সেইফটি কমিটি গঠন প্রণালী ও কার্য পরিধি
Safety committee formation procedure and scope of work


সেইফটি কমিটি গঠন প্রণালী ও কার্য পরিধি
(বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ (সংশোধিত-২০১৩) ও শ্রম বিধিমালা-২০১৫ অনুযায়ী)


গঠনতন্ত্রঃ গার্মেন্টস্ শিল্পে যে দুর্যোগ যেমন-অগ্নিকান্ড, ভ‚মিকম্প, বিল্ডিং ধস বা দূর্ঘটনা ইত্যাদি মোকাবেলায় করণীয়, প্রতিরোধ এবং প্রতিকার সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট নিয়ম-নীতি থাকা একান্ত প্রয়োজন। ...............................এর কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ শ্রম আইন ও কর্মরত সকল কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকদের নিরাপত্তা ঝধভবঃু ঋরৎংঃ এই কথা চিন্তা করেই কারখানাতে সেইফটি কমিটি গঠনের লক্ষ্যে দেশের বিদ্যমান শ্রম আইন-২০০৬ (সংশোধিত-২০১৩) ও বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা-২০১৫ এবং ক্রেতাদের চাহিদার ভিত্তিতে সেইফটি কমিটির গঠনতন্ত্র ও এর কার্যক্রম পরিচালনায় একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা অনুসরণ করে থাকে।

উদ্দেশ্যঃ স্বাস্থ্য সম্পর্কিত ব্যবস্থাদির মূল্যায়ন, সঠিক বাস্তবায়ন এবং অগ্রগতি পর্যালোচনা করার ও শ্রমিক-কর্মীদের পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা করা।

    সেইফটি কমিটি কিঃ
    সেইফটি কমিটি বলতে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত একটি দল বা টিমকে বুঝায় যা নিরাপদ কর্মক্ষেত্র তৈরি ও তা রক্ষা করতে মালিক বা নিয়োগ কর্তাকে সহায়তা করে।

    সেইফটি কমিটি কেন দরকারঃ
    অনেক কারখানায় হয়তো ইতোমধ্যে পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি কর্মকর্তা/সেইফটি অফিসার আছে এবং একটু বিষ্মিতও হচ্ছেন যে, এটা থাকা সত্তে¡ও আইনে আবার সেইফটি কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে কেনঃ
*    সেইফটি কমিটির কাজ হচ্ছে পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি কর্মকর্তা/সেইফটি অফিসার এবং উর্ধ্বতন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে বিভিন্ন ধরনের পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা কর্মসূচী বাস্তবায়নে সহায়তা করা, যেমন-নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ও প্রশিক্ষণ প্রদান তাছাড়া এ কমিটি তাদেরকে পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি বিষয়েও পরামর্শ প্রদান করবে। 
*    দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের একটি বড় সুবিধা হচ্ছে এক্ষেত্রে দলীয় সদস্যদের মাঠ পর্যায়ের ব্যাপক অভিজ্ঞতা প্রতিফলিত হয় এবং যেসব শ্রমিক প্রতিদিন মেশিনে কাজ করে তারাই সবচেয়ে ভাল জানে যে এক্ষেত্রে কি কি ঝুঁকি রয়েছে এবং তারাই এসব বিপজ্জনক অবস্থা এবং উত্তরণের উপায় সম্পর্কে সবচেয়ে ভাল বলতে পারবে। 
*    সেইফটি কমিটির সফলতা নির্ভর করে মূলত শ্রমিকদের সহযোগিতা এবং সেইফটি নির্দেশনা মেনে চলতে তাদের সম্পৃক্ততার উপর। তাছাড়া পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি পদ্ধতির খসড়া প্রস্তুত ও তা বাস্তবায়নে শ্রমিক প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ করার সুযোগ দিলেই প্রতিষ্ঠানের পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি ব্যবস্থার উন্নয়ন সম্ভব হবে। 
*    পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি ব্যবস্থা সম্পর্কে যথাযথভাবে যোগাযোগ নিশ্চিত করতে হলে নিয়মিত সভা আয়োজন করতে হবে।
*    কর্মক্ষেত্রের স্বাস্থ্য ও সেইফটি ব্যবস্থা যেমন-দুর্ঘটনা কমিয়ে আনা, অনুপস্থিতি কমিয়ে আনা, দুর্ঘটনার আইনগত ও আর্থিক ক্ষতি প্রতিরোধ করা এবং প্রতিষ্ঠানের সুনাম নষ্ট হয় এরূপ অবস্থা এড়িয়ে চলা ইত্যাদি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে অনেকগুলো কার্যক্রমের একটি হচ্ছে সেইফটি কমিটি গঠন করা। 


    সেইফটি কমিটি গঠনে বাধ্যবাধকতাঃ ধারা ৯০(ক) অনুযায়ী- 
৫০ (পঞ্চাশ) বা তদূর্ধ্ব সংখ্যক শ্রমিক নিয়োজিত রহিয়াছেন বা বৎসরের কোন এক সময় নিয়োজিত থাকেন এমন প্রত্যেক কারখানার বা শিল্প-প্রতিষ্ঠানের মালিকগণ সেইফটি কমিটি গঠন করিবেন;
তবে শর্ত থাকে যে, বিদ্যমান কারখানাসমূহের ক্ষেত্রে এই বিধিমালা কার্যকর হইবার তারিখ হইতে ৬ (ছয়) মাসের মধ্যে এবং এই বিধিমালা কার্যকর হইবার পরে স্থাপিত কারখানাসমূহের ক্ষেত্রে উৎপাদন চালু হইবার ৯ (নয়) মাসের মধ্যে সেইফটি কমিটি গঠন করিতে হইবে এবং ধারা-১৮৩ অনুযায়ী ঘোষিত প্রতিষ্ঠান পুঞ্জের মালিকগণও এলাকাভিত্তিক অথবা প্রতিষ্ঠানপুঞ্জের আওতা এক উপজেলার অধিক হইলে উপজেলাভিত্তিক সেইফটি কমিটি গঠন করিবেন।

    সেইফটি কমিটি’র সদস্য সংখ্যাঃ
সেইফটি কমিটিতে মোট সদস্য সংখ্যা ৬ (ছয়) এর কম এবং ১২ (বার) এর অধিক হইবে না এবং উহাতে মালিক ও শ্রমিক পক্ষের সম সংখ্যক প্রতিনিধি থাকিবে।

শ্রমিকের সদস্য সংখ্যা অনুযায়ী সেইফটি কমিটির সদস্য সংখ্যার আনুপাতিক হার হইবে। যথা-
শ্রমিক সংখ্যা    কমিটির সদস্য সংখ্যা
৫০-৫০০ জন    সর্বোচ্চ ৬ জন
৫০১-১,০০০ জন    সর্বোচ্চ ৮ জন
১,০০১-৩,০০০ জন    সর্বোচ্চ ১০ জন
৩,০০১-তদুর্ধ্ব    সর্বোচ্চ ১২ জন

    সেফটি কমিটির পদ বিন্যাশঃ 
বিধি-৮১(৩) অনুযায়ী-
পদবী    লোকসংখ্যা    মন্তব্য
সভাপতি    ১ জন    মালিক পক্ষের প্রতিনিধি
সহ-সভাপতি    ১ জন    শ্রমিক পক্ষের প্রতিনিধি
সাধারন সম্পাদক    ১ জন    শ্রমিক পক্ষের প্রতিনিধি
সদস্য সচিব    ১ জন    মালিক পক্ষের প্রতিনিধি
সদস্য    ৪ জন    মালিক পক্ষের প্রতিনিধি
সদস্য    ৪ জন    শ্রমিক পক্ষের প্রতিনিধি
মোট    ১২ জন    

*    কমিটিতে ১ জন সভাপতি, ১ জন সহ-সভাপতি, ১ জন সদস্য সচিব ও সদস্যগণ থাকিবেন।
*    প্রথম সভায় সদস্যগণ সর্বসম্মত সিদ্ধান্তক্রমে ১ জন সদস্য সচিব নির্বাচন করিবেন।
*    কমিটি উহার সদস্যগণের মধ্য হইতে পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিশেষ কোন ক্ষেত্রের এবং বিভিন্ন শাখা বা বিভাগের দায়িত্ব প্রদান করিতে পারিবে।
*    কমিটি উহার সভাপতি ও মালিকপক্ষের প্রতিনিধিগণকে কারখানা বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক বা ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনোনয়ন প্রদান করিবেন এবং সহ-সভাপতি ও শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধিগণ যৌথ দর কষাকষি (সিবিএ) অথবা অংশগ্রহণকারী কমিটির শ্রমিক প্রতিনিধিগণ কর্তৃক কর্মরত শ্রমিকদের মধ্য হইতে মনোনীত হইবেন। 
*    কারখানা বা প্রতিষ্ঠানে যৌথ দর কষাকষি প্রতিনিধি (সিবিএ) উক্ত কারখানা বা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন শাখা, বিভাগ, ফ্লোর, গোডাউন এবং ইউনিটে কর্মরত শ্রমিকদের মধ্য হইতে সেইফটি কমিটির শ্রমিক প্রতিনিধি মনোনয়ন করিবে।

*    কোন কারখানা বা প্রতিষ্ঠানে যৌথ দর কষাকষি প্রতিনিধি না থাকিলে উক্ত কারখানা বা প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণকারী কমিটির শ্রমিক পক্ষের প্রতিনিধিগণ উক্ত কারখানা বা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন শাখা, বিভাগ, ফ্লোর, গোডাউন এবং ইউনিটে কর্মরত শ্রমিকদের মধ্য হইতে সেইফটি কমিটির শ্রমিক প্রতিনিধি মনোনয়ন করিবে।
*    সেইফটি কমিটিতে শ্রমিক প্রতিনিধি মনোনয়নের ক্ষেত্রে অনিবার্য কোন কারণে বা উপরোক্ত উপ-বিধি (৮) ও (৯) অনুযায়ী সেইফটি কমিটির শ্রমিক প্রতিনিধি মনোনয়নের উদ্যোগ গ্রহণ না করিলে এইরূপ বিষয় অবগত হইলে মহাপরিদর্শক বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধি কর্মরত শ্রমিকগণের মধ্য হইতে নির্বাচনের মাধ্যমে সেইফটি কমিটির শ্রমিক প্রতিনিধি নির্বাচিত করিবেন।

তবে শর্ত থাকে যে, এইরূপ ক্ষেত্রে উক্ত কারখানা বা প্রতিষ্ঠানের যৌথ দরকষাকষি প্রতিনিধি অথবা অংশগ্রহণকারী কমিটি গঠিত হইবার পর ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে উহা উপ-বিধি (৮) ও (৯) অনুযায়ী সেইফটি কমিটির শ্রমিক প্রতিনিধি মনোনয়ন করিবে। 
*    শ্রমিক প্রতিনিধি মনোনীত হইবার ৭ (সাত) দিনের মধ্যে মালিক তাহার প্রতিনিধিদের মনোনয়ন প্রদান করিবেন এবং এইরূপ মনোনয়ন প্রদানের ১৫ (পনের) দিনের মধ্যে সভাপতি সেইফটি কমিটির সহ-সভাপতি ও অন্যান্য সদস্যদের সহিত আলোচনাক্রমে সেইফটি কমিটির প্রথম সভা আহবান করিবেন।
*    সেইফটি কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠানের ১০ (দশ) দিনের মধ্যে সভাপতি সেইফটি কমিটি গঠনের বিষয়টি লিখিতভাবে মহাপরিদর্শককে অবহিত করিবেন।
*    যদি কোন কারণে সেইফটি কমিটি কারখানা নিরাপত্তা সংক্রান্ত কোন বিষয়ে বিশেষজ্ঞের মতামত গ্রহণের প্রয়োজন অনুভব করে তবে কমিটি উক্তরূপ মতামত গ্রহণ করিতে পারিবে।

    কমিটি’তে মহিলা প্রতিনিধি নির্বাচনঃ
*    কোন প্রতিষ্ঠানে কমপক্ষে   (এক-তৃতীয়াংশ) মহিলা শ্রমিক থাকিলে শ্রমিক প্রতিনিধি মনোনয়নে কমপক্ষে   (এক-তৃতীয়াংশ) মহিলা প্রতিনিধি মনোনীত করিতে হইবে।

    কমিটি’র মেয়াদঃ
*    সেইফটি কমিটির মেয়াদ হইবে সেইফটি কমিটির প্রথম সভার তারিখ হইতে ২ (দুই) বৎসর;
*    সেইফটি কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নতুন কমিটি গঠন করিতে সহায়তা করিবে;
*    তবে নতুন কমিটি গঠন হলে নতুন কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করা পর্যন্ত।

    সেইফটি কমিটির পদ শূণ্য হওয়াঃ
*    কমিটি গঠনের পরবর্তীতে কোন সদস্যের পদত্যাগ, চাকুরী হইতে অবসর, চাকুরী ত্যাগ, মৃত্যু বা অন্য কোন যৌক্তিক কারণে চাকুরীর অবসান; 
*    সভাপতি অথবা সহ-সভাপতির বিনা অনুমতিতে পরপর তিন বা ততোধিক বার কমিটির সভায় অনুপস্থিতি ইত্যাদি।

    সেইফটি কমিটির শূণ্য পদ পূরণঃ 
*    কোন যৌক্তিক কারণে সদস্য পদ শূণ্য ঘোষিত হইলে সেইফটি কমিটির কমপক্ষে   (দুই-তৃতীয়াংশ) সদস্যের সমর্থনে উক্ত শূণ্য পদ পূরণ করা যাইবে;
*    যে বিভাগ বা সেকশন থেকে সদস্য পদ শূণ্য হয়েছে সেই বিভাগ বা সেকশন থেকে শূণ্য পদ পূরণ করতে হবে;
    

তবে শর্ত থাকে যে, শ্রমিক প্রতিনিধি শ্রমিকগণের মধ্য হইতে এবং মালিক প্রতিনিধি মালিক দ্বারা মনোনীত প্রতিনিধি হইবেন।
*    সেইফটি কমিটির কোন সদস্য পদে কোনরূপ পরিবর্তন ঘটিলে পরিবর্তন হইবার ১৫ (পনের) দিনের মধ্যে মহাপরিদর্শক বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত পরিদর্শককে অবহিত করিতে হইবে।

    কমিটির গঠনতন্ত্র পরিবর্তনের নিয়মঃ
    আইনগত বিধিবদ্ধ নিয়ম এবং প্রতিষ্ঠানের নিয়মের সাথে সামঞ্জস্য রেখে প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ সংরক্ষণের মাধ্যমে কমিটির গঠনতন্ত্র পরিবর্তন/সংশোধন/পরিবর্তন করা যাবে। তবে, সেক্ষেত্রে কমিটির সকল সদস্যদের লিখিত মতামতের ভিত্তিতে হতে হবে এবং নতুন গঠনতন্ত্র চলমান কমিটির কার্যকাল হইতে শুরু হইবে।

    সেইফটি কমিটির কার্য-পরিধিঃ
*    কারখানা বা শিল্প-প্রতিষ্ঠান এবং উহাতে নিয়োজিত শ্রমিকসহ সকলের পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ে আইন ও প্রচলিত অন্যান্য বিধি-বিধানের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট মালিক বা কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করা;
*    চেক-লিস্ট অনুসারে পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট ঝ্ুঁকি বা ঘাটতিসমূহ চিহ্নিত করা এবং উহা দূরীকরণে মালিক বা কর্তৃপক্ষের নিকট সুপারিশ করা;
*    কর্মস্থল ও কর্মরত শ্রমিকদের পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিধানে সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি পর্যালোচনা, মালিক বা কর্তৃপক্ষ বরাবর সুপারিশ প্রদান এবং শ্রমিক-কর্মচারী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিগণকে এতদবিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান ও সচেতনতা বৃদ্ধি করা;
*    এই বিধিমালার ষষ্ঠ অধ্যায়ে বর্ণিত অগ্নিনির্বাপণ, জরুরি উদ্ধার ও প্রাথমিক চিকিৎসা দল গঠন এবং প্রশিক্ষণ ও মহড়া পরিচালনা করা;
*    আইনের পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিধান ও কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়ন পর্যবেক্ষণ ও মনিটর বা নিরীক্ষণ, রিপোর্ট সংরক্ষণ ও প্রয়োজনে সময়ে সময়ে কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর কর্তৃক পরিদর্শনের জন্য প্রস্তুত রাখা;
*    পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ে প্রাপ্ত প্রশিক্ষণের বাস্তবায়ন করা;
*    কোন শিল্প বিরোধ উত্থাপন না করা এবং শিল্প বিরোধ সংক্রান্ত কোন বিষয়ে পক্ষ না হওয়া।

    সেইফটি কমিটির কার্যাবলি ও দায়-দায়িত্বঃ
০১)    প্রতিষ্ঠানের ঝুঁকি ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত ব্যবস্থাপনাঃ
ক)    ঝুঁকিপূর্ণ ক্ষেত্রসমূহ চিহ্নিতকরণ (যেমন-ভবনের অংশ বিশেষ, সিঁড়ি, প্রাঙ্গণ, বৈদ্যুতিক লাইন, মেশিনপত্র, ইত্যাদি);
খ)    ঝুঁকির প্রকৃতি (যেমন-ফাটল, কর্মকালীন সময়ে তালাবদ্ধ গেইট, বিপজ্জনক বৈদ্যুতিক সংযোগ, ইত্যাদি);
গ)    ঝুঁকির মাত্রা বা স্তর (যেমন-উচ্চ/মধ্যম/সাধারণ/সন্তোষজনক নয়);
ঘ)    আশু করণীয় নির্ধারণ (যেমন-ব্যবহার নিষিদ্ধ, তাৎক্ষণিকভাবে মেরামত-সংস্কার, বন্ধকরণ);
ঙ)    ঝুঁকির প্রকৃতি ও স্তরভেদে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা পদ্ধতি নির্ধারণ; এবং
চ)    কারিগরি ও প্রশাসনিক দায়বদ্ধতা নিরূপণ।

০২)    যন্ত্রপাতি ও কর্ম প্রক্রিয়া সংক্রান্ত ব্যবস্থাপনাঃ
ক)    যন্ত্রপাতি স্থাপনা সংক্রান্ত দিকসমূহ পরীক্ষা;
খ)    যন্ত্রপাতি পরিচালনা পদ্ধতি যাচাই;
গ)    ত্রæটিপূর্ণ পরিচালনার ক্ষেত্রে করণীয় নির্ধারণ;

ঘ)    শ্রমিকদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সামগ্রী ও সুরক্ষা ব্যবস্থা পরীক্ষা; এবং
ঙ)    ত্রæটিপূর্ণ পরিচালনার দায়-দায়িত্ব নিরূপণ ও প্রস্তাবনা বা সুপারিশ।

০৩)    বিপজ্জনক ধোঁয়া, বিস্ফোরক ও দাহ্য পদার্থের ব্যবস্থাপনাঃ
ক)    বিস্ফোরক ও দাহ্য পদার্থের প্রকৃতি নিরূপণ;
খ)    রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থা;
গ)    ব্যবহারিক ও প্রক্রিয়াগত ত্রæটি নিরূপণ;
ঘ)    ব্যক্তিগত সুরক্ষা ব্যবস্থা পরীক্ষা;
ঙ)    পরিবেশগত ঝুঁকি বিবেচনা; এবং
চ)    নির্দেশনা ও পরামর্শ।

০৪)    অগ্নিকাÐজনিত ব্যবস্থাপনাঃ
ক)    অগ্নিকাÐের সম্ভাব্য উৎস নির্ণয়;
খ)    প্রতিরোধ ব্যবস্থা;
গ)    অগ্নি মোকবিলায় দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গের তালিকা প্রণয়ন ও দক্ষতার মান যাচাই;
ঘ)    জরুরি বহির্গমন ব্যবস্থাবলী পরীক্ষা ও বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা নিরূপণ;
ঙ)    তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিবন্ধকতা দূর করিবার ক্ষেত্রে গৃহিত পদক্ষেপ;
চ)    অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জামাদির মান পরীক্ষা;
ছ)    প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা বা মহড়া; এবং
জ)    প্রস্তাব বা পরামর্শ।

০৫)    দুর্ঘটনা বিষয়ক ব্যবস্থাপনাঃ
ক)    সামগ্রিক পরিবেশ ও প্রক্রিয়ায় সম্ভাব্য আপদকালীন অবস্থা পর্যালোচনা;
খ)    ব্যক্তি পর্যায়ের দুর্ঘটনার সম্ভাবনা যাচাই বা বিবেচনা;
গ)    ব্যাপকহারে সম্ভাব্য দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে উদ্ধার তৎপরতার কর্মপরিকল্পনা;
ঘ)    দায়িত্ব বন্টন;
ঙ)    উদ্ধার কাজে প্রয়োজনীয় উপকরণ বা সরঞ্জামাদি সংরক্ষণ এবং তাৎক্ষণিকভাবে সংগ্রহের উপায় নিরূপণ;
চ)    বিভিন্ন সংস্থার সহিত যোগাযোগ ও সমন্বয় পরিকল্পনা;
ছ)    সংঘটিত দুর্ঘটনার তদন্ত পরিচালনা ও কারণ নির্ণয়;
জ)    দায়-দায়িত্ব নিরূপণ;
ঝ)    পূণঃ দুূর্ঘটনারোধে প্রদেয় সুপারিশ ও নির্দেশনা; এবং
ঞ)    দুর্ঘটনা কবলিত শ্রমিকদের চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণ প্রদান।

০৬)    বিপজ্জনক চালনা, পেশাগত ব্যাধি ও বিষক্রিয়াজনিত অসুস্থতার ব্যবস্থাপনাঃ
ক)    প্রতিষ্ঠানে বিধি ৬৮ এর অধীন তালিকাভুক্ত বিপজ্জনক চালনাযুক্ত পেশাসমূহ নির্ধারণ;
খ)    প্রতিষ্ঠানে ব্যবহৃত তফসিলভুক্ত ও তালিকাভুক্ত রাসায়নিক পদার্থের তালিকা প্রণয়ন;
গ)    বিপজ্জনক পেশা ও ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শে কর্মরত শ্রমিকদের স্বাস্থ্যগত পরীক্ষার বাধ্যবাধকতা নিশ্চিতকরণ;
ঘ)    সংশ্লিষ্ট পেশায় নিয়োজিত শ্রমিকদের নির্দিষ্ট মেয়াদান্তে স্বাস্থ্য পরীক্ষার মাধ্যমে প্রাপ্ত শারীরিক অসুস্থতার বিষয়ে চিকিৎসকদের সহিত মত বিনিময়;
ঙ)    সংশ্লিষ্ট পেশাসমূহে কর্মরত শ্রমিকদের সামগ্রিক স্বাস্থ্য পরিচর্যা, চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণ ব্যবস্থাপনার মূল্যায়ন; এবং
চ)    স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা উন্নয়নে প্রয়োজনীয় সুপারিশ ও নির্দেশনা প্রদান।
 

    সেইফটি কমিটি’র কতিপয় সদস্যদের সুনির্দিষ্ট কার্যক্রমসমূহঃ
    সভাপতি ও সহ-সভাপতিঃ
সেইফটি কমিটিতে অবশ্যই ১ জন সভাপতি থাকবেন যিনি মালিক বা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক মনোনীত এবং ১ জন সহ-সভাপতি থাকবেন যিনি দরকষাকষি প্রতিনিধি (সিবিএ)/অংশগ্রহণকারী কমিটির সদস্যদের (শ্রমিক পক্ষ) প্রতিনিধি কর্তৃক মনোনীত। 
সভাপতি ও সহ-সভাপতির যেসব দায়িত্ব ও করণীয় রয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেঃ 
*    সভার আলোচ্য বিষয় বা এজেন্ডা নির্ধারণ করা;
*    সভায় সদস্যদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা;
*    সভায় সভাপতিত্ব করা এবং সভা পরিচালনা করা;
*    সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা করা এবং অনুমোদন দেয়া;
*    মালিক বা ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে নিয়মিত রিপোর্ট করা; এবং
*    সেইফটি কমিটির নিকট থেকে কোন সুপারিশ পাওয়ার ৭ দিনের মধ্যে মালিক বা ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ যদি তা বাস্তবায়নের কোন উদ্যোগ গ্রহণ না করে তবে শ্রম পরিদর্শককে বিষয়টি জানানো।

    সদস্য-সচিবঃ সদস্য-সচিব যেসব কাজের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্তঃ
*    সভার আলোচ্য বিষয় বা এজেন্ডা এবং সভার কার্যবিবরণী সভার নির্দিষ্ট তারিখের কমপক্ষে ৫ (পাঁচ) দিন আগে সকল সদস্যকে সঠিক পন্থায় অবগত করা;
*    সভা-কক্ষ সঠিকভাবে গুছিয়ে রাখা (এমনকি পানির ব্যবস্থা পর্যন্ত নিশ্চিত করা);
*    প্রতি সভার পর অবিলম্বে কার্যবিবরণী তৈরি করা;
*    সদস্য সচিব কর্তৃক খসড়া প্রণয়ন ও সভাপতি ও সহ-সভাপতি কর্তৃক অনুমোদন নেওয়া;
*    সভার কার্য-বিবরণী সকল সদস্যের মাঝে বিতরণ করা এবং রেজিস্টার খাতায় লিপিবদ্ধ রাখা; 
*    কমিটির ডকুমেন্টেশনসমূহ যথাযথভাবে (৩ বছর পর্যন্ত) সংরক্ষণ করা।
(কমিটির প্রথম সভায় সর্বসম্মতিক্রমে কমিটির সদস্য-সচিব নির্বাচন করতে হবে)।

কমিটির অন্যান্য সদস্যদের করণীয়ঃ
*    প্রত্যেক সদস্য তার দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে শ্রমিকদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করবেন এবং শ্রমিকরা যেসব সমস্যা সম্পর্কে উদ্বিগ্ন বা তাকে জানিয়েছে তা কমিটিকে যথাসময়ে জানানো; 
*    কমিটির সভার আলোচ্য বিষয় নির্ধারণে পরামর্শ প্রদান;
*    যেসব সমস্যা দেখা দেয় তার কারণসমূহ ব্যাখ্যা করা;
*    সমস্যা সমাধানের সম্ভাব্য উপায় সম্পর্কে পরামর্শ ও মতামত প্রদান;
*    পূর্বের সমস্যা সমাধান করা হয়েছে কি না সে বিষয়ে মতামত দেয়া বা আলোচনা করা; এবং
*    সেইফটি কমিটির সদস্যগণ কোন বিশেষ বিষয় সম্পর্কে মালিক/ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের বা পরিদর্শকের নিকট উত্থাপন করতে পারেন (ধারা- ৩১৫, বিএলএ; তফসিল-৪(১) ও (১১)।

    কমিটি’র সভা আহবানঃ
*    সেইফটি কমিটির সভা প্রতি ৩ (তিন) মাসে ন্যূনতম ১ বার অনুষ্ঠিত হইবে। তবে, জরুরি প্রয়োজনে যেকোন সময়ে সভা আহবান করিতে পারিবে;
*    সভাপতি সেইফটি কমিটির সহ-সভাপতি ও অন্যান্য সদস্যদের সাথে আলোচনা করে কমিটির প্রথম সভা আহবান করবেন।

    সভায় সদস্যদের উপস্থিতিঃ
*    সেইফটি কমিটির সভায় কমপক্ষে   (দুই-তৃতীয়াংশ) সদস্য উপস্থিত থাকতে হবে।
 


    অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত চেক লিস্ট, প্রতিবেদন ফরম প্রণয়নঃ
*     পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা গাইড লাইন বা নির্দেশনা বহিতে নির্দেশিত বিষয়সমূহের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করিবার জন্য এবং কারখানা বা প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন প্রক্রিয়া, ভৌত কাঠামো, কর্মের প্রকৃতি ও ধরন, মালামাল সংরক্ষণ ও পরিবহন, কাঁচামাল-কেমিকেলের ধরন ও ব্যবহার এবং সেবার ধরন অনুযায়ী শ্রমিকদের জীবন ও স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ঝুঁকিসমূহ চিহ্নিত করিবার লক্ষ্যে সেইফটি কমিটি চেক-লিস্ট প্রণয়ন করিবে;
*    সেইফটি কমিটি মাসিক বা ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে মালিক বা ব্যবস্থাপক বরাবরে নির্ধারিত চেকলিস্ট ও ফরমে সুপারিশসহ প্রতিবেদন দাখিল করিবে। 

তবে শর্ত থাকে যে, কোন সময় কোনরূপ ত্রæটি-বিচ্যূতি বা আইন বা এই বিধিমালার কোন বিধানের লংঘন প্রতীয়মান হইলে, উহা সমাধানের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে মালিক বা কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত আকারে সুপারিশ পেশ করিবে।

    শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের আয়োজনঃ
*    কারখানা বা শিল্প-প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকসহ সকল কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য সেইফটি কমিটি নিরাপত্তা ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করিবে;
*    প্রশিক্ষণে কারখানা বা শিল্প-প্রতিষ্ঠানের সকল বিভাগ, কর্মকর্তা ও শ্রমিকের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করিতে মালিক পক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে;
*    সব প্রশিক্ষণ ও রিফ্রেসার্স প্রশিক্ষণ সম্পূর্ণ বিনামূল্যে হইবে এবং অফিসের কর্ম সময়ের মধ্যে আয়োজন করিতে হইবে।

    মহড়া আয়োজনঃ
ভ‚মিকম্প, অগ্নিকাÐ এবং অন্যান্য দুর্যোগ ও দুর্ঘটনা প্রতিরোধ বিষয়ে সেইফটি কমিটি বিধি-৫৫ এর উপ-বিধি (১০) ও (১৪)-তে বর্ণিত বিধান অনুযায়ী নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও মহড়ার আয়োজন করিবে।

    তথ্য বা ডাটাবেজ সংরক্ষণঃ
*    সেইফটি কমিটি দেশের সেইফটি বিশেষজ্ঞ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানসমূহের সহিত দ্রæততম সময়ে যোগাযোগের সুবিধার্থে ফোন, ই-মেইল, ফ্যাক্স, বিস্তারিত ঠিকানা সম্বলিত তথ্য বা ডাটাবেজ সংরক্ষণ করিবে;
*    পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা, বিল্ডিং কোড, বিদ্যুৎ, অগ্নিনির্বাপণ, পরিবেশ আইনসহ সেইফটি সংশ্লিষ্ট যাবতীয় আইন-কানুন ও বিধি-বিধান হালনাগাদ অবস্থায় সংরক্ষণ করিবে।

    সভার এজেন্ডা বা আলোচ্য বিষয়সমূহ নির্ধারণ ও বিতরণঃ
*    সভার কার্যবিবরণী খুব বেশি হবে না (যেগুলি সামগ্রিকভাবে প্রতিষ্ঠানের পেশাগত নিরাপত্তার ক্ষেত্রে হুমকিস্বরূপ কেবল সেগুলি)/যেসব বিষয় কম ঝুঁকিপূর্ণ বা যার প্রভাব অল্প সংখ্যক লোকের ওপর পড়বে সেসব বিষয় ছোট দলে আলোচনা করাই উত্তম;
*    সদস্য সচিব সভার কার্যবিবরণী মালিক/ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ ও কমিটির সকল সদস্যকে সভা অনুষ্ঠানের অন্ততঃ ৫ (পাঁচ) দিন পূর্বে এটি সকল সদস্যের মধ্যে বিতরণ করতে হবে;
*    শ্রমিকেরা পড়তে পারে এমন স্থানে কার্যবিবরণীর কপি প্রদর্শন করতে হবে।

    সভার কার্যবিবরণী প্রস্তুতকরণঃ
সদস্য সচিব প্রতি সভার পর অবিলম্বে লিখিতভাবে কার্যবিবরণী তৈরি করবেন।
 


    সভার কার্যবিবরণী অনুমোদনঃ
সদস্য সচিব কর্তৃক খসড়া প্রণয়ন ও সভাপতি ও সহ-সভাপতি কর্তৃক অনুমোদন। 

    সেইফটি কমিটির কার্যবিবরণী সংরক্ষণঃ
সেইফটি কমিটির কার্যবিবরণীর কপি ৩ বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে হবে (অনুরোধ করা হলে শ্রম পরিদর্শক সমীপে উপস্থাপন করতে হবে)। [তফসিল- ৪(৩) (গ), বিএলআর]

    সেইফটি কমিটি পূণঃগঠন/পূণঃ অনুমোদনঃ
*    কারখানা বা প্রতিষ্ঠানে যৌথ দরকষাকষির প্রতিনিধি থাকলে সেইফটি কমিটির শ্রমিক পক্ষের কোন সদস্যকে প্রতিস্থাপিত (জবঢ়ষধপবসবহঃ) করতে হলে তিনি সিবিএ কর্তৃক মনোনীত হবেন।
*    কারখানা বা প্রতিষ্ঠানে কোন যৌথ দরকষাকষির প্রতিনিধি না থাকলে শ্রমিক প্রতিনিধিদের কোন সদস্যকে প্রতিস্থাপিত (জবঢ়ষধপবসবহঃ) করতে হলে তিনি অংশগ্রহণকারী কমিটির শ্রমিক প্রতিনিধিগণ কর্তৃক মনোনীত হবেন।
*    কমিটির মালিক পক্ষের সদস্যকে প্রতিস্থাপন (জবঢ়ষধপবসবহঃ) করতে হলে সেক্ষেত্রে মালিক কর্তৃক সদস্য মনোনীত হবেন।
*    কমিটির মেয়াদকালের মধ্যে যৌথ দরকষাকষির প্রতিনিধি (সিবিএ) নির্বাচিত হলে কোন প্রতিষ্ঠানে প্রাথমিকভাবে গঠিত সেইফটি কমিটির ২ বছর মেয়াদকালের মধ্যে যৌথ দরকষাকষির প্রতিনিধি নির্বাচিত হলে সেক্ষেত্রে ৩০ দিনের মধ্যে সিবিএ কর্তৃক মনোনীত প্রতিনিধি দ্বারা সেইফটি কমিটি পূণঃগঠন করতে হবে।
*    কোন প্রতিষ্ঠানে সেইফটি কমিটি গঠনের সময় যদি কোন অংশগ্রহণকারী কমিটি না থাকে এবং পরবর্তী ২ বছর মেয়াদের মধ্যে যদি অংশগ্রহণকারী কমিটি গঠিত হয় সেক্ষেত্রে নি¤œরূপ বিধান প্রযোজ্য হবে।
*    কোন প্রতিষ্ঠানে প্রাথমিকভাবে গঠিত সেইফটি কমিটির ২ বছর মেয়াদকালের মধ্যে অংশগ্রহণকারী কমিটি গঠিত হলে ৩০ দিনের মধ্যে অংশগ্রহণকারী কমিটি কর্তৃক মনোনীত শ্রমিক প্রতিনিধি দ্বারা সেইফটি কমিটি পূণঃগঠন করতে হবে।

    সুপারিশ ও বিভিন্ন কর্মসূচী পালনঃ
    *    চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণ আদায়ে সুপারিশ পেশঃ
আইনের দ্বাদশ অধ্যায়ে বর্ণিত দুর্ঘটনার কারণে চিকিৎসা পাইবার ও ক্ষতিপূরণ আদায়ের বিষয়ে সমাধানের জন্য মালিক বা কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত আকারে সুপারিশ পেশ করিতে পারিবেন।
*    নিরাপদ কর্মস্থল দিবস পালনঃ
জাতীয় বা আন্তর্জাতিকভাবে ঘোষিত “নিরাপদ কর্মস্থল” দিবস কারখানা বা শিল্প-প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে বা এলাকা ভিত্তিক কর্মসূচি পালন করিবার উদ্যোগ গ্রহণ করিবে।
*    জাতীয় শিল্প, স্বাস্থ্য ও সেইফটি কাউন্সিল কর্তৃক প্রণীত নীতিমালাঃ
জাতীয় শিল্প, স্বাস্থ্য ও সেইফটি কাউন্সিল কর্তৃক প্রণীত জাতীয় নীতিমালা এবং সময়ে সময়ে জারিকৃত গাইড লাইন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠান পর্যায়ের সেইফটি কমিটি কাজ করিবে।

    সেইফটি কমিটির এখতিয়ার, ইত্যাদিঃ সেইফটি কমিটির এখতিয়ার হইবে নি¤œরূপ। যথা-
*    সংশ্লিষ্ট কারখানা বা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন শেষে পরিদর্শক কর্তৃক প্রস্তুতকৃত পরিদর্শন প্রতিবেদনে কারখানা বা প্রতিষ্ঠানের সেইফটি সংক্রান্ত বিষয়ে কোন মতামত থাকলে উক্ত প্রতিবেদনের একটি অনুলিপি প্রতিবেদন প্রস্তুতের ১ মাসের মধ্যে প্রতিষ্ঠানের মালিক এবং সেইফটি কমিটির নিকট প্রেরণ করিবে;

*    কোন বিশেষ প্রয়োজনে বা কোন জরুরি পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে সভা ব্যতীত সেইফটি কমিটির সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যগণ নিজেদের স্বাক্ষরে মালিক বা ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের নিকট যেকোন সময় বিশেষ প্রতিবেদন দাখিল করিতে পারিবে;
*    সেইফটি কমিটির সুপারিশ মোতাবেক কোন সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানের মালিক বা কর্তৃপক্ষ সুপারিশ পাইবার পরবর্তী ৭ (সাত) কর্মদিবসের মধ্যে কোনরূপ উদ্যোগ বা পদক্ষেপ গ্রহণ না করিলে সেইফটি কমিটি মহাপরিদর্শক বা পরিদর্শকের নিকট লিখিত আকারে অনুযোগ পেশ করিতে পারিবেন এবং মহাপরিদর্শক বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত পরিদর্শক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন;
*    সেইফটি কমিটি স্বাতন্ত্র্যবোধ বজায় রাখিয়া আইন ও এই বিধিমালা দ্বারা অর্পিত দায়িত্ব পালন করিবে এবং প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক বিভাগসমূহ সেইফটি কমিটিকে দায়িত্ব প্রতিপালনে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করিবে;
*    সেইফটি কমিটির সদস্যগণ প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে কারখানা বা শিল্প-প্রতিষ্ঠান খোলা বা বন্ধ থাকা অবস্থায় সংশ্লিষ্ট কারখানা বা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করিতে পারিবেন এবং মালিক বা ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এক্ষেত্রে বিশেষ ব্যবস্থায় প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করিবেন;
*    সেইফটি কমিটির সদস্যদের অধীন গঠিত কমিটি সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনা বা প্রশিক্ষণ গ্রহণের জন্য প্রতিষ্ঠান বা কারখানা কর্তৃপক্ষ কর্মসময়ের মধ্যে যুক্তিসঙ্গত ও পর্যাপ্ত সময় প্রদান করিবে।

    সেইফটি কমিটির সিদ্ধান্ত গ্রহণ পদ্ধতি ও উহার বাস্তবায়নঃ
*    সেইফটি কমিটি কর্তৃক সেইফটি বিষয়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কমিটির সভায় সর্বসম্মত অথবা সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিতে হইবে;
*    সেইফটি কমিটির সিদ্ধান্ত প্রতিপালন বা বাস্তবায়ন করিবার জন্য মালিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন;
*    সেইফটি কমিটি কর্তৃক সরল বিশ্বাসে গৃহীত কোন সিদ্ধান্ত বা সম্পাদিত কোন কাজের জন্য অথবা সভায় কোন বিষয়ে মত বা দ্বিমত পোষণের জন্য কমিটির কোন সদস্যকে ব্যক্তিগতভাবে দায়বদ্ধ করা যাইবে না।

    সেইফটি কমিটির সদস্যদের প্রশিক্ষণঃ
*    কর্মক্ষেত্রে পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা এবং কর্ম-পরিবেশ সম্পর্কিত বিষয়ে মালিক বা কর্তৃপক্ষ সেইফটি কমিটির সদস্যদের মালিকের খরচে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করিবেন;
*    এইরূপ প্রশিক্ষণ কারখানা বা শিল্প-প্রতিষ্ঠানের প্রাঙ্গণে অথবা কোন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে আয়োজন করা যাইবে;
*    প্রশিক্ষণ চলাকালীন সদস্যগণ কর্মরত ছিলেন বলিয়া গণ্য হইবেন;
*    সেইফটি কমিটির প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সদস্যদের মাধ্যমে যতদূর সম্ভব সকল শ্রমিককে নিরাপদ কর্ম পরিবেশ ও স্বাস্থ্য ঝুঁকিমুক্ত থাকিবার বিষয়ে সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণের আয়োজন করিতে হইবে।

    কমিটি বিলুপ্ত করার পদ্ধতিঃ
    কর্তৃপক্ষ নি¤েœ লিখিত যেকোন কারণে কমিটি সাময়িক বিলুপ্তি অথবা বিলুপ্তি করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করেন। যেমন-
*    নির্বাচিত কমিটির সদস্যদের মধ্যে দ্ব›দ্ব বা সংঘাতের আশঙ্কা হইলে;
*    সদস্যরা একে অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন এবং অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হইলে;
*    সদস্যদের নৈতিক আচরণের (দুর্নীতি, ঘুষ বা অসততা) অধঃপতন ঘটিলে;

*    সদস্যদের প্রতি সাধারন শ্রমিকদের অভিযোগ বা ক্ষোভ ঘনীভ‚ত হইলে;
*    সদস্যদের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করার অভিযোগ উত্থাপিত এবং অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হইলে;
*    সদস্যদের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের গোপনীয় তথ্য পাচারের অভিযোগ উত্থাপিত এবং অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হইলে;
*    সদস্যদের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের সম্পদ ক্ষতি সাধন বা চুরির অভিযোগ উত্থাপিত এবং অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হইলে;
*    সদস্যদের বিরুদ্ধে মহিলা শ্রমিককে নির্যাতন অভিযোগ উত্থাপিত হইলে এবং অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হইলে; এবং
*    সদস্যদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ (সংশোধিত-২০১৩)-এর ধারা-২৩(৪) অনুযায়ী অসদাচারণের জন্য সাব্যস্ত এবং অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হইলে। 

Related Template

Follow us on Facebook


rmgjobs.com-Free Job Posting Website


Declaration:

RMGJobs.com is so excited to announce that, Here You get most latest update Government & Bank jobs Circular in Bangladesh. You Can also find here all types of private sector jobs circular for all sector & worker jobs circular for RMG sector. Most Common compliance issues in rmg sector of bangladesh & HR Policy Manual - Human Resource Solutions are also available here.


Related Search Tags:

সেইফটি কমিটি গঠন প্রণালী ও কার্য পরিধি, Safety committee formation procedure and scope of work, Safety committee formation procedure and scope of work template, Safety committee formation procedure and scope of work template download, free download Safety committee formation procedure and scope of work, Safety committee formation procedure and scope of work template bangla, germents textile Safety committee formation procedure and scope of work bangla, Safety committee formation procedure and scope of work pdf, Safety committee formation procedure and scope of work example, Safety committee formation procedure and scope of work of a company, importance of Safety committee formation procedure and scope of work, types of Safety committee formation procedure and scope of work, Safety committee formation procedure and scope of work sample, Safety committee formation procedure and scope of work and procedures manual, Safety committee formation procedure and scope of work guidelines, Safety committee formation procedure and scope of work for garments, Safety committee formation procedure and scope of work for textile