক অনুরুদ্ধ হইলে উক্তরূপ নির্বাচন কার্যক্রম তদারকি করিতে পারিবেন এবং উক্তরূপ নির্বাচন কার্যক্রম পরিচালনায় কারখানা বা প্রতিষ্ঠানের মালিক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোন প্রভাব বিস্তার করিতে পারিবেন না।
(৩) নির্বাচিত শ্রমিক প্রতিনিধির তালিকা নির্বাচনের ১০ (দশ) দিনের মধ্যে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি শ্রম পরিচালককে লিখিতভাবে প্রেরণ করিবে।
বিধি-১৮৮ মোতাবেক-নির্বাচন পরিচালনা কমিটিঃ
(১) মালিক নির্বাচনের অন্যূন ৩০ (ত্রিশ) দিন পূর্বে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য মালিক ও শ্রমিকের সমন্বয়ে ৩ (তিন) হইতে ৫ (পাঁচ) সদস্য বিশিষ্ট একটি নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করিবেন এবং উহার অনুলিপি শ্রম পরিচালকের নিকট প্রেরণ করিবেন।
(২) উপ-বিধি (১) এ উল্লিখিত নির্বাচন পরিচালনা কমিটিতে মালিক ও শ্রমিক পক্ষের প্রতিনিধির অনুপাতিক হার হইবে ২ঃ৩।
(৩) উপ-বিধি (১) এর অধীন গঠিত কমিটি বিজ্ঞপ্তি মারফত প্রচার করিয়া নির্বাচনের একটি তফসিল ঘোষণা করিবে, যেখানে ভোটার তালিকা প্রণয়ন, মনোনয়নপত্র জমা, যাচাই-বাঁছাই, প্রত্যাহার, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ও নির্বাচনী প্রতীক বরাদ্দসহ নির্বাচন অনুষ্ঠানের তারিখ নির্দিষ্টভাবে উল্লেখ থাকিবেঃ
তবে শর্ত থাকে যে, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের অনধিক ৭ দিনের মধ্যে মনোনয়নপত্র জমা দানের সুযোগ প্রদান এবং প্রার্থিতা চূড়ান্ত হইবার পরবর্তী ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করিতে হইবে।
বিধি-১৮৯ মোতাবেক-অংশগ্রহণকারী কমিটিতে প্রতিনিধি নির্বাচিত হইবার জন্য প্রার্থীর যোগ্যতাঃ
(১) যেকোন প্রাপ্ত বয়স্ক শ্রমিক, প্রতিষ্ঠানে যাহার চাকরি ৬ (ছয়) মাসের কম নহে তিনি অংশগ্রহণকারী কমিটিতে প্রতিনিধিত্ব করিবার জন্য অনুষ্ঠিতব্য গোপন ব্যালটে প্রার্থী হইতে পারিবেনঃ
তবে শর্ত থাকে যে, কোন প্রতিষ্ঠানের বয়স ১ বৎসরের কম হইলে নির্বাচনে প্রার্থীর চাকরির মেয়াদ প্রযোজ্য হইবে না।
(২) মালিক প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন শ্রেণি, শাখা, অথবা বিভাগসমূহ হইতে কতজন প্রতিনিধি নির্বাচিত হইবে উহা নির্ধারণ করিবেন।
(৩) কোন প্রতিষ্ঠানে ৫০ জন মহিলা শ্রমিক বা মোট শ্রমিকের ১০% মহিলা শ্রমিক থাকিলে মহিলা শ্রমিকদের মধ্য হইতে আনুপাতিক হারে প্রতিনিধি নির্বাচনের ব্যবস্থা রাখিতে হইবে।
বিধি-১৮৯(৩) মোতাবেক-অংশগ্রহণকারী কমিটিতে মহিলা প্রার্থীর সংখ্যাঃ
কোন প্রতিষ্ঠানে ৫০ জন মহিলা শ্রমিক বা মোট শ্রমিকের ১০% মহিলা শ্রমিক থাকিলে মহিলা শ্রমিকদের মধ্য হইতে আনুপাতিক হারে প্রতিনিধি নির্বাচনের ব্যবস্থা রাখিতে হইবে।
বিধি-১৯০ মোতাবেক-ভোটারের যোগ্যতাঃ
(১) সাময়িক, বদলি, শিক্ষাধীন, মৌসুমি শ্রমিক ও ঠিকাদার কর্তৃক নিয়োজিত শ্রমিক ব্যতীত অন্য সকল শ্রমিক যাহারা প্রতিষ্ঠানে অন্যূন ৩ (তিন) মাস চাকরি করিয়াছেন, তাহারা প্রত্যেকেই অংশগ্রহণকারী কমিটিতে শ্রমিকদের প্রতিনিধি নির্বাচনে ভোট প্রদান করিতে পারিবেন।
(২) ভোটার তালিকার প্রতিলিপি যুগপৎ নোটিশ বোর্ড এবং প্রতিষ্ঠানের প্রকাশ্য স্থানসমূহে প্রদর্শিত হইতে হইবে এবং ভোটার তালিকার একটি প্রতিলিপি শ্রম পরিচালক বা রেজিস্ট্রার অব ট্রেড ইউনিয়ন্স এর নিকট প্রেরণ করিতে হইবে।
বিধি-১৯১ মোতাবেক-মনোনয়নঃ
(১) যেকোন ভোটার অংশগ্রহণকারী কমিটিতে প্রতিনিধি নির্বাচনের উদ্দেশ্যে ১জন ভোটারের নাম প্রস্তাব অথবা সমর্থন করিতে পারিবেন।
(২) ধারা-২০৫(৬) মোতাবেক নির্বাচন পরিচালনা কমিটি কর্তৃক সরবরাহকৃত মনোনয়নপত্র ফরম-৬৪ অনুযায়ী হইবে এবং উহা প্রস্তাবক ও সমর্থক এবং প্রার্থী কর্তৃক স্বাক্ষরিত হইতে হইবে।
(৩) প্রত্যেক মনোনয়নপত্র মনোনয়ন দাখিলের নির্ধারিত দিবসে অথবা উহার পূর্বে প্রার্থী অথবা তাহার প্রস্তাবক অথবা তাহার সমর্থক কর্তৃক নির্বাচন পরিচালনা কমিটির নিকট দাখিল করিতে হইবে এবং কমিটি লিখিত স্বীকারপত্রের মাধ্যমে মনোনয়নপত্র গ্রহণ করিবে।
বিধি-১৯২ মোতাবেক-বাঁছাইঃ
(১) মনোনয়নপত্র নিরীক্ষাকালীন প্রার্থীগণ নিজে বা তাহার প্রস্তাবককারী বা সমর্থনকারী অথবা তাহার ক্ষমতাপ্রাপ্ত অন্য যেকোন ব্যক্তি উপস্থিত থাকিতে পারিবেন।
(২) নির্বাচন কমিটি উপ-বিধি (১) অনুযায়ী মনোনয়নপত্র বাঁছাইয়ের সময় উপস্থিত সকল ব্যক্তির সম্মুখে মনোনয়নপত্রসমূহ পরীক্ষা করিবে এবং যেকোন মনোনয়নপত্র সম্পর্কে কোন ব্যক্তি কোন আপত্তি উত্থাপন করিলে উহার নিষ্পত্তি করিবে।
(৩) নির্বাচন কমিটি যেকোন মনোনয়নপত্র বাতিল করিতে পারিবে যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে,-
(ক) প্রার্থী আইন বা এই বিধিমালা অনুযায়ী শ্রমিকদের প্রতিনিধি হইবার অযোগ্য; অথবা
(খ) মনোনয়নপত্র জমাদানের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিধির কোন নিয়ম মান্য করা হয় নাই।
বিধি-১৯৩ মোতাবেক-নির্বাচনে ভোট দানঃ
(১) যে সকল প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ বলিয়া গৃহীত হইবে তাহদের সংখ্যা যদি নির্বাচিতব্য প্রতিনিধির সমান হয় সেই ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিটি বিজ্ঞপ্তি দ্বারা সকল প্রার্থীকে নির্বাচিত ঘোষণা করিবে।
(২) যদি কোন শ্রেণি, শাখা অথবা বিভাগে নির্ধারিত আসনের চেয়ে প্রার্থীর সংখ্যা অধিক হয় তাহা হইলে নির্বাচনের জন্য নির্ধারিত তারিখে গোপন ব্যালটে ভোট অনুষ্ঠিত হইবে।
(৩) প্রত্যেক ব্যালটে প্রার্থীর নাম ও নামের বিপরীতে বরাদ্দকৃত প্রতীক উল্লিখিত থাকিবে।
(৪) ভোট গ্রহণের সময়ে প্রার্থী অথবা তাহার প্রস্তাবকারী অথবা সমর্থনকারী অথবা প্রার্থী কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত একজন প্রতিনিধি উপস্থিত থাকিতে পারিবেন।
(৫) একজন ভোটার একের অধিক ভোট প্রদান করিতে পারিবেন না।
(৬) ভোট গণনা শেষে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধি প্রার্থীদের বা তাহাদের প্রতিনিধির সম্মুখে ভোট গণনা করিয়া ফলাফল ঘোষণা করিবেন এবং উপস্থিত প্রার্থীর বা তাহার প্রতিনিধির স্বাক্ষরসহ মালিকের নিকট প্রকাশ করিবেন।
বিধি-১৯৪ মোতাবেক-অংশগ্রহণকারী কমিটির কর্মকর্তাগণঃ
(১) প্রতিষ্ঠানের মালিক বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি অংশগ্রহণকারী কমিটির চেয়ারম্যান হইবেন এবং তিনি অংশগ্রহণকারী কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করিবেন।
(২) শ্রমিকদের প্রতিনিধিগণ তাহাদের মধ্য হইতে সহ-সভাপতি নির্বাচন করিবেন এবং তিনি সভাপতির অনুপস্থিতিতে কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করিতে পারিবেন।
(৩) পার্সোনেল অফিসার অথবা কল্যাণ কর্মকর্তা বা উক্তরূপ দায়িত্ব পালনকারী কোন কর্মকর্তা কমিটিতে মালিক পক্ষের অন্যতম প্রতিনিধি হইবেন এবং সদস্য-সচিব হিসাবে দায়িত্ব পালন করিবেন এবং তিনি কমিটির সভার বিবরণী লিপিবদ্ধ করিবার জন্য এবং সভা আহবান করিবার জন্য দায়ী থাকিবেন।
বিধি-১৯৫ মোতাবেক-সভার নোটিশ ও কার্যবিবরণীঃ
(১) ৭ (সাত) দিনের সময় প্রদান করিয়া অংশগ্রহণকারী কমিটির সভার নোটিস জারি করিতে হইবে, তবে, জরুরি সভা অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে ২৪ ঘন্টার নোটিস প্রদান করা যাইবে।
(২) অংশগ্রহণকারী কমিটির সকল প্রতিবেদন ও সভার কার্য বিবরণীর কপি সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নের জন্য প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, যৌথ দরকষাকষি প্রতিনিধি, কমিটিতে প্রতিনিধি রহিয়াছে এমন প্রত্যেক ইউনিয়ন এবং শ্রম পরিচালকের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে।
বিধি-১৯৬ মোতাবেক-সভার কোরামঃ
(১) অন্যূন (দুই-তৃতীয়াংশ) সদস্য উপস্থিত থাকিলে সভায় কোরাম হইবে।
(২) কর্মদিবস ও কর্ম চলাকালীন সময়ে কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হতে হবে;
(৩) কমিটির সভায় অংশগ্রহণের জন্য কর্তৃপক্ষ কোন মজুরী কর্তন করিতে পারিবেন না;
ধারা-২০৭ মোতাবেক-অংশগ্রহণকারী কমিটির সভাঃ
১) ধারা-২০৬ এর অধীন কার্যাবলী সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার সুপারিশ করা ও তৎসম্পর্কে আলোচনা ও মত বিনিময়ের জন্য অংশগ্রহণকারী কমিটি প্রতি ২ মাসে অন্ততঃ ১বার সভায় মিলিত হইবে।
২) অংশগ্রহণকারী কমিটি প্রত্যেক সভার কার্য বিবরণী, সভা অনুষ্ঠানের ৭ দিনের মধ্যে, শ্রম পরিচালক ও সালিসের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে।
সভা পরিচালনাঃ
(১) কমিটির সভা পরিচালনার ক্ষেত্রে সভাপতি উপস্থিত না থাকলে সভাপতির অনুমতিক্রমে সহ-সভাপতি সভা পরিচালনা করবেন;
(২) সভা পরিচালনার সকল কার্যক্রম সদস্য সচিব ব্যবস্থা করিবেন।
বিধি-১৯৭ মোতাবেক-কার্যকালের মেয়াদঃ
(১) কমিটি গঠনের তারিখ হইতে অংশগ্রহণকারী কমিটির কার্যকালের মেয়াদ হইবে ২ (দুই) বৎসর।
(২) কমিটির মেয়াদ শেষ হইবার ৩ (তিন) মাসের মধ্যে পরবর্তী কমিটি গঠন করিতে হইবে এবং নূতন কমিটি দায়িত্ব গ্রহণ না করা পর্যন্ত বিদ্যমান কমিটি দায়িত্ব পালন করিতে পারিবে।
(৩) কোন সাময়িক শূন্য পদ পূরণের উদ্দেশ্যে কোন সদস্য মনোনীত হইলে কমিটির মেয়াদের অবশিষ্ট সময় পর্যন্ত তিনি সদস্য থাকিবেন।
বিধি-১৯৮ মোতাবেক-শূন্যতাঃ
(১) কোন সদস্য কমিটির চেয়ারম্যানের পূর্বানুমতি ব্যতিরেকে পর পর ৩টি সভায় অনুপস্থিত থাকিলে কমিটিতে তাহার সদস্যপদ বাতিল হইয়া যাইবে।
(২) কোন শ্রমিক প্রতিনিধি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত না থাকিলে, অথবা তিনি চাকরিতে ইস্তফা প্রদান করিলে অথবা কমিটিতে সদস্যপদ হারাইলে অংশগ্রহণ কমিটি সেই শূন্য পদটি সংশ্লিষ্ট শ্রেণি, শাখা অথবা বিভাগ হইতে পূরণ করিবে।
(৩) কোন ট্রেড ইউনিয়ন হইতে কাহারো সদস্যপদ পদত্যাগ বা বহিষ্কার বা অন্য কোন কারণে শূন্য হইলে অংশগ্রহণকারী কমিটিতে তাহার পদ শূন্য হইবে এবং উক্ত ক্ষেত্রে উক্ত ট্রেড ইউনিয়ন পূণরায় প্রতিনিধি মনোনয়ন করিবে।
বিধি-১৯৯ মোতাবেক-সভা-সমিতির সুযোগ-সুবিধাঃ
অংশগ্রহণ কমিটির সভা অনুষ্ঠান এবং কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মালিক প্রয়োজনীয় সকল সুযোগ-সুবিধা প্রদান করিবেন।
বিধি-২০০ মোতাবেক-ইউনিট অংশগ্রহণকারী কমিটি গঠনঃ
(১) কোন প্রতিষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী কমিটি গঠিত হইলে উক্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে উক্ত প্রতিষ্ঠানের কোন শাখা, বিভাগ বা অঞ্চলে যেখানে অন্যূন ৫০ জন শ্রমিক নিযুক্ত রহিয়াছেন সেইখানে পৃথক অংশগ্রহণকারী কমিটি গঠন করিবার জন্য মালিকের নিকট সুপারিশ করিতে পারিবে।
(২) উক্তরূপ সুপারিশ পাইবার পর মালিক সুপারিশ অনুযায়ী উক্ত শাখা, বিভাগ বা অঞ্চলের জন্য পৃথক অংশগ্রহণকারী কমিটি গঠনের সকল ব্যবস্থা নিশ্চিত করিবেন।
(৩) প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক অংশগ্রহণকারী কমিটি গঠন ও কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রযোজ্য বিধান ইউনিট অংশগ্রহণকারী কমিটি গঠন ও উহার কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে।
(৪) ট্রেড ইউনিয়ন কর্তৃক প্রতিনিধি মনোনয়নের ক্ষেত্রে উক্ত শাখা, বিভাগ বা অঞ্চলে অবস্থিত সদস্যদের মধ্য হইতে মনোনয়ন প্রদান করিতে হইবে।
(৫) যে শাখা বা বিভাগের জন্য ইউনিট অংশগ্রহণকারী কমিটি গঠিত হইবে সেই শাখা বা বিভাগে নিযুক্ত রহিয়াছেন এইরূপ শ্রমিকগণই কেবল উক্ত কমিটির সদস্য হইতে পারিবেন।
(৬) ইউনিট অংশগ্রহণকারী কমিটির সকল প্রতিবেদন ও সভার কার্য বিবরণীর কপি প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণকারী কমিটির নিকট প্রেরণ করিতে হইবে।
বিধি-২০১ মোতাবেক-অংশগ্রহণকারী কমিটির সিদ্ধান্ত বা সুপারিশ বাস্তবায়নঃ
(১) অংশগ্রহণকারী কমিটির প্রতিটি সভার সুপারিশ বা সিদ্ধান্ত পাইবার পর মালিক বা কর্তৃপক্ষ উক্ত সিদ্ধান্ত বা সুপারিশ বাস্তবায়ন ও কার্যকর করিবার লক্ষ্যে জরুরি ভিত্তিতে উদ্যোগ গ্রহণ করিবেন এবং মালিক বা কর্তৃপক্ষ অংশগ্রহণকারী কমিটির পরবর্তী সভায় পূর্ববর্তী সভার সিদ্ধান্ত বা সুপারিশ বাস্তবায়নের অগ্রগতি অবহিত করিবেন।
(২) শ্রম পরিচালক বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অংশগ্রহণকারী কমিটির সুপারিশ বা সিদ্ধান্ত প্রযোজ্য কারখানা বা শিল্পপ্রতিষ্ঠানে যথারীতি বাস্তবায়িত হইতেছে কি না উহা পর্যবেক্ষণ, মনিটর ও ফলো-আপ করিবেন এবং প্রয়োজনে আইনানুযায়ী ও প্রদত্ত ক্ষমতাবলে অংশগ্রহণকারী কমিটির সিদ্ধান্ত বা সুপারিশ সম্পর্কে যথাযোগ্য ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।
বিধি-২০২ মোতাবেক-কতিপয় কার্যক্রম পরিহারঃ
কোন ট্রেড ইউনিয়ন, ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন বা কনফেডারেশন, যৌথ দরকষাকষি প্রতিনিধি, অংশগ্রহণকারী কমিটি বা উহার কোন সদস্য নি¤œববর্ণিত কর্মকান্ড পরিহার করিবে, যথাঃ-
(১) প্রতিষ্ঠানের কোন প্রশাসনিক কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করা;
(২) প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, কর্মচারী অথবা শ্রমিকের নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতিতে হস্তক্ষেপ করা;
(৩) কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে কোন যানবাহন, আসবাবপত্র অথবা আর্থিক কোন সুবিধা গ্রহণ;
(৪) প্রতিষ্ঠানে উৎপাদন ও স্বাভাবিক কর্মকান্ডে হস্তক্ষেপ করা; এবং
(৫) বিধি-২০৪ অনুসরণ না করিয়া কোন ধর্মঘট আহবান করা।
(৬) প্রতিষ্ঠানে কাজ চলাকালনী সময়ে কোন ধরনের মিটিং, মিছিল, একক বা সংঘবদ্ধভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা;
(৭) মহিলা কর্মীদের সাথে অশালীন ও অকথ্য ভাষার ব্যবহার, দৃষ্টিকটু শারীরিক অঙ্গভঙ্গী বা শারীরিক নির্যাতন বা হুমকি প্রয়োগ করা।
ধারা-২০৬ মোতাবেক-শ্রমিক অংশগ্রহণকারী কমিটির সদস্যদের দায়িত্ব ও কর্তব্যঃ
০১) অংশগ্রহণকারী কমিটির কাজ হইবে প্রধানতঃ প্রতিষ্ঠানের প্রতি শ্রমিক এবং মালিক সকলেরই অঙ্গীভ‚ত হওয়ার ভাব প্রোথিত ও প্রসার করা এবং প্রতিষ্ঠানের প্রতি শ্রমিকগণের অঙ্গীকার ও দায়িত্ববোধ জাগ্রত করা এবং বিশেষ করে-
ক) শ্রমিক ও মালিকের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাস, সমঝোতা এবং সহযোগীতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা চলানো;
খ) শ্রম আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করা;
গ) শৃঙ্খলাবোধে উৎসাহিত করা, নিরাপত্তা, পেশাগত স্বাস্থ্য রক্ষা এবং কাজের অবস্থার উন্নতি বিধান ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা;
ঘ) বৃত্তিমূলক প্রশক্ষিণ, শ্রমিক শিক্ষা এবং পরিবার কল্যাণ প্রশিক্ষণে উৎসাহিত করা;
ঙ) শ্রমিক এবং তাহাদের পরিবারবর্গের প্রয়োজনীয় কল্যাণমূলক প্রশিক্ষণে উৎসাহিত করা; এবং
চ) উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, উৎপাদন খরচ হ্রাস এবং অপচয় রোধ করা এবং উৎপাদিত পণ্যের মান উন্নত করা।
০২) কোন ইউনিট অংশগ্রহণকারী কমিটি মূল অংশগ্রহণকারী কমিটির তত্ত¡াবধানে উপ-ধারা (১) এ উল্লেখিত কার্যাবলী, যতদূর সম্ভব, সম্পাদন করিবে।
কমিটির পদ বিন্যাশঃ
কমিটির পদবী সদস্য সংখ্যা মন্তব্য
সভাপতি ১ জন (মালিক পক্ষের) কমিটির সদস্য সংখ্যা প্রতিষ্ঠানের মোট লোকসংখ্যার উপর নির্ভরশীল।
সহ-সভাপতি ১ জন (শ্রমিক পক্ষের)
সদস্য সচিব ১ জন (মালিক পক্ষের)
সদস্য ৬ জন (উভয় পক্ষের)
কমিটির সদস্যদের দায়িত্ব ও কর্তব্যঃ
সভাপতিঃ
* সভা আহবান করা;
* সভার তারিখ, সময় ও স্থান নির্ধারণ ও অবহিত করা;
* পূর্ববর্তী সভার আলোচ্য বিষয় পর্যালোচনা ও চলমান সভার এজেন্ডা উপস্থাপন এবং সকল সদস্যর মাঝে বিতরণ;
* সভা শেষে সভার সার্বিক পর্যালোচনা/প্রতিবেদন মালিক পক্ষের নিকট উপস্থাপন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা।
সদস্যদের দায়িত্ব ও কর্তব্যঃ
* সভায় যথা সময়ে উপস্থিত থাকা;
* সভার এজেন্ডা তৈরিতে আহবায়ককে সহায়তা করা;
* উৎপাদন এলাকায় ব্যক্তিগত নিরাপত্তামূলক সরঞ্জাম ব্যবহার নিশ্চিত করা;
* কর্মস্থলের কর্ম-পরিবেশ সুন্দর ও ঝুঁকিমুক্ত রাখা;
* যেকোন ধরনের জরুরী মূহুর্ত বা দূর্ঘটনা মোকাবেলায় কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা;
* নিরাপত্তা সংক্রান্ত কোন সমস্যাবলী পরিলক্ষিত হলে সেগুলো তড়িৎ নিষ্পত্তির জন্যে কর্তৃপক্ষের গোচরীভ‚ত করা;
* ফায়ার ও সেইফটি বিষয়ক প্রশিক্ষণ-এর ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ প্রদান;
* কারখানার সম্পদ যেন নষ্ট না হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখা;
* গুণগত মানসম্পন্ন পণ্য উৎপাদন করা;
* ইচ্ছাকৃতভাবে কোম্পানীর বা পণ্যের ক্ষতি না করা;
* কারখানার নিয়ম-শৃঙ্খলা ভঙ্গ না করা এবং এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন করা।
নির্বাচন পরিচলনা পদ্ধতিঃ
* নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করতে হবে। নির্বাচন পরিচালনা কমিটিতে মালিক ও শ্রমিক পক্ষের প্রতিনিধির অনুপাতিক হার হইবে ২ঃ৩ এবং বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে একটি নির্বাচন কমিটি গঠন করিবেন। এক শ্রম পরিচালকের নিকট পাঠাতে হবে;
* নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করতে হবে;
* ভোটার তালিকায় প্রতিলিপি যুগপৎ নোটিশ বোর্ডে প্রদর্শিত হতে হবে;
* নোটিশসহ ভোটার তালিকার এক কপি শ্রম পরিচালকের নিকট পাঠাতে হবে;
* নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী কেউ অযোগ্য হলে তাহার মনোনয়পত্র বাতিল বলে গণ্য হবে;
* প্রার্থীদের প্রতিক বরাদ্দ এবং প্রার্থীদের উপস্থিতিতে লটারীর মাধ্যমে তা বন্টন করতে হবে;
* ভোটার তালিকা প্রকাশ করতে হবে;
* গোপন ব্যালট বক্স তৈরি করতে হবে;
* ভোট প্রদানের জন্য মহিলা/পুরুষ গোপন কক্ষ তৈরি করতে হবে;
* মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময়-সীমা ঘোষণা করা;
* যাচাই-বাছাই করার পর যাদের মনোনয়ন সঠিক বলে গণ্য হবে তাদের তালিকা নোটিশ আকারে প্রকাশ করা;
* বিভাগ/শাখা অনুযায়ী চ‚ড়ান্ত তালিকা ঘোষণা করতে হবে;
* যে যে পদে নির্বাচন করা হবে তা নির্ধারণ করা;
* নির্বাচনের দিন, তারিখ ও সময় উল্লেখ করা;
* যেকোন কর্মদিবসে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন করা;
* ভোট গণনার পর যারা বিজয়ী হবে তাদের তালিকা প্রকাশ করা;
* নির্বাচন কমিটির তত্ত¡াবধানে নির্বাচনের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
নির্বাচনে প্রার্থীর আচরণ-বিধিঃ
নি¤œলিখিত যেকোন কারণে নির্বাচন থেকে প্রার্থীতা বাতিল হয়ে যাবে তাই নির্বাচনের প্রার্থীদের নি¤œবর্ণিত কর্মকান্ড পরিহার করতে হবে। যেমন-
* কাজের সময় নির্বাচনী প্রচারণা;
* মিটিং ও শ্লোগান দেওয়া;
* কোম্পানীর বিরুদ্ধে উস্কানিকমূলক কথা বলা;
* ব্যক্তিগত বা দলগতভাবে শারীরিক শক্তি প্রদর্শন;
* জোরপূর্বক ভোটদানে বাধ্য বা বাধা প্রদান করা;
* অর্থ/উপকৌটন বা অন্য কোনভাবে ভোটদানে লোভ দেখানো;
* পোষ্টার লাগানো।
উল্লেখিত আচরণবিধি অমান্য করলে উক্ত প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল বলে গণ্য হবে। এক্ষেত্রে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।
কমিটির কাজের পরিধিঃ
আইনগত বিধিবদ্ধ নিয়ম ও প্রতিষ্ঠানের নিয়ম অনুযায়ী শ্রমিক ও মালিকের মধ্যে সমঝোতা এবং পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি সংরক্ষণে যাবতীয় কাজ করা।
কল্যাণমূলক ভ‚মিকাঃ
অংশগ্রহণকারী কমিটি আইনগত বিধিবদ্ধ নিয়ম এবং প্রতিষ্ঠােেনর নিয়ম অনুযায়ী শ্রমিকদের যাবতীয় কল্যাণমূলক কাজে সহায়তা করা এবং কল্যাণমূলক যাবতীয় বিষয়ে মালিকপক্ষকে যথা সময়ে এবং যথাযথ দিক-নির্দেশনা প্রদান করা।
কমিটির গঠনতন্ত্রের পরিবর্তনের নিয়মঃ
* আইনগত বিধিবদ্ধ নিয়ম এবং প্রতিষ্ঠানের নিয়মের সাথে সামঞ্জস্য রেখে প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ সংরক্ষণের মাধ্যমে কমিটির সকল সদস্যদের লিখিত মতামতের ভিত্তিতে গঠনতন্ত্র পরিবর্তন/সংশোধন/সংযোজন-বিয়োজন করা যাবে।
* নতুন গঠনতন্ত্র চলমান কমিটির কার্যকাল হইতে শুরু হইবে।
কমিটি বিলুপ্ত করার পদ্ধতিঃ
কর্তৃপক্ষ নি¤েœ লিখিত যেকোন কারণে কমিটি সাময়িক বিলুপ্তি অথবা বিলুপ্তি করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করেন। যেমন-
* নির্বাচিত কমিটির সদস্যদের মধ্যে দ্ব›দ্ব বা সংঘাতের আশঙ্কা হইলে;
* সদস্যরা একে অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন এবং অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হইলে;
* সদস্যদের নৈতিক আচরণের (দুর্নীতি, ঘুষ বা অসততা) অধঃপতন ঘটিলে;
* সদস্যদের প্রতি সাধারন শ্রমিকদের অভিযোগ বা ক্ষোভ ঘনীভ‚ত হইলে;
* সদস্যদের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করার অভিযোগ উত্থাপিত এবং অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হইলে;
* সদস্যদের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের গোপনীয় তথ্য পাচারের অভিযোগ উত্থাপিত এবং অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হইলে;
* সদস্যদের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের সম্পদ ক্ষতি সাধন বা চুরির অভিযোগ উত্থাপিত এবং অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হইলে;
* সদস্যদের বিরুদ্ধে মহিলা শ্রমিককে নির্যাতন অভিযোগ উত্থাপিত হইলে এবং অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হইলে।