ভূমিকাঃ ........................... বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পে একটি বিশ্বস্ত ও পরিচিত নাম। অত্র প্রতিষ্ঠান শ্রমিক কল্যাণ সম্পর্কিত বাংলাদেশ শ্রম আইন, আন্তর্জাতিক আইন ও সামাজিক কল্যাণমুখী দায়বদ্ধতার প্রতি যথেষ্ট শ্রদ্ধাশীল। তাই ..................... তার আগামী দিনের চ্যালেঞ্জকে সামনে রেখে গার্মেন্টস শিল্পের সুষ্ঠু বিকাশমান ধারাকে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য শ্রমিক কল্যাণমূখী বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন। কর্মরত মহিলা শ্রমিকগণ তাদের সন্তানদের নিরাপদ এবং নিশ্চিন্তে রেখে যাতে উৎপাদন কাজে মনোযোগী, উৎপাদন বৃদ্ধি ও পণ্যের গুণগত মান চলমান রাখতে কর্তৃপক্ষ ফ্যাক্টরীর অভ্যন্তরে একটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্য সম্মত “শিশু পরিচর্যা কেন্দ্র” স্থাপন করেছেন।
“শিশু পরিচর্যা কেন্দ্র” শিশু রাখা ও তাদের দেখাশুনা করার জন্য ........................-এর কর্তৃপক্ষ শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রের জন্য নিমোঃক্ত নীতিমালা অনুসরণ করে থাকেঃ
ফ্যাক্টরীতে নিয়োজিত আছেন এমন মহিলা শ্রমিকের সন্তানের বয়স ৬ বছরের কম হতে হবে।
................................. এ কর্মরত কোন শ্রমিক বা কর্মচারী শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রে তাদের সন্তানদের রাখতে চান তাহলে মানব সম্পদ ও কমপ্লায়েন্স বিভাগ থেকে শিশুর ভর্তির আবেদপত্র সংগ্রহ করতে হবে।
শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রে ভর্তির সময় শিশুর শারীরিক পরীক্ষা করা হয়ে থাকে। কারণ কোন ধরনের সংক্রামক রোগ, যেমন- হাম, ডায়রিয়া, আমাশয়, খুজলী-পাঁচড়া ইত্যাদি আছে কি না?
শিশুর কোন ধরনের সংক্রামক রোগ, যেমন- হাম, ডায়রিয়া, আমাশয়, খুজলী-পাঁচড়া ইত্যাদি হলে বাচ্চাকে শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রে আনা যাবে না।
শিশু পরিচর্যা কেন্দ্র সকাল ৮.০০ ঘটিকা থেকে সন্ধ্যা ৭.০০ ঘটিকা পর্যন্ত খোলা থাকে।
“শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রে” শিশু থাকার সময় প্রতিটি কার্যক্রম একটি নির্দিষ্ট তালিকা অনুযায়ী যেমন-শিশু কখন ঘুমাবে, কখন পড়ালেখা করবে, কখন খেলাধুলা করবে ইত্যাদি উল্লেখপূর্বক পরিচালিত হবে।
মা-বাবা কাজে যাবার পূর্বে বাচ্চাকে “শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রে” দিয়ে যাবেন এবং কাজ শেষে বাচ্চাকে “শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রে” থেকে নিয়ে যাবেন।
কোন সন্তানকে সকালে “শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রে” নিয়ে আসার পর বৈধ অবিভাবক ছাড়া কোনক্রমেই অন্যের হাতে হস্তান্তর করা যাবে না।
“শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রে” শিশুর নাম প্রতিদিনের আসা ও যাবার সময় রেজিষ্টারে লিপিবদ্ধ করতে হবে এবং রেজিষ্টারে অভিভাবক ও শিশু পরিচর্যাকারীণির স্বাক্ষর করবে।
বাচ্চা “শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রে” থাকাকালীন সময়ে তার আইনানুগ অভিভাবক (মা-বাবা) ছাড়া অন্য কোন আত্মীয়-স্বজন বা অপরিচিত ব্যক্তির নিকট বাচ্চাকে দেয়া হয় না।
“শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রে”-এ থাকাকালীন সময়ে প্রয়োজন ছাড়া বাচ্চাকে শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রের বাইরে আনা যাবে না।
“শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রে” রাখার পর অভিভাবক উৎপাদন ব্যবস্থাপকদের অনুমতি সাপেক্ষে “শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রে” এসে তার বাচ্চাকে বুকে দুধ খাওয়াতে পারবে, এক্ষেত্রে কোন বাঁধা দেয়া যাবে না।
বাসায় শিশুর ব্যবহার্য্য কোন জিনিষপত্র “শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রে” আনা যাবে না।
মাসিক মিটিং-এ অভিভাবক (মা-বাবা) ও শিশু পরিচর্যাকারীণিকে উপস্থিতি থাকতে হবে।
বাচ্চার অভিভাবক (মা-বাবা)-কে শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রের সকল নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে।
কেন্দ্রের শিশু পরিচর্যাকারীণি শিশু রক্ষণাবেক্ষণ নীতিমালা সম্পূর্ণভাবে মেনে চলবে এবং প্রতিষ্ঠানের কল্যাণ কর্মকর্তা প্রতিদিন ২ বার করে “শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রে” পরিদর্শন করবেন।
সুবিধাসমূহঃ “শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রে” নিমোক্ত সুবিধাসমূহ বিদ্যমানঃ
প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিছানা;
খেলনা সামগ্রী;
শিশুদের পড়া লেখার সরঞ্জাম;
প্রয়োজনীয় ক্রোকারিজ এবং কাটলারিজ;
টয়লেট সুবিধা;
প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী;
“শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রে” অবস্থানরত শিশুদের সাথে মায়েরা নিয়মিত বিরতিতে দেখা করতে পারেন।
যে সকল শিশুরা শুধুমাত্র মায়ের বুকের দুগ্ধ পান করে থাকে তাদের ক্ষেত্রে মায়েরা ১ ঘন্টা পর পর বুকের দুগ্ধ খাওয়াবার জন্য সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন।
কর্তৃপক্ষ “শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রে” অবস্থানকালীন সময় শিশুর প্রয়োজনীয় খাবারের ব্যবস্থা করবে। তবে, যদি কোন অভিভাবক (মা-বাবা) তার শিশুকে কিছু খাওয়াতে চায়, তবে নির্দিষ্ট বিরতির সময় তিনি এই সুবিধা পাবেন।
শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রে থাকাকালীন সময় বাচ্চা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে যত দ্রæত সম্ভব তার অভিভাবক (মা-বাবা) কে জানিয়ে দেয়া হয়। প্রয়োজনানুসারে কর্তৃপক্ষ প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করে থাকে।
পরিচ্ছন্নতা ও নিরাপত্তাঃ
....................................-এর কর্তৃপক্ষ “শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রে” শিশুদের পরিচ্ছন্নতা ও নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে নিড়িবিলি পরিবেশে স্থাপন করেছেন। নিন্মে উল্লেখিত পরিচ্ছন্নতা ও নিরাপত্তার নিশ্চিত করে থাকেঃ
“শিশু পরিচর্যা কেন্দ্র”টি এমন জায়গায় স্থাপন করা হয়েছে, যেখানে কোন বিরক্তিকর ধোঁয়া, ধূলাবালি বা গন্ধ নির্গত হয় অথবা যেখানে অতি মাত্রায় শব্দময়মুক্ত পরিবেশে স্থাপন করতে হবে।
শিশুদের বাসোপযোগী করার ব্যবস্থা করতে হবে। পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে।
শিশুদের বসা, খেলা করা, ঘুমানো এবং স্বাচ্ছন্দ চলাফেরার ব্যবস্থা রাখতে হবে।
ঘরে এমন কোন আসবাবপত্র, কাঁচের বোতল রাখা যাবে না যাতে শিশুরা আঘাত প্রাপ্ত হয়।
শিশুদের খেলাধুলার জন্য সুন্দর সুন্দর খেলনা রাখতে হবে। তবে এমন কোন খেলনা রাখা যাবে না যাতে খেলনা থেকেই শিশুরা আঘাত পায়।
“শিশু পরিচর্যা কেন্দ্র” শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট শিশু মায়েরা ছাড়া অন্যদের যাতায়াত নিষিদ্ধ। নিরাপদ “ফিডিং” প্রদানের জন্য এখানে পৃথক ব্যবস্থা থাকতে হবে।
২জন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিশু পরিচর্যাকারীণির তত্ত¡াবধানে সার্বক্ষণিকভাবে “শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রে”-এর দায়িত্বে নিযুক্ত আছেন।
কক্ষটি কর্তব্যরত চিকিৎসক কর্তৃক নিয়মিত পরিদর্শনের ব্যবস্থা রাখতে হবে। তিনি শিশুদের স্বাস্থ্য পরীক্ষায় পাশাপাশি কক্ষটিও নিরাপদ রাখার ব্যাপারে যথাযথ উপদেশ দেবেন।
উপসংহারঃ রপ্তানীমুখী গার্মেন্টস শিল্পে উৎসাহী ও নিবেদিতপ্রাণ শ্রমিক ও কর্মচারীবৃন্দ সাফল্যের নিয়ামক শক্তি হিসেবে কাজ করেন। স্বাভাবিকভাবেই এই শিল্পে নিয়োজিত সবার জন্য যথাযথ সম্মান নিয়ে কাজ করার ব্যবস্থা করলে তা শিল্পের বিকাশে প্রভূত সহায়ক হবে। এটা কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব যে, এমন একটি উৎপাদন সহায়ক কর্মপরিবেশ সৃষ্টি করা যেখানে সবাই সুস্থ ও সুন্দরভাবে কাজ করতে পারে। এ লক্ষ্যেই ........................... এমন একটি উৎপাদন সহায়ক কর্ম পরিবেশ সৃষ্টি এবং বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর।