দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা
Crisis Management Plan


ভূমিকাঃ কারখানার আপদকালীন/দুর্যোগকালীন সময়ে ব্যক্তি ও বস্তু (Man & Material) এর যথাসম্ভব নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য একটি পূর্ব পরিকল্পনা এবং দুর্যোগকালীন সময়ে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য পূর্ব নির্ধারিত মানব সম্পদ এবং প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রীর যথাযথ ব্যবস্থাপনা অপরিহার্য এবং শিল্প কারখানায় আপদকালীন সংকট মোকাবেলার জন্য  সুষ্টু পরিকল্পনা  ও ইহার সঠিক বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনাও থাকা প্রয়োজন। প্রতিষ্ঠানের যেকোন দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য একটি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি রয়েছে যার সদস্যগণ দুর্যোগকালীন অবস্থা মোকাবেলার জন্য যথাযথ এবং কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে। 

অঙ্গীকারঃ কোম্পানির নাম এর ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকের আপদকালীন/দুর্যোগকালীন সময় সংক্রান্ত বিষয় সম্পর্কে সদা-সর্বদা অত্যন্ত সচেতন থাকে।

জরুরী অবস্থার প্রকারঃ জরুরী অবস্থা বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। যেমনঃ-
ক্স    অগ্নিকান্ড;
ক্স    ভূমিকম্প;
ক্স    বন্যা;
ক্স    বয়লার বিষ্ফোরন;
ক্স    ছোঁয়াচে রোগ;
ক্স    মহামারি;
ক্স    ক্যামিকেল বিষ্ফোরন;
ক্স    রাত্রীকালীন (ফ্যাক্টরী বন্ধ অবস্থায়) জরুরী অবস্থা (স্যাবোটাজ বা ডাকাতি বা রাহাজানি);
ক্স    শ্রমিক অবরোধ।
ক্স    প্রাকৃতিক দুর্যোগ।
ক্স    অবকাঠামো বা শক্তি।
ক্স    রাজনৈতিক কারণ।
ক্স    চাইল্ড কেয়ারের বাচ্চাদের, স্পেশাল বা প্রতিবন্ধী শ্রমিক ও গর্ভবতী মহিলাদের নিরাপদ স্থানে গমন।


অগ্নিকান্ডঃ

কারখানায় অগ্নি দুর্ঘটনা কোন ব্যতিক্রমধর্মী ঘটনা নহে। কাজেই কারখানার অগ্নি দুর্ঘটনা রোধকল্পে বিভিন্ন স্থানে প্রয়োজনীয় সংখ্যক অগ্নি নির্বাপন যন্ত্র স্থাপন করা হয়েছে। এ পরিকল্পনার আওতায় অগ্নি নির্বাপন এবং দুর্যোগকালীন সময়ে কারখানার মানব সম্পদ সহ অন্যান্য মূল্যবান দ্রব্য সামগ্রী রক্ষা এবং কারখানার নিরাপত্তার নিশ্চিতের কাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্যে একটি সমন্বিত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি দুর্যোগকালীন সময়ে কারখানার জন্য লিখিত অগ্নি নির্বাপন এবং নিরাপত্তা পরিকল্পনা অনুযায়ী আগুন জনিত দুর্যোগ মোকাবেলা করবে। এইগুলি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নির্দিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। ইহা ছাড়া আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে সকলে যাতে নিরাপদে বের হতে পারে, সেই জন্য প্রতিষ্ঠানটির বহির্গমন পথে জরুরী বহির্গমন প্ল্যান স্থাপন করা আছে। আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে ফায়ার সার্ভিস সহ অন্যান্য নিকটস্ত প্রয়োজনীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিন্মোক্ত নম্বরে জরুরী ভাবে যোগাযোগ করতে হবে। যেমনঃ

১.    পুলিশ ষ্টেশনঃ ৭৭৮৯৯০০, ০১৭১৩৩৭৩৩৩২
২.    ফায়ার সার্ভিসঃ ১৬১৬৩, ০২২২৩৩৫৫৫৫৫, ০১৭১৫৭৩১০১২
৩.    হাসপাতালঃ ০১৭১৩১৪৪২৬৭, ৭৭৮৯০১১
৪.    এম্বুলেন্স সার্ভিসঃ ৯৫৫৫৫৫৫, ৯৩৪৬৯৭০

এগুলো ছাড়াও কে কোন পথে এবং কিভাবে বাহির হবে সেই জন্য সকলকে প্রতিমাসে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। কাজেই, অগ্নি সংকেতের সাইরেন বাজার সঙ্গে সঙ্গে জরুরী বর্হিগমন পরিকল্পনা অনুসারে যাতে সবাই নিরাপদে স্বল্প সময়ের মধ্যে বের হতে পারে, সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিটি ইউনিটে আলাদা ভাবে ফায়ার ফাইটিং এর জন্য কমিটি/দল গঠন করা হয়েছে যার বর্ণনা নিন্মে প্রদত্ত হলঃ

১.    ফায়ার ফাইটিং দল।
২.    উদ্ধারকারী দল।
৩.    প্রাথমিক চিকিৎসক দল।
৪.    যোগাযোগ রক্ষাকারী দল।

ক)    ফায়ার ফাইটিং দলের দায়িত্ব ও কর্তব্যঃ

১.    আগুন লাগার সাইরেন শোনার সংগে সংগে ইলেকট্রিশিয়ান/অগ্নি নির্বাপক দলের দলনেতা/ফ্লোরে উপস্থিত নিকটতম ফায়ার ফাইটার অথবা সর্ব নিকটতম ব্যক্তি বিদ্যুতের মেইন সুইচ বন্ধ করবে।
২.    আগুন লাগার সাইরেন শোনার সংগে সংগে ফায়ার ফাইটিং দলের প্রত্যেকে দ্রুত তাদের জন্য নির্দিষ্ট অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রের কাছে চলে যাবে ও যন্ত্র নামিয়ে নেবে এবং একত্রিত হয়ে আগুন কোথায় লেগেছে তা জানার চেষ্টা বা পরবর্তী নির্দেশের জন্য অপেক্ষা করবে। তবে যদি নিজ ফ্লোরে আগুন লাগে তাহলে দ্রুত আগুনের কাছে যাবে এবং আগুনের দিকে তাক করে বাতাসের প্রতিকুলে অবস্থান গ্রহন করে নিরাপদ দূরত্বে দাড়িয়ে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করবে।
৩.    ফায়ার ফাইটাররা কে কোনটি অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করবে তা পূর্বেই নির্ধারিত থাকবে।
৪.    ফায়ার ফাইটাররা কারখানার হোস পাইপের সাহায্যে, প্রয়োজনে খাওয়ার পানির ড্রামের, বাথরুমে রক্ষিত ড্রামের, যদি বয়লার থাকে তবে সেখানে রক্ষিত ড্রামের পানি দ্বারা আগুন নিভাতে চেষ্টা করবে।
৫.    বৈদ্যুতিক আগুন নিভাতে শুধুমাত্র কার্বন ডাই অক্সাইড অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করবে। কোন অবস্থাতেই পানি ব্যবহার করবে না।
৬.    ফায়ার ব্রিগেড দল আসলে তাদেরকে সর্বোতভাবে সাহায্য সহযোগিতা করবে।
৭.    দলের সবাই দলনেতার নেতৃত্বে কাজ করবে।
৮.    নিজের ফ্লোরে আগুন না লাগলে পি.এম বা কর্তৃপক্ষের পরবর্তী নির্দেশের জন্য প্রস্তুত থাকবে। বিশেষ জরুরী অবস্থা ছাড়া ফ্লোর ত্যাগ করবেনা।

খ)    উদ্ধারকারী দলের দায়িত্ব ও কর্তব্যঃ

১.    আগুন লাগার সাইরেন শোনামাত্র দলনেতা হুইসেল বাজিয়ে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করবে।
২.    উভয় সিঁড়ি দিয়ে জরুরী বহির্গমন পথ অনুযায়ী ১ থেকে ৩ মিনিটের মধ্যে দ্রæততার সাথে সবাইকে নিরাপদে নেমে যেতে সহযোগিতা করবে। পূর্ব থেকেই কে কোথায় দাড়িয়ে লোকজন নামাতে সহযোগিতা করবে তা নির্ধারিত থাকবে।
৩.    বাথরুমে বা অন্য কোথাও কেহ আটকা পড়ল কিনা তা মহিলা বাথরুমে মহিলা এবং পুরুষ বাথরুমে পুরুষ কর্র্মীগণ খোঁজ করবে।
৪.    কেহ আহত বা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বা তাদেরকে দ্রæত প্রাথমিক চিকিৎসক দলের কাছে নিবে এবং কাউকে এম.আই. রুমে নেওয়ার প্রয়োজন হলে কাধেঁ করে অথবা প্রয়োজনে ষ্ট্রেচারে করে নিয়ে যাবে।
৫.    কেহ ভয় পেয়ে জানালা দিয়ে নামতে চেষ্টা করলে বা লাফ দিতে চাইলে তাকে বাধা প্রদান করতে হবে এবং সিড়ি দিয়ে নামতে সাহায্য করবে।
৬.    আগুন যেখানে লেগেছে তার চারপাশ থেকে মালপত্র বা মেশিনপত্র নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেবে।
৭.    দলের সবাই দলনেতার নেতৃত্বে কাজ করবে।
৮.    নিজের ফ্লোরে আগুন না লাগলে কর্তৃপক্ষের পরবর্তী নির্দেশের জন্য প্রস্তুত থাকবে। বিনা অনুমতিতে বিশেষ জরুরী অবস্থা  ছাড়া স্থান ত্যাগ করবেনা।
৯.    দ্রæততার জন্য সিঁড়িতে কেহ পড়ে যায় কিনা তার দিকে নজর রাখবে এবং পড়ে গেলে দ্রæততম সময়ে তাকে সরিয়ে এম.আই রুমে নিয়ে যাবে।  

গ)    প্রাথমিক চিকিৎসক এর দলের দায়িত্ব ও কর্তব্যঃ

১.    আগুন লাগার সাইরেন শোনামাত্র দ্রæত ফার্ষ্ট এইড বক্র এর কাছে গিয়ে নিরাপদে অবস্থান নিবে। আহত বা অসুস্থ রোগীকে দ্রæততার সাথে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করবে।
২.    প্রাথমিক চিকিৎসায় সুস্থ না হওয়ার মত অবস্থা হলে উদ্ধারকারী দলের সদস্যদেরকে দিয়ে দ্রুত এম,আই. রুমে প্রেরণ করবে।
৩.    কেবল মাত্র জরুরী অবস্থা ছাড়া কেউই কর্তৃপক্ষের নির্দেশ ব্যতিরেকে স্থান ত্যাগ করবেনা। 

ঘ)    যোগাযোগ রক্ষাকারীর দলের দায়িত্ব ও কর্তব্যঃ

১.    আগুন লাগার সাইরেন বাজার সংগে সংগে নিকটতম ফায়ার অফিস, শাখা অফিস, প্রধান অফিসকে অবহিত করতে থাকবে।
২.    অগ্নি দুর্ঘটনা বা আপদকালীন সময় ইউনিট/সেকশনের প্রধান প্রবেশ পথ সমূহকে বেষ্টনী করে রাখতে হবে যাতে ফ্যাক্টরীর বাহিরের কোন অপরিচিত ব্যক্তিবর্গ ইউনিট/সেকশনে প্রবেশ করতে না পারে।
৩.    অগ্নিনির্বাপনের জন্য ফায়ার সার্ভিস টীম যাতে ইউনিট/সেকশনে সহজে প্রবেশ করতে পারে এবং অগ্নি নির্বাপনের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনায় কোন প্রকার ব্যাঘাত না ঘটে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
৪.    নিকটতম পানির উৎস কোথায় তা ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের অবহিত করবে এবং যাবতীয় সাহায্য সহযোগীতা করবে।


ভূমিকম্পঃ

ভুমিকম্প অনুভূত হইলে সাথে সাথে সাইরেন বাজাতে হবে এবং ঊসবৎমবহপু বাধপঁধঃরড়হ চষধহ অনুসারে কারখানার সকল লোক স্বল্পতম সময়ে বাহিরে নিরাপদস্থানে চলে আসবে। এছাড়া প্রত্যেক ইউনিটের জন্য উদ্ধারকারী দল থাকবে যারা ইউনিটের পি এম বা কর্তৃপক্ষের নেতৃত্বে কাজ করবে। যদি ভূ-কম্পের মাত্রা বেশী থাকে এবং এর ফলে দালান কোটা ভেঙ্গে ভিতরে লোকজন আটকা পড়ে সেই ক্ষেত্রে  ফায়ার ব্রিগ্রেড ও বাহিরের অন্যান্য উদ্ধারকারী দলকে সাহায্য সহযোগিতা করবে।


বন্যাঃ

বন্যা বাংলাদেশের একটি নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। কখন কোথায় কোন এলাকা বন্যা কবলিত হবে তা বলা মুশকিল। তাই বন্যা কবলিত অথবা বন্যাত্তোর পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহন করা প্রয়োজন। বিশেষ করে কারখানা ও কারখানার শ্রমিকদের জানমাল ও সম্পদ রক্ষার জন্য ফ্যাক্টরীর এইচ.আর, কমপ্লায়েন্স ও সাসটেইন এ্যাবিলিটি এর নেতৃত্বে তিনটি কমিটি গঠন করতে হবে। উক্ত কমিটি কারখানার সমুদয় সম্পদ ও বন্যা কবলিত শ্রমিকদেরকে নিম্মোক্ত উপায়ে সাহায্য সহযোগিতা করবে।

১.    কারখানার সকল সম্পদ নিরাপদ স্থানে স্থানান্তর করা ।
২.    ক্ষতিগ্রস্থ শ্রমিকদের অস্থায়ী বাসস্থানের ব্যবস্থা করা।
৩.    যথা সম্ভব আর্থিক সাহায্য সহযোগিতা করা।
৪.    রোগব্যধি মাহামারি আকারে বিস্তার রোধ কল্পে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা।


বয়লার বিষ্ফোরনঃ

কারখানায় বয়লার বিষ্ফোরনের মতো ঘটা দুর্ঘটনা খুব অস্বাভাবিক কিছু নয়। বয়লার বিষ্ফোরন ঘটার সুযোগ না দেয়াই এর প্রতিরোধের প্রধান উপায়। কাজেই কারখানায় বয়লার বিষ্ফোরন দুর্ঘটনা রোধকল্পে সবসময় সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে এবং বিভিন্ন স্থানে প্রয়োজনীয় সংখ্যক অগ্নি নির্বাপন যন্ত্র স্থাপন করা হয়েছে। এ পরিকল্পনার আওতায় কারখানার মানব সম্পদ সহ অন্যান্য মূল্যবান দ্রব্য সামগ্রী রক্ষা এবং কারখানার নিরাপত্তার নিশ্চিতের কাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্যে একটি সমন্বিত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাছারাও আরও কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। যেমনঃ

১.    পর্যাপ্ত পরিমাণ সচল অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র বিভিন্ন সুবিধাজনক পয়েন্টে স্থাপন করা হয়েছে।
২.    বিড়ি, সিগারেট তথা ধূমপান সম্পুর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
৩.    দিয়াশলাই বা সিগারেটের লাইটার সমেত ফ্যাক্টরীতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
৪.    গ্যাস লাইন, বৈদ্যুতিক লাইন তথা বিভিন্ন ফিকচার ফিটিংস নিয়মিত পরিদর্শন করা এবং পরিদর্শন বইতে তা লিপিবদ্ধ করা হয়।
৫.    ফ্যাক্টরীতে কেমিক্যালস ব্যবহারে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
৬.    অগ্নিনির্বাপণের উপর নিয়মিত অনুশীলন/মহড়ার ব্যবস্থা গ্রহণকরতঃ সকলকে সচেতন করা হয়েছে।
৭.    প্রত্যেক ফ্লোর/সেকশনে পূর্বাহ্নে অগ্নি নির্বাপক দল এবং উদ্ধারকারী দল গঠন করা হয়েছে।
৮.    ফ্যাক্টরী চলাকালীন প্রত্যেক গেটের/দরজার তালা খোলা রাখা এবং তালাচাবি প্রশাসনিক কর্মকর্তার নিকট জমা রাখা। প্রশাসনিক কর্মকর্তা অবশ্যই তা নিশ্চিত করে থাকেন।
৯.    ফ্যাক্টরী বন্ধ হয়ে যাবার পর রুটিন মাফিক নিয়মিত বয়লার চেক করা। উক্ত চেকের সময় এডমিন, সিকিউরিটি, ইলেকট্রিক এবং ষ্টোরের প্রতিনিধি থাকবে।
১০.    প্রত্যেক সিঁড়িতে এবং প্রত্যেক ফ্লোরের উভয় প্রান্তে জরুরী বাতি/চার্জার লাইটের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
১১.    ফ্যাক্টরীতে অবস্থানরত গাড়ীগুলো সবসময় বহির্মূখী করে পার্ক করা হয়। যাতে সল্প সময়ে নিরাপদ অবস্থান গ্রহণসহ গাড়ী কর্তৃক কোন প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি না হয়।
১২.    প্রত্যেক ফ্লোরে নিয়ন্ত্রণের সুবিধার্থে পি.এ ইকুইপমেন্ট/হ্যান্ড মাইকের ব্যবস্থা রাখতে হবে।


ছোঁয়াচে রোগঃ

১.    আক্রান্ত রোগীকে অবশ্যই ছুটি দিতে হবে এবং প্রয়োজনে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।
২.    সকলকে সেই ছোঁয়াচে রোগ সম্পর্কে অবগত করতে হবে এই রোগ থেকে তারা কিভাবে সাবধান থাকতে পারে 
সে বিষয়ে ট্রেনিং প্রদান করতে পারে।
৩.    যদি আক্রান্ত রোগী কারো সংস্পর্শে আসে তাহলে তাদেরকেও দ্রুত পরীক্ষার আওতায় আনতে হবে।
৪.    এবং সরকার প্রদত্ত যাবতীয় নির্দেশনাবলী যথাযথভাবে পালন করতে হবে।

মহামারিঃ

১.    মহামারি সবাইকে অবগত করতে হবে।
২.    সবাইকে প্রয়োজনীয় ট্রেনিং প্রদান করতে হবে।
৩.    মহামারি থেকে নিরাপদ থাকার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও সরকার কর্তৃক যে সকল নির্দেশনা প্রদান করা হবে সে 
মোতাবেক কাজ করতে হবে।
৪.    ফ্যাক্টরি কর্তৃক শ্রমিকদের নিরাপত্তার জন্য সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
৫.    এবং সরকার প্রদত্ত যাবতীয় নির্দেশনাবলী যথাযথভাবে পালন করতে হবে।


ক্যামিকেল বিষ্ফোরনঃ

কারখানায় ক্যামিকেল বিষ্ফোরনও ঘটতে পারে আর এই ক্যামিকেল বিষ্ফোরণ প্রতিরোধের জন্য পূর্বপ্রস্তুতি গুহণ করতে হবে এবং দুর্ঘটনা ঘটার পরেও যাতে হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কম হয় সেজন্য পূর্বে থেকেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যেমনঃ

১.    ক্যামিকেল বিষ্ফোরন ঘটার সুযোগ না দেয়াই এর প্রতিরোধের প্রধান উপায়।
২.    পর্যাপ্ত পরিমাণ সচল অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র বিভিন্ন সুবিধাজনক পয়েন্টে স্থাপন করা।
৩.    বিড়ি, সিগারেট তথা ধূমপান সম্পুর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা।
৪.    দিয়াশলাই বা সিগারেটের লাইটার সমেত ফ্যাক্টরীতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা।
৫.    গ্যাস লাইন, বৈদ্যুতিক লাইন তথা বিভিন্ন ফিকচার ফিটিংস নিয়মিত পরিদর্শন করা এবং পরিদর্শন বইতে তা লিপিবদ্ধ করা।
৬.    ফ্যাক্টরীতে কেমিক্যালস ব্যবহারে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
৭.    অগ্নিনির্বাপণের উপর নিয়মিত অনুশীলন/মহড়ার ব্যবস্থা গ্রহণকরতঃ সকলকে সচেতন করা।
৮.    প্রত্যেক ফ্লোর/সেকশনে পূর্বাহ্নে অগ্নি নির্বাপক দল এবং উদ্ধারকারী দল গঠন করা।
৯.    ফ্যাক্টরী চলাকালীন প্রত্যেক গেটের/দরজার তালা খোলা রাখা এবং তালাচাবি প্রশাসনিক কর্মকর্তার নিকট জমা রাখা। প্রশাসনিক কর্মকর্তা অবশ্যই তা নিশ্চিত করবেন।
১০.    ফ্যাক্টরী বন্ধ হয়ে যাবার পর রুটিন মাফিক নিয়মিত ক্যামিকেল স্টোর/সাব স্টোর চেক করতে হবে। উক্ত চেকের সময় এডমিন, সিকিউরিটি, ইলেকট্রিক এবং ষ্টোরের প্রতিনিধি থাকবে।
১১.    প্রত্যেক সিঁড়িতে এবং প্রত্যেক ফ্লোরের উভয় প্রান্তে জরুরী বাতি/চার্জার লাইটের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
১২.    ফ্যাক্টরীতে অবস্থানরত গাড়ীগুলো সবসময় বহির্মূখী করে পার্ক করতে হবে। যাতে সল্প সময়ে নিরাপদ অবস্থান গ্রহণসহ গাড়ী কর্তৃক কোন প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি না হয়।
১৩.    প্রত্যেক ফ্লোরে নিয়ন্ত্রণের সুবিধার্থে পি.এ ইকুইপমেন্ট/হ্যান্ড মাইকের ব্যবস্থা রাখতে হবে।


রাত্রিকালীন জরুরী অবস্থা (ফ্যাক্টরী বন্ধ অবস্থায় স্যাবোটজ/ডাকাতি ইত্যাদি)ঃ

রাত্রিকালীন জরুরী অবস্থায় অনেক সময় অনেক দুর্ঘটনাই করতে হবে এবং এসব দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নি¤েœ উল্লেল্লিখ ব্যবস্থা গুহণ করতে হবেঃ

১.    রাত্রিকালীন জরুরী অবস্থায় যোগাযোগ করার জন্য দায়িত্ববান কাউকে নিবেদিত করা।
২.    পর্যাপ্ত পরিমাণ সতর্কীকরণ যন্ত্র (সাইরেন/কলিংবেল) সুবিধাজনক স্থানে স্থাপন করা।
৩.    জরুরী অবস্থায় আত্মবিশ্বাসী হয়ে কাজ করা।
৪.    জরুরী টেলিফোন নম্বরসমূহ (থানা পুলিশ, ফায়ার বিগ্রেড, স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনী) বিভিন্ন সুবিধাজনক স্থানে টাঁঙ্গিয়ে রাখা।


শ্রমিক অবরোধঃ

শ্রমিক অসন্তোষ অনেক ক্ষেত্রে শ্রমিক আন্দোলনে রুপ নেয় যদি উহা সমাধানে যথা সময়ে সঠিক পদক্ষেপ না নেওয়া হয়। ....................................... খুব গুরুত্ব সহকারে বিষয়টি অনুধাবন করে। প্রথমে শ্রমিকদের মধ্যে যাতে কোন প্রকার অসন্তোষ দানা বাধতে না পারে সে জন্য শুরুতেই শ্রমিকদের সমস্যাগুলো অনুধাবন করে এগুলো প্রাথমিক পর্যায়ে সমাধানের চেষ্টা করতে হবে। শ্রমিকদের অসন্তোষ দানা বেধে উঠার আগেই প্রত্যেক ইউনিট এর ওয়েলফেয়ার কমিটি নিয়মিত শ্রমিকদের অসুবিধাগুলো পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করবে।  এছাড়া ভিতরের অথবা বাহিরের কোন অন্দোলনকে নিয়ন্ত্রনে আনার জন্য নির্বাহী পরিচালকের নেতৃত্বে নিম্মোক্ত পদক্ষেপ সমূহ গ্রহন করতে হবেঃ 

১.    ভিতরের বা বাহিরের আন্দোলনকে স্থিমিত করার জন্য নিজস্ব সিকিউরিটি সহ স্থানীয় পুলিশের সহায়তা নেওয়া।
২.    পরবর্তীতে সমস্যাগুলো অনুধাবন করে উহার সমাধানের জন্য চেষ্টা করা।
৩.    যদি তাৎক্ষনিকভাবে সমাধান করা সম্ভব না হয় তবে তদন্ত পরিষদের মাধ্যমে সমাধান করা এবং ভবিষ্যতে যাতে এরূপ সমস্যার সম্মুখীন হতে না হয় সে জন্য প্রয়োজনীয় সুপারিশ মালা পেশ করা।
৪.    বাহিরের শ্রমিক অসন্তোষ যাতে আভ্যন্তরীণ শ্রমিক অসন্তোষে পরিনত না হয় বা বাহিরের শ্রমিক  অসন্তোষ বা আন্দোলন ফ্যাক্টরীর কোন ক্ষতি করতে না পারে সে লক্ষ্যে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের সহিত সুসম্পর্ক বজায় রেখে সার্বক্ষনিক ভাবে যোগাযোগ রক্ষা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।

প্রাকৃতিক দূর্যোগঃ

১.    অতিবৃষ্টি, বন্যা, ঝড়, জলোচ্ছাস ইত্যাদি প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে যোগাযোগ বা পরিবহন ব্যবস্থা ব্যহত হওয়ায় উাৎপাদন প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত কাঁচামাল সংগ্রহ বিলম্ব ঘটায় উৎপাদন ব্যহত হলে বা সম্পূর্ণ বা আংশিক বন্ধ থাকলে। 
২.    একটানা অতিবৃষ্টি, ঝড়, বন্যা ইত্যাদি প্রাকৃতি দূর্যোগের কারণে শ্রমিক কর্মী কারখানায় না আসতে পারায় উৎপাদন আংশিক বা সম্পূর্ণ বন্ধ থাকলে বা ব্যহত হলে। 
৩.    ঝড়, বন্যা, ভূমিকম্প ইত্যাদি প্রাকৃতিক আকষ্মিক ও সাময়িক দূর্যোগের কারণে কারখানা দালান কোঠা বা যন্ত্রপাতি ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় উৎপাদন আংশিক বা সম্পূর্ণ বন্ধ থাকলে বা ব্যহত হলে।


অবকাঠামোগত বা শক্তিঃ 

১। কোন কারণে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকলে ফলশ্রæতিতে উৎপাদন ব্যহত হলে। 
২। অগ্নিকান্ড বা বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের কারণে বা অন্য কোন আকস্মিক দুর্ঘটনা উৎপাদন যন্ত্র আংশিক বা সম্পূর্ণ বন্ধ থাকলে। 


রাজনৈতিক কারণঃ

১.    দেশের আভ্যন্তরিন রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার জন্য সৃষ্টি হরতাল, ধর্মঘট, ইত্যাদির জন্য উৎপাদন ব্যহত হওয়া বা উৎপাদনের জন্য কাঁচামাল পরিবহন ব্যহত হওয়া। 
২.    অবৈধ শ্রমিক ধর্মঘট, সরকার/সরকারী আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কোন নির্দেশে কারখানার উৎপাদন সাময়িক বন্ধ থাকলে বা ব্যহত হলে।
৩.    কাঁচামাল আমদানীর ক্ষেত্রে বিমান, নৌপথ বা সড়কপথে কোন বহিঃ রাষ্ট্রের যুদ্ধ বিগ্রহ বা অন্য কোন প্রকার জরুরী অবস্থা বা নিষেধাজ্ঞার কারণে পরিবহনে বা ঈঁংঃড়সং-এ কোন জটিলতা দেখা দেওয়ায় কাঁচামাল পেতে বিলম্ব হওয়ায় উৎপাদন ব্যহত হলে বা সাময়িক বন্ধ থাকলে। 
৪.    দেশের আভ্যন্তরীন বা আর্ন্তজাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আকষ্মিকভাবে বাণিজ্য আইন, আমদানী-রপ্তানী ও ঈঁংঃড়স আইনসহ অন্যান্য সংশিষ্ট আইনের পরিবর্তন বা সংশোধনের জন্য সাময়িক উৎপাদন ব্যহত বা বন্ধ থাকলে।


চাইল্ড কেয়ারের বাচ্চাদের, স্পেশাল বা প্রতিবন্ধী শ্রমিক ও গর্ভবতী মহিলা শ্রমিকদের নিরাপদ স্থানে গমনঃ

১.    চাইল্ড কেয়ারের বাচ্চাদের নিরাপদ স্থানে গমনঃ যেকোন বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে সিকিউরিটিরা দ্রæত চাইল্ড কেয়ারে গিয়ে সেখানে থাকা বাচ্চাদের উদ্ধার করে সমাবেশ স্থলে হাজির করবে।
২.    স্পেশাল বা প্রতিবন্ধী শ্রমিকদের নিরাপদ স্থানে গমনঃ যেকোন বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে সেকশনের সুপারভাইজাররা দ্রæত স্পেশাল বা প্রতিবন্ধী শ্রমিকদের উদ্ধার করে সমাবেশ স্থলে হাজির করবে।
৩.    গর্ভবতী মহিলা শ্রমিকদের নিরাপদ স্থানে গমনঃ যেকোন বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে সেকশনের সুপারভাইজাররা দ্রæত গর্ভবতী মহিলা শ্রমিকদের উদ্ধার করে সমাবেশ স্থলে হাজির করবে।

জরুরী অবস্থার প্রতিকারসমূহঃ

১.    যদি কোন ফ্লোরে আগুন লাগে তাহলে আগুন লাগার সাথে সাথে সকলকে সতর্কীকরণের নিমিত্তে ফায়ার এলার্ম/সাইরেন/কলিং বেল বাজিয়ে সতর্ক করতে হবে।
২.    যে ফ্লোরে আগুন লেগেছে সে ফ্লোরের বৈদ্যুতিক মেইন সুইচ অফ করে দিতে হবে এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ফ্যাক্টরীর প্রধান সুইচসহ অফ করে দিতে হবে।
৩.    অগ্নিনির্বাপক দল ও উদ্ধারকারী দল ব্যতীত মহিলা ও পুরুষগণ ১/২ মিনিটে দ্রæততায় সিঁড়ি দিয়ে স্কেপ প্ল্যান অনুযায়ী বের হয়ে যাবে।
৪.    নিরাপত্তায় নিয়োজিত ব্যক্তিগণ তৎক্ষণাৎ ফ্যাক্টরীর বিভিন্ন গেটের ভিতর এবং বাহিরে অবস্থান নিবে। বাহির থেকে কেহ যেন অনুপ্রবেশ করতে না পারে তার ব্যবস্থা নিবে অর্থাৎ কর্ডন দলের কাজ করবে। তাছাড়া মানুষ ও গাড়ী চলাচলের জন্য সম্মুখের রাস্তা উন্মুক্ত রাখবে।
৫.    অগ্নিনির্বাপক দল কর্তৃক ফ্লোর/সেকশনে রক্ষিত অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রের ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
৬.    অগ্নিনির্বাপক দল এবং উদ্ধারকারী দলকে আত্মবিশ্বাসী হয়ে কাজ করতে হবে।
৭.    ফ্লোর বা সেকশন থেকে লোকজন নেমে যাওয়ার পর উদ্ধারকারী দল দ্রæত দূর্ঘটনা কবলিতদের উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসক দলের কাছে নিয়ে যাবে এবং প্রয়োজনে ফ্যাক্টরীর চিকিৎসা কেন্দ্রে পৌঁছে দিবে।
৮.    কারো গায়ের কাপড়ে আগুন লেগে গেলে তৎক্ষণাৎ ফ্লোরে গড়াগড়ি দিতে হবে। কোনক্রমেই দৌঁড়ানো যাবে না।
৯.    বাথরুম/টয়লেট ও বিল্ডিং-এর ছাদ চেক করতে হবে যাতে কোন লোক আটকা পড়ে না থাকে।
১০.    কোনভাবেই সিঁড়ি ব্যতীত অন্য কোন অবস্থায় নামবার চেষ্টা করবে না।
১১.    অত্যন্ত ক্ষিপ্রতার সঙ্গে উদ্ধারকারী দল দূর্ঘটনায় কবলিত মালামাল উদ্ধার করবে।
১২.    বন্যার সময় পানি ঢুকার পূর্বেই সমস্ত যন্ত্রপাতি, জিনিসপত্র, জরুরী কাগজপত্র নিরাপদ উচ্চতায়, নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে হবে।
১৩.    পানিপূর্ণ বা পানির কাছাকাছি স্থানে বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হবে।
১৪.    বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা করা।
১৫.    বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলা করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা।
১৬.    ভূমিকম্পের সময় মহিলা এবং পুরুষগণ নির্ধারিত স্ব-স্ব সিঁড়ি দিয়ে স্কেপ প্ল্যান অনুযায়ী বের হয়ে যাবে।
১৭.    ভূমিকম্পের পর উদ্ধারকারী দল দূর্ঘটনায় কবলিত লোকজন এবং জিনিসপত্র উদ্ধার করবে।
১৮.    উদ্ধারকারী দলকে আত্মবিশ্বাসী হয়ে কাজ করতে হবে।
১৯.    ভূমিকম্প পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলা করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা।
২০.    ফ্যাক্টরী বন্ধ থাকা অবস্থায় রাত্রিকালীন যে কোন জরুরী অবস্থায় কর্তব্যরত ব্যক্তি অতি সত্ত¡র নিবেদিত দায়িত্ববান ব্যক্তিকে এবং প্রয়োজনীয় সকল জায়গায় অবহিত করবেন।
২১.    যে কোন জরুরী অবস্থা মুখোমুখী হওয়ার সাথে সাথে সতর্কীকরণের নিমিত্তে ফায়ার এলার্ম/সাইরেন/ কলিংবেল বাজিয়ে সকলকে সতর্ক করতে হবে।

প্রশাসনিক শাখা কর্তৃক গ্রহণীয় বিবিধ ব্যবস্থাঃ

১.    আহত লোকজনকে প্রয়োজন অনুযায়ী ফ্যাক্টরীর চিকিৎসা কেন্দ্রে বা নিকটবর্তী হাসপাতালে প্রেরণ করতে হবে।
২.    অনতিবিলম্বে ফায়ার বিগ্রেডকে প্রয়োজনীয় সহায়তার জন্য টেলিফোন করতে হবে।


অগ্নি নির্বাপণ/জরুরী অবস্থার জন্য দল সমূহের সংগঠনঃ

    কর্ডন পার্টিঃ

০১)    নিরাপত্তায় নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ।
০২)    ফ্যাক্টরীর বিভিন্ন গেট-এর বাহিরে এবং ভিতরে অবস্থান নিবে। 

কাজঃ অনুপ্রবেশকারীকে প্রতিহত করা এবং সামনের রাস্তাটি গাড়ীচলাচলের জন্য উন্মুক্ত রাখা যাতে ফ্যাক্টরীর লোকজন নির্বিঘেœ বাসায় গমন করতে পারে এবং ফায়ার বিগ্রেড, পুলিশের গাড়ী চলাচল করতে পারে।

অগ্নি নির্বাপণকারী দলঃ 

প্রত্যেক ইউনিট/শাখা/সেকশনের প্রধানগণ অগ্নি নির্বাপনের সার্বিক দায়িত্ব পালন করবে। তাদের তত্ত¡াবধানে অগ্নি নির্বাপনকারী দল এবং উদ্ধারকারী দল কাজ করবে। তারা নির্বাহী পরিচালক, জি এমদের সাথে আলোচনাপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

উদ্ধারকারী দলঃ প্রথমে মানুষ এবং পরে মালামাল উদ্ধার করবে।

প্রাথমিক চিকিৎসা দলঃ দুর্ঘটনা কবলিতদের দ্রæত প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করিবে।

অগ্নি নির্বাপক, উদ্ধারকারী এবং প্রাথমিক চিকিৎসকদের দল সংগঠন এবং যাবতীয় দায়িত্ব ও কর্তব্য যথাযথভাবে পালন করবে।


দুর্যোগকালীন সময়ে গৃহীত পদক্ষেপঃ

যে কোন ধরনের দূর্যোগ যেমন বন্যা, সাইক্লোন, ভূমিকম্প, অগ্নিকান্ড, বয়লার বিস্ফোরন অথবা উত্তেজিত জনতার আগমন যা কারখানার ভেতরে অথবা বাইরে সংগঠিত হয়ে কারখানা এবং শ্রমিকের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে, তা মোকাবেলা করার জন্য  নিম্নলিখিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

১.    দুর্যোগের ভয়াবহতা যদি তীব্র হয় এবং যদি এমন আশংকা থাকে যে, দূর্যোগে জান-মাল, মেশিন ও অন্যান্য দ্রব্যাদির ক্ষতি হবে; তাহলে কারখানা বন্ধ ঘোষণা করতে হবে।
২.    ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা করার জন্য বিভিন্ন প্রকার দ্রব্যাদি যেমন- কাপড়, তৈরী পোশাক, মেশিন, মেশিনের অংশ অথবা অন্যান্য মূল্যবান দ্রব্যাদি নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিতে হবে।
৩.    শ্রমিক কর্মচারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হবে এবং তাদের গন্তব্যে নিরাপদে পৌঁছিয়ে দেয়া নিশ্চিত করা হবে।
৪.    প্রয়োজনে বৈদ্যুতিক সরবরাহ বন্ধ করে দিতে হবে।
৫.    দুর্যোগে পতিত শ্রমিক কর্মচারীদের দ্রæত উদ্ধার করে আহতদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে হবে এবং গুরুতর আহতদের নিকটবর্তী হাসপাতালে প্রেরণ করতে হবে।
৬.    প্রাকৃতিক দূর্যোগের সময় ছোট খাট চুরি এবং বৃহৎ চুরির আশংকা খুব বেশী থাকে। তাই এ সময় নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে। সকল সিকিউরিটি পয়েন্টে ইমারজেন্সি লাইটের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
৭.    দুর্যোগ শেষ হওয়া মাত্রই কারখানা পুণরায় সচল করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।    


কর্ডন পার্টিঃ

দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য কারখানায় তাৎক্ষনিকভাবে গঠিত একটি কর্ডন পার্টি থাকবে। এ পার্টি তৎক্ষনাৎ কারখানার গেটের ভিতর এবং বাইরে অবস্থান নিবে। অনুপ্রবেশকারীদেরকে প্রতিহত করবে, চলাচলের পথ উন্মুক্ত রাখবে। যাতে লোকজন, ফায়ার ব্রিগেড, এ্যাম্বুলেন্স, পুলিশের গাড়ী নির্বিগ্নে চলাচল করতে পারে।

দুর্যোগকালীন সময় পরবর্তী উৎপাদন প্রক্রিয়াঃ
 
১.    কারখানায় বিদ্যমান পিপিসি কর্তৃপক্ষের সাথে য্গোাযোগ কারে নতুন ভাবে প্রডাস্কন প্লান প্রদান করবেন।
২.    কারখানা কতৃপক্ষ তার বিদ্যমান অর্ডারগুলোকে প্রথমত নিজ কারখানায় সম্পন্ন কারার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করবে। প্রয়োজনে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে নির্ধারিত কর্মঘন্টার অতিরিক্ত কর্মঘন্টা পরিচালনা করবে। তথাপি যদি কার্যসম্পাদন নির্ধারিত সময়ে সম্পন্ন করা না যায় সে ক্ষেত্রে ক্রেতার অনুমতি সাপেক্ষে তার অনুমদিত প্রীতি গ্রæপের অন্যান্য কারখানাগুলোতে উৎপাদন কার্য সম্পাদন করিবে।

উপরোক্ত সম্ভাব্য বিষয়গুলি যদি কাজ না হয়, তাহলে সঠিক বিকল্প অবস্থান নিতে হবে।

ইহা ছাড়াও আমাদের আরো কিছু বিষয়ে সজাগদৃষ্টি রাখতে হবে। যেমনঃ

 জরুরী উদ্ধার পরিকল্পনাঃ

১.    অপ্রীতিকর ঘটনা বা সঙ্কটের জন্য প্রস্তুতি।
২.    অনাকাংখিত ও অপ্রত্যাশিত ঘটনার জন্য প্রস্তুতি।


লক্ষ্যঃ

একটি অনাকাংখিত ও অপ্রত্যাশিত ঘটনার মোকাবেলা ও নিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে সুন্দর ও নিরাপদ কর্মক্ষেত্র ও পরিবেশ নিশ্চিত করা।

পরিকল্পনার ধাপঃ

১.    প্রয়োজনীয় পরিকল্পনার ধারনা।
২.    প্রতিকুল অবস্থা সনাক্ত করণ।
৩.    সম্ভাব্য ফলাফল উল্লেখ করা।
৪.    ঝুঁকির মান নির্ধারণ করা।
৫.    কৌশল নির্ধারণ করা।
৬.    প্রয়োজনে চুক্তিতে যাওয়া।
৭.    পরিকল্পনার খসড়া করা ও দায়-দায়িত্ব বন্টন করা।
৮.    পরিকল্পনার অনুকরণ ও বা¯তবায়ন করা।

আপদকালীন ব্যবস্থাপনাঃ

০১। সঙ্কট নির্ধারণ।
০২। পরিকল্পনা অনুকরণ।
০৩। পরিকল্পনার ফলাফল পর্যবেক্ষণ।
০৪। ক্ষতি কমানোর চেষ্টা।
০৫। সঙ্কট মোকাবেলার জন্য দল নির্ধারণ।
০৬। সঙ্কট নিরসন।

একটি সঙ্কটের ধাপঃ

১.    প্রাথমিক অবস্থাঃ পূর্ব অনরূপ ঘটনা।
২.    সতর্কতাঃ কি ঘটতে পারে এবং কিরূপ ক্ষতি হতে পারে।
৩.    সঙ্কট কেন্দ্রঃ কোথা থেকে ঘটনার উৎপত্তি।
৪.     উদ্ধারঃ সঙ্কট নিরসনের ব্যবস্থা।
৫.     মুল্যায়নঃ সঙ্কটের প্রভাব মুল্যায়ন।
সঙ্কট ব্যবস্থাপনা নীতিঃ

১.    সঙ্কট নির্ধারণ।
২.     ঘটনার গতি পথ সনাক্তকরণ।
৩.     বিবেচনা।
৪.     ক্ষতি নির্ধারণ।
৫.     সঙ্কট পরিস্থিতির উন্নয়ন।
৬.     সহযোগিতা বৃদ্ধি।
৭.    তথ্য নিয়ন্ত্রণ।
৮.     যথাযথ পদক্ষে


ব্যবসায়িক অংশীদার/সাপ্লায়ারদের সাথে যোগাযোগঃ

যেকোন ধরনের দুর্যোগের সম্মুখীন হলে ফ্যাক্টরী কর্তৃপক্ষ যত দ্রæত সম্ভব এই সম্পর্কে তাদের ব্যবসায়িক অংশীদার/সাপ্লায়ারদেরকে বিস্তারিত তথ্য সরবরাহ করবে। প্রয়োজনে তাদের সাথে মিটিং হবে এবং সকলের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে উক্ত দুর্যোগের প্রতিকারের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।


প্রতিষ্ঠান সাময়িক/স্থায়ীভাবে স্থানান্তরঃ

যদি দুর্যোগের কারণে এমন কোন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় যে বর্তমান স্থানে সাময়িক সময় বা স্থায়ী সময়ের জন্য কার্য পরিচালনা করা সম্ভব নয় তাহলে কার্য সম্পাদনের জন্য প্রিটি সোয়েটার্সে সাময়িক/স্থায়ীভাবে স্থানান্তর করা হবে। যা কুলিয়ার চর টাওয়ার, সায়দানা, গাজীপুর সিটি, গাজীপুর অবস্থিত। দায়িত্বরত ব্যক্তি । এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করবে দুর্যোগকালীন পরিস্থিতির উপর বিচার বিশ্লেষণ করে এবং সকল ব্যবসায়িক অংশীদার/সাপ্লায়ারদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে সকলের সম্মতিক্রমে।


উপসংহারঃ

যে কোন জরুরী অবস্থায় আমাদের সকলকে একাত্ব হয়ে কাজ করতে হবে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে সাধারনত ক্ষতি হবে ভয়াবহ ও অপূরণীয়। তাই সম্মিলিতভাবে আমাদের চেষ্টা করতে হবে বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য। জান ও মালের হেফাজত করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য।
 

Related Template

Follow us on Facebook


rmgjobs.com-Free Job Posting Website


Declaration:

RMGJobs.com is so excited to announce that, Here You get most latest update Government & Bank jobs Circular in Bangladesh. You Can also find here all types of private sector jobs circular for all sector & worker jobs circular for RMG sector. Most Common compliance issues in rmg sector of bangladesh & HR Policy Manual - Human Resource Solutions are also available here.


Related Search Tags:

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা, Crisis Management Plan, Crisis Management Plan template, Crisis Management Plan template download, free download Crisis Management Plan, Crisis Management Plan template bangla, germents textile Crisis Management Plan bangla, Crisis Management Plan pdf, Crisis Management Plan example, Crisis Management Plan of a company, importance of Crisis Management Plan, types of Crisis Management Plan, Crisis Management Plan sample, Crisis Management Plan and procedures manual, Crisis Management Plan guidelines, Crisis Management Plan for garments, Crisis Management Plan for textile