(কোম্পানির নাম) -এর কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধার কথা বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। বিশেষ করে কর্ম চলাকালীন সময়ে যাতে খাওয়া-দাওয়ার কোন প্রকার সমস্যা না হয় এবং ফ্যাক্টরীর অভ্যন্তরেই যাতে তাদের প্রয়োজন মাফিক স্বাস্থ্য-সম্মত এবং সুলভ মূল্যে খাদ্য দ্রব্য কিনে খেতে পারেন, সে লক্ষ্যে ফ্যাক্টরীতে একটি ক্যান্টিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তারই প্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের সার্বিক প্রয়োজনীয়তার কথা বিবেচনা করে অত্যন্ত মনোরম পরিবেশে ফ্যাক্টরীতে কর্মরত সকল শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের হাল্কা নাস্তা করার সুবিধার্থে ডাইনিং হলের পাশে একটি ক্যান্টিন স্থাপন করেছেন। কর্তৃপক্ষ ক্যান্টিন পরিচালনা ও পর্যবেক্ষণ করার জন্য “ক্যান্টিন ব্যবস্থাপনা নীতিমালা” প্রণনয় করেছেন।
“ক্যান্টিন ব্যবস্থাপনা কমিটি” গঠনঃ
(কোম্পানির নাম) -এর কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (সংশোধিত-২০১৩) এবং বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা-২০১৫ এর বিধি-৯০ অনুসরণ করে গঠন করা হয়েছে। যেমন-
(১) প্রতিষ্ঠানের মালিক কর্তৃক মনোনীত এবং প্রতিষ্ঠানের কল্যাণ কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে সংখ্যাগরিষ্ঠ শ্রমিকদের মতামতের ভিত্তিতে মনোনীত সমসংখ্যক ব্যক্তির সমন্বয়ে ক্যান্টিন ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠিত হইবে;
(২) কমিটিতে শ্রমিক সদস্য ২ (দুই) জনের কম বা ৫ (পাঁচ) জনের অধিক হইতে পারিবে না;
(৩) প্রতিষ্ঠানে যৌথ দরকষাকষি প্রতিনিধি থাকিলে তাহারা শ্রমিক প্রতিনিধি মনোনীত করিবেন;
তবে শর্ত থাকে যে, প্রতিষ্ঠানে যৌথ দরকষাকষির অবর্তমানে প্রতিষ্ঠানে বিদ্যমান ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠন বা ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠনসমূহ সমসংখ্যক শ্রমিক প্রতিনিধি মনোনীত করিবে এবং ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠনের অবর্তমানে অংশগ্রহণ কমিটি শ্রমিক প্রতিনিধি মনোনয়ন করিবে।
(৪) প্রতিষ্ঠানের মালিক বা মালিকের প্রাধিকারপ্রাপ্ত কল্যাণ কর্মকর্তা ক্যান্টিন ব্যবস্থাপনা কমিটির কার্যাদি তত্ত্বাবধান করিবেন।
খাবারের মূল্যঃ
(১) ক্যান্টিনে সরবরাহকৃত খাদ্য, পানীয় এবং অন্যান্য জিনিস মুনাফাবিহীন ভিত্তিতে বিক্রি করিতে হইবে এবং উহার মান ও মূল্য ক্যান্টিন ব্যবস্থাপনা কমিটি কর্তৃক নির্ধারিত ও অনুমোদিত হারে হইতে হইবে;
(২) ক্যান্টিনে পুষ্টি সম্মত খাবার সরবরাহ করিতে হইবে এবং ক্যান্টিন কমিটি খাবারের তালিকা নির্ধারণের ক্ষেত্রে উহার মান ও পুষ্টির বিষয় অগ্রাধিকার প্রদান করিবে;
(৩) সরবরাহকৃত খাদ্যদ্রব্য, পানীয় এবং অন্যান্য জিনিসের মূল্য-তালিকা প্রকাশ্যে ক্যান্টিনে টানাইয়া রাখিতে হইবে।
ব্যবস্থাপনা কমিটির সহিত পরামর্শঃ
মালিক বা তাহার প্রাধিকারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নি¤œবর্ণিত বিষয়ে ক্যান্টিন ব্যবস্থাপনা কমিটির পরামর্শ গ্রহণ করিবেন। যথা-
(ক) ক্যান্টিনে যেসব খাদ্যদ্রব্য সরবরাহ করা হইবে উহার মানও পরিমাণ;
(খ) খাদ্য তালিকা ও খাদ্যের মূল্য নির্ধারণ;
(গ) ক্যান্টিনে খাইবার সময়; এবং
(ঘ) ক্যান্টিনের সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য বিষয়।
ক্যান্টিনের সরঞ্জামাদিঃ
(১) ক্যান্টিন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য উহাতে পর্যাপ্ত সংখ্যক বাসন-কোসন, চামচ, আসবাবপত্র ও অন্যান্য সরঞ্জামের ব্যবস্থা থাকিতে হইবে;
(২) ক্যান্টিনে পরিবেশনকারী শ্রমিকদের জন্য বিশেষ পোশাক প্রদান করিতে হইবে এবং উহা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করিতে হইবে;
(৩) আসবাবপত্র, বাসন-কোসন এবং অন্যান্য সরঞ্জামাদি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং স্বাস্থ্য-সম্মতভাবে সংরক্ষণ করিতে হইবে।
(৪) ক্যান্টিনে সকল খাদ্যদ্রব্য এমনভাবে সংরক্ষণ ও পরিবেশন করিতে হইবে যাহাতে কোন প্রকার মশা মাছি এবং ধূলা-বালির সংস্পর্শে না আসে অথবা কোন ভাবে দূষিত হইতে না পারে;
(৫) ক্যান্টিনে সার্ভিস কাউন্টারের ব্যবস্থা করা হইলে, উহারউপরিভাগ মসৃণ এবং অভেদ্য পদার্থ দ্বারা তৈরি হইতে হইবে;
(৬) ক্যান্টিনে পর্যাপ্ত গরম পানির সরবরাহসহ বাসন-কোসন ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি ধৌত করিবার জন্য উপযুক্ত সুবিধার ব্যবস্থা করিতে হইবে।
ক্যান্টিনে খাবারের সময়সূচীঃ
ক্যান্টিন প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত এবং বিকাল ৫টা থেকে ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকবে;
শ্রমিকগণ নির্দিষ্ট সময় মোতাবেক সংশ্লিষ্ট সুপারভাইজার, এপিএম অথবা বিভাগীয় প্রধানের অনুমতি সাপেক্ষে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ক্যান্টিনে খেতে যেতে পারবেন;
সর্বোচ্চ ১০ মিনিটের মধ্যে খাবার শেষ করে কর্মস্থলে ফিরে আসতে হবে।
খাবার সরবরাহঃ
ক্যান্টিন বয় বিএসটিআই অনুমোদিত এবং খাবারের গুণগত মান সম্পর্কে জ্ঞাত ও খাবার সর্বদা টাটকা খাবার রাখা ও পরিবেশন করতে হবে।
ক্যান্টিন বয়ের দায়িত্বঃ
নিজে সর্বদা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে;
ক্যান্টিনে রক্ষিত সমস্ত খাদ্য দ্রব্য স্বাস্থ্য সম্মত উপায়ে, যেমন-হেয়ার নেট, হ্যান্ড গ্লাভস্, চিমটা ও মাস্ক ব্যবহার করে পরিবেশন করতে হবে।
ক্যান্টিন ব্যবস্থাপনাঃ
ক্যান্টিন যাতে সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয় এবং মান-সম্মত অবস্থা বজায় থাকে এবং তা যেন সব সময় শ্রমিকদের প্রয়োজন অনুযায়ী হয়, সে দৃষ্টিকোণ থেকে শ্রমিক ও মালিক পক্ষের সমন্বয়ে সর্বোচ্চ ০৫ (পাঁচ) সদস্য বিশিষ্ট একটি “ক্যান্টিন ব্যবস্থাপনা কমিটি” গঠন করা হয়েছে।
ডাইনিং হলের যেকোন একটি সুবিধাজনক স্থানে একটি র্যাক, খাদ্য সামগ্রী রাখার জন্য একটি বাক্স ব্যবস্থাদি থাকতে হবে। যেখানে প্রতিদিনের জন্য আগত খাদ্য সামগ্রী সুন্দরভাবে সাজিয়ে রাখতে হবে;
ক্যান্টিনের একটি বোর্ড থাকবে যেখানে সরবরাহকৃত খাদ্য পণ্যের নাম, নির্দিষ্ট মূল্য তালিকা, খাদ্য সামগ্রী উৎপাদনের তারিখ, মেয়াদাত্তীর্ণের তারিখ, ক্যান্টিন ব্যবস্থাপনা কমিটির পরিচিতিমূলক নাম ও ছবি প্রদর্শিত থাকবে;
খাদ্য সামগ্রীর মূল্য তালিকা প্রকাশ্যে স্থানে টাঙ্গিয়ে রাখা এবং প্রতি ৩ মাস অন্তর অন্তর মার্কেট মূল্য সাথে যাচাই-বাচাই করে পরিবর্তিত মূল্য তালিকা সংশোধন করা হবে;
ক্যান্টিনে সকল দ্রব্যাদি অলাভজনক মূল্যে বিক্রয় করতে হবে;
“ক্যান্টিন ব্যবস্থাপনা কমিটি” কর্তৃক অনুমোদিত খাদ্য দ্রব্য ব্যতীত অন্য কোন দ্রব্য ক্যান্টিনে বিক্রয় করা যাবে না;
কোন ধরনের ধূমপান, নেশা জাতীয় দ্রব্য, যেমন-বিড়ি, সিগারেট, দিয়াশলাই, পান, জর্দ্দা, তামাক, গুল, গাঁজা, ফেনসিডিল, হিরোইন, ইয়াবা, এলকোহল ইত্যাদি রাখা বা বিক্রি করা নিষিদ্ধ;
“ক্যান্টিন ব্যবস্থাপনা কমিটি” যেকোন সময় ক্যান্টিনে রক্ষিত খাবারের মান পরীক্ষা, ক্যান্টিনের পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা, ক্যান্টিন বয়ের পরিবেশন ও কার্য দক্ষতা পর্যবেক্ষণ করা;
ফ্যাক্টরীতে কর্মরত কোন শ্রমিক যদি খাদ্যের গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাহলে তা “ক্যান্টিন ব্যবস্থাপনা কমিটি”র সাথে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করে থাকেন;
“ক্যান্টিন ব্যবস্থাপনা কমিটি” কর্তৃক ক্যান্টিন বয়-এর কোন ধরনের খোস-পাচড়া, চুলকানি বা অন্য কোন চর্মরোগ আছে কি না তা নিশ্চিত করার জন্য স্কিন টেস্ট করানো হয়;
উক্ত কমিটিকে কল্যাণ কর্মকতা তদারকি করবেন।
ক্যান্টিন ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে পরামর্শ বা অভিযোগঃ
ক্যান্টিনে রক্ষিত খাদ্য সামগ্রী অথবা ক্যান্টিন ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে কারো কোন পরামর্শ বা অভিযোগ থাকলে “ক্যান্টিন ব্যবস্থাপনা কমিটি”কে জানানোর জন্য পরামর্শ দেয়া হল।
উপসংহারঃ উত্তম ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার স্বার্থে আপনাদের সহযোগিতা একান্ত কাম্য।