ভুমিকাঃ প্রতিটি শিল্প কারখানা পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রতিটি কারখানায় সরকার কর্তৃক ঘোষিত শ্রম আইন ছাড়াও কারখানা কর্তৃপক্ষের নিজস্ব নীতিমালা থাকে। এ নীতিমালায় সরকার কর্তৃক ঘোষিত সুযোগ-সুবিধাসহ আরও কিছু সুযোগ/সুবিধা দেয়া হলে তার উল্লেখ থাকে। শিল্প কারখানা পরিচালনার ক্ষেত্রে তাই একটি সুষ্ঠু নীতিমালা থাকা একান্ত আবশ্যক। সুষ্ঠু নীতিমালা না থাকলে কারখানা পরিচালনার ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি হয়। একটি বিধিবদ্ধ নিয়ম-নীতির মাধ্যমে কোন প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হলে সেখানে সুষ্ঠু শ্রম পরিবেশ বজায় থাকে, এতে উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। একই সাথে শ্রমিকদের স্বার্থও রক্ষা পায়। বর্তমান প্রেক্ষাপটে শ্রমিকদের ছুটি এবং এ বিষয়ক অন্যান্য সুযোগ সুবিধা প্রদানের বিষয়টি .................................... বিশেষ গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে।
ছুটি সংক্রান্ত নীতিমালার প্রয়োজনীয়তাঃ
.............................................-এর কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে যে, প্রতিটি মানুষেরই নিজস্ব একটি নিজস্ব সত্ত¡া আছে। মানুষ সামাজিক জীব। সমাজবদ্ধ হয়ে তাকে থাকতে হয়। এ ক্ষেত্রে কিছু সামাজিক দায়িত্ব ও তাকে পালন করতে হয়। একটি যন্ত্র যেমন চালু করা হলে তা বন্ধ না করা পর্যন্ত চলতে থাকে। মানুষ তা পারে না। তাই মানুষের কাজের একটা সীমাবদ্ধতা আছে। এখন থেকে শত বর্ষেরও অধিক সময় পূর্বে সিকাগোর ‘হে’ মার্কেটে শ্রমিকরা দৈনিক ৮ (আট) ঘন্টা কর্ম সময় দাবী করে আন্দোলন করে। এই আন্দোলনের ফলে বিশ্ব ব্যাপী দৈনিক ৮ (আট) ঘন্টা শ্রম সময় এবং বাকি সময় বিশ্রামের জন্য নির্ধারিত হয়েছে। অর্থাৎ একটি নির্দিষ্ট সময় কাজ করার পর নির্দিষ্ট সময় ছুটি বা বিশ্রাম হিসাবে শ্রমিকের স্বার্থ সংরক্ষনের বিষয়টি বহু পূর্ব থেকেই স্বীকৃত হয়ে আসছে। এই বিষয়টি আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থাসহ সকল মহলে স্বীকৃত। তাই ....................................-এর কর্তৃপক্ষ এ প্রয়োজনীয়তার কথা স্মরণ করে শ্রমিক কর্মচারীদের ছুটি সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করেছে।
সরকার কর্তৃক অনুমোদিত সকল শিল্প কারখানায় যে রূপ ছুটি প্রদানের বিধান, নিয়ম-নীতি রয়েছে .......................................-এর কর্তৃপক্ষও সে রূপ ছুটি প্রদানের নিয়ম প্রচলিত রয়েছে। শ্রমিকগণ যে সব ধরনের ছুটি ভোগ করতে পারবে তা নি¤œরূপঃ
ছুটির প্রকারভেদঃ
ক) নৈমিত্তিক ছুটি;
খ) অসুস্থতাজনিত ছুটি;
গ) মাতৃত্বকালীন ছুটি;
ঘ) সাপ্তাহিক ছুটি।
ঙ) পর্ব ছুটি;
চ) মজুরীসহ বার্ষিক ছুটি;
ছ) স্বল্পকালীন ছুটি;
জ) ক্ষতিপূরণমূলক সাপ্তাহিক ছুটি;
ক) নৈমিত্তিক ছুটিঃ (বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ সংশোধিত ২০১৩, ধারা ১১৫ অনুযায়ী)ঃ
প্রত্যেক শ্রমিক প্রতি পঞ্জিকা বৎসরে পূর্ণ মজুরীতে ১০ দিনের নৈমত্তিক ছুটি পাইবার হইবেন, এবং উক্তরূপ ছুটিকোন কারণে ভোগ না করলে উহা জমা থাকবে না এবং কোন বৎসরের ছুটি পরবর্তী বৎসরে ভোগ করা যাইবে না। কোন শ্রমিকের হঠাৎ ছুটির প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে এ ধরণের ছুটি মঞ্জুর করা হয়ে থাকে। এই ছুটি এক সাথে ০৩ দিনের বেশি মঞ্জুর করা হয় না। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ এর অধিক পরিমাণ ছুটি শ্রমিককে মঞ্জুর করে থাকে। নৈমিত্তিক ছুটির জন্য শ্রমিকেরা পূর্ণ হারে বেতন পেয়ে থাকে।
প্রত্যেক কর্মচারী/শ্রমিক বছরে পূর্ণ বেতনসহ ১০ দিনের নৈমিত্তিক ছুটি ভোগ করতে পারবেন নিম্নলিখিত শর্তের উপর-
* নৈমিত্তিক ছুটি ভোগ না করলেও পরবর্তী বছরে এই ছুটি যোগ হবে না। অর্থাৎ প্রতি বছরের ৩১শে ডিসেম্বর এর পর এই ছুটি বাতিল হয়ে যাবে;
* ছুটিকালীন সময়ের সাথে যদি কোন সাপ্তাহিক ছুটি বা কোন পর্বজনিত ছুটি পড়ে তাহলে উক্ত ছুটি মূল ছুটির অন্তর্ভুক্ত হইবে;
* নিয়োগ প্রাপ্তির পর থেকেই কর্মচারী/শ্রমিকগণ এই ছুটি ভোগ করতে পারবে;
এখানে উল্লেখ্য যে, বার্ষিক ছুটি বা অর্জিত ছুটির ন্যায় নৈমিত্তিক ছুটি বছর শেষে শ্রমিকের হিসাবে জমা থাকবে না। বছর শেষে অভোগকৃত ছুটি (যদি থাকে) আপনা-আপনি বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
খ) পীড়া/অসুস্থতাজনিত ছুটিঃ (বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ সংশোধিত ২০১৩, ধারা ১১৬ অনুযায়ী)
অসুস্থতাজনিত ছুটিঃ প্রত্যেক কর্মচারী, শ্রমিকগণ বছরে ১৪ দিন অসুস্থতা জনিত ছুটি ভোগ করতে পারবেন নি¤œœলিখিত শর্তের ভিত্তিতে-
* প্রত্যেক কর্মচারী/শ্রমিকগণ বছরে ১৪ দিন পূর্ণ বেতনসহ অসুস্থতাজনিত ছুুটি ভোগ করতে পারবেন।
* উক্ত ছুটি জমা রেখে পরবর্তী বছরে উত্তলন করা যাবে না।
* অসুস্থতাজনিত ছুটি ভোগ করতে হলে যথাপোযুক্ত ডাক্তারের সার্টিফিকেট দাখিল করতে হবে।
* যদি কোন শ্রমিকের অসুস্থ্য জনিত কারনে অসুস্থ্যজনিত ছুটি শেষ হয়ে যায় তাহলে উক্ত শ্রমিক
আবেদন ফরমের মাধ্যমে তাহার অসুস্থ্যজনিত দিন গুলি বাৎসরিক ছুটি থেকে ভোগ করতে পারবে।
গ) মাতৃত্বকালীন ছুটি (বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ সংশোধিত ২০১৩, ধারা ৪৬,৪৭ এবং বিধি ৩৮ অনুযায়ী)ঃ
কোম্পানী মহিলা কর্মীদের জন্য নিম্নলিখিত শর্তানুযায়ী মাতৃত্বকালীন ছুটি প্রদান করে থাকে।
* এই ছুটি পেতে হলে একজন মহিলা কর্মীকে ন্যুনতম ৬ মাস একটানা এই কোম্পানীতে কাজে নিয়োজিত থাকতে হবে;
* সন্তান প্রসবের ৮ সপ্তাহ পূর্বে এবং প্রসবের ৮ সপ্তাহ পরে মোট ১৬ সপ্তাহ এই ছুটি ভোগ করতে পারবেন;
* কোন মহিলার দুই অথবা ততোধিক সন্তান জীবিত থাকিলে সে মহিলা এই সুবিধা আর পাইবেন না;
* সন্তান প্রসবের ৮ সপ্তাহ পূর্বে ডাক্তারি সার্টিফিকেটসহ ছুটির আবেদন পত্র পেশ করবে এবং সন্তান প্রসবের পর ডাক্তরের সার্টিফিকেট দাখিল করতে হবে;
* প্রসূতি কল্যাণ ভাতা “প্রসূতিকালীন সুবিধা প্রদান নীতি অনুযায়ী” প্রদান করা হবে।
ঘ) সাপ্তাহিক ছুটি (বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ সংশোধিত ২০১৩, ধারা ১০৩ অনুযায়ী)ঃ
কোন শ্রমিককে শুক্রবার কাজ করতে দেয়া হবে না, যদিনা -
* উক্ত শুক্রবার এর পূর্ববর্তী বা পরবর্তী ০৩ (তিন) দিনের কোন ০১(এক) দিন তিনি ছুটি ভোগ করে থাকেন বা ছুটি ভোগ করবেন;
* কারখানর মালিক উক্ত শুক্রবারের আগে অথবা বিকল্প ছুটির দিনের আগে যেটি আগে হয়;
* সংশ্লিষ্ট শ্রমিককে শুক্রবার কাজ করানোর প্রয়োজনীয়তা এবং এর পরিবর্তে কোন দিন তাকে ছুটি দেয়া হচ্ছে তা উল্লেখপূর্বক পূর্বাহ্নে নোটিশ প্রদান করা হয়;
* উপরোক্ত মতে, একটি নোটিশ টানানো থাকে যে, ছুটির দিন এমনভাবে নির্ধারণ করা হয় না যাতে এক জন শ্রমিককে পুরো একদিনের ছুটি ভোগ ছাড়াই একটানা ১০ দিনের বেশী কাজ করতে হয়।
ঙ) পর্ব ছুটিঃ (বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ সংশোধিত ২০১৩, ধারা ১১৮ অনুযায়ী)ঃ
ক) প্রত্যেক শ্রমিককে বছরে অন্ততঃ ১১ (এগার) দিন (কোম্পানীর নীতিমালার উপর নির্ভরশীল)। পর্ব উপলক্ষ্যে মজুরীসহ অবকাশ মঞ্জুর করতে হবে। অনুরূপ পর্বের দিন ও তারিখ কারখানা মালিক নির্ধারিতব্য পদ্ধতি অনুসারে নির্দিষ্ট করবেন।
খ) পর্ব উপলক্ষ্যে যে কোন অবকাশের দিন হলে শ্রমিককে কাজ করানো যেতে পারে তবে ইহার জন্য তাহাকে ১১৮ ধারা অনুসারে এক দিনের বিকল্প ছুটি এবং দুই দিনের ক্ষতিপূরণমূলক মজুরি প্রদান করিতে হইবে।
নিচে পর্ব ছুটি-২০২৪ ইং সনের তালিকা দেওয়া হইলঃ
বিবরণ দিন
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস (২১ ফেব্রæয়ারী) ০১ দিন
মহান স্বাধীনতা দিবস (২৬শে মার্চ) ০১ দিন
মে দিবস (১লা মে) ০১ দিন
ঈদ-উল-ফিতর ০৩ দিন
জাতীয় শোক দিবস (১৫ই আগষ্ট) ০১ দিন
ঈদ-উল-আযহা ০৩ দিন
বিজয় দিবস (১৬ ডিসেম্বর) ০১ দিন
মোট ১১ দিন
চ) মজুরীসহ বার্ষিক ছুটি (বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ সংশোধিত ২০১৩, ধারা ১১৭ এবং বিধি ১০৭ অনুযায়ী)ঃ
যে সকল শ্রমিক অত্র কারখানায় বা একই মালিকানাধীন বদলীযোগ্য পদে অব্যাহতভাবে ০১ (এক) বছর চাকুরীর মেয়াদ পূর্ণ করেছে তারা পরবর্তী ১২ (বার) মাসের মধ্যে নিন্মোক্ত হারে মজুরীসহ বার্ষিক ছুটি ভোগ করতে পারবেঃ
* সকল কর্মী যাদের চাকুরীর বয়স ১ বৎসর পূর্ণ হয়েছে তারা পরবর্তী বছরে পূর্ববর্তী বছরের প্রতি ১৮ দিনের জন্য ১ দিন অর্জিত ছুটি ভোগ করার অধিকারী হবেন;
* এই ছুটি সম্পূর্ণ বা আংশিক ভোগ না করে থাকলে পরবর্তী বছরে তার পাওনা ছুটির সাথে তা যোগ করা হবে;
* একজন প্রাপ্ত বয়স্ক কর্মচারী, শ্রমিকদের অর্জিত ছুটির পরিমাণ ৪০ দিন হলে সে আর এই ছুটি জমা করতে পারবেন না;
* মঞ্জুরকৃত কোন ছুটির সময়ের মধ্যে যদি অন্য কোন ছুটি পড়ে তাহা হইলে উক্ত ছুটিও ইহার অন্তভর্‚ক্ত হইবে;
* প্রাপ্ত বয়স্ক শ্রমিক হলে পূর্ববর্তী ১২ (বার) মাসের মধ্যে প্রতি ১৮ কর্ম দিবসের জন্য ১ দিন;
* শিশু বা কিশোর শ্রমিক হলে পূর্ববর্তী ১২ (বার) মাসের মধ্যে প্রতি ১৫ কর্ম দিবসের জন্য ১ দিন।
অনুরূপ মেয়াদের মধ্যে যে অবকাশ বা ছুটি থাকবে তা আলোচ্য ছুটির অন্তর্ভূক্ত হবে। তবে যদি কোন শ্রমিক এ ছুটি আংশিক বা সম্পর্ণ ভোগ না করে তবে তাহা পরবর্তী বৎসরের পাওনা ছুটির সঙ্গে যোগ হবে। শর্ত হচ্ছে যে, প্রাপ্ত বয়স্ক শ্রমিকের ক্ষেত্রে ৪০ (চল্লিশ) দিন এবং অপ্রাপ্ত বয়স্ক শ্রমিকের ক্ষেত্রে ৬০ (ষাট) দিন পর্যন্ত অর্জিত ছুটি জমা থাকবে। উল্লেখিত পরিমাণ ছুটির পর যদি সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের আরও ছুটি পাওনা থাকে তা হলে সেটা তার মওজুদ ছুটির সাথে যুক্ত হবে না।
এ ধরনের ছুটি মঞ্জুরীর বিবরণঃ
সংশ্লিষ্ট শ্রমিক ছুটি শুরুর কমপক্ষে ০২ (দুই) দিন পূর্বে ছুটির আবেদন পত্র জমা করবে। আবেদনপত্র প্রাপ্তির পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ছুটি মঞ্জুর করে তাকে অবহিত করবে। যদি কোন বিশেষ কারণে তার আবেদন মঞ্জুর করা না যায়, সে ক্ষেত্রে বিষয়টি পূর্বাহ্নে সংশ্লিষ্ট শ্রমিককে অবহিত করা হবে। নি¤œবর্ণিত কোন কারণে চাকুরীতে ছেদ পড়লেও এ ধারার উদ্দেশ্যে একজন শ্রমিক অব্যাহত চাকুরীর মেয়াদ পূর্ণ করেছে বলে গণ্য হবে।
ক) কোন অবকাশজনিত কারণে অনুপস্থিত থাকলে;
খ) মজুরীসহ ছুটিতে থাকলে;
গ) অসুস্থতা বা দূর্ঘটনার জন্য মজুরীসহ বা মজুরী ছাড়া ছুটিতে থাকলে;
ঘ) অনধিক ১৬ সপ্তাহ মাতৃত্বকালীন ছুটিতে থাকলে।
ছ) স্বল্পকালীন ছুটিঃ
কোন শ্রমিক কারখানায় কর্মরত অবস্থায় ব্যক্তিগত কোন বিশেষ প্রয়োজনে বাহিরে যাবার প্রয়োজন হলে তাকে স্বল্পকালীন ছুটি মঞ্জুর করে থাকেন। এ ধরণের ছুটির জন্য সংশ্লিষ্ট শ্রমিক তার ম্যানেজার/ প্রোডাকশন অফিসারকে প্রয়োজনীয়তার কথা জানাবার পর ম্যানেজার/প্রোডাকশন অফিসার শ্রমিকের বাহিরে যাবার অনুমতিপত্র তৈরী ও তা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের স্বাক্ষরের ব্যবস্থা করে। এ জন্য সর্বোচ্চ ৫-৭ মিনিট সময়ের বেশি যাতে ব্যয় না হয় সেজন্য ম্যানেজার/প্রোডাকশন অফিসারকে অবহিত করা আছে। কোন শ্রমিককে স্বল্পকালীন ছুটি প্রদানের জন্য তার বেতন/জমাকৃত ছুটি বা অন্য কোন ছুটি কর্তন করা হয় না।
জ) ক্ষতিপূরণমুলক সাপ্তাহিক ছুটি (বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ সংশোধিত ২০১৩, ধারা ১০৪ অনুযায়ী)ঃ
সাধারণ কর্ম সময় হচ্ছে দৈনিক ৮ঘন্টা। প্রতি সপ্তাহে ৬ দিন কাজ করার পর প্রতিটি শ্রমিক একদিন সাপ্তাহিক ছুটি বা বিশ্রাম পায়। কোন ছুটি বা বিশ্রামের দিনে বিশেষ কারণে যদি কোন শ্রমিককে দিয়ে কাজ করানো হয় তবে তাকে বিষয়টি পূর্বেই অবহিত করা হয়। ছুটি বা বিশ্রামের দিন কাজ করার জন্য তাকে ঐ কাজের পরবর্তী তিন দিনের মধ্যে ক্ষতিপূরণমূলক সাপ্তাহিক ছুটি প্রদান করা হয়ে থাকে।
বিধি ১০১ অনুযায়ী-
১) ধারা ১০৩ মোতাবেক কোন শ্রমিককে তাহার প্রাপ্য সাপ্তাহিক ছুটি প্রদান সম্ভব না হইলে উক্ত শ্রমিককে তাহার উক্তরূপ ছুটি প্রাপ্য হইবার পরবর্তী ৩ (তিন) কর্মদিবসের মধ্যে প্রদান করিতে হইবে;
২) সাপ্তাহিক ছুটি প্রদান না করিয়া কোন শ্রমিককে একাধারে ১০(দশ) দিনের অধিক কাজ করানো যাইবে না;
৩) ধারা ১০৪ এর বিধান অনুযায়ী অব্যাহতিপ্রাপ্ত শ্রমিকগণের প্রাপ্য কোন ক্ষতিপূরণমূলক সাপ্তাহিক ছুটি প্রাপ্য হইবার পরবর্তী ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে প্রদান করিতে হইবে;
৪) শ্রমিকের ক্ষতিপূরণমূলক ছুটি অনুমোদনের সাথে সাথে প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক উক্তরূপ ছুটির একটি বিজ্ঞপ্তি ধারা ১০৪ মোতাবেক নোটিস বোর্ডে লটকাইয়া রাখিবেন;
তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত ছুটির বিজ্ঞপ্তিতে কোন পরিবর্তন আনয়নের প্রয়োজন হইলে সংশ্লিষ্ট ছুটির তারিখের অন্তত ৩ (তিন) দিন পূর্বে উহা করিতে হইবে।
ছুটি বা অবকাশকালীন মজুরীঃ
শ্রমিকেরা যখন ছুটি বা অবকাশ যাপন করে তখন তাদেরকে নি¤œ বর্ণিত নিয়মে মজুরী প্রদান করা হয়ে থাকেঃ
ক) পূর্ণ মজুরীসহ ছুটির ক্ষেত্রে পূর্ববর্তী মাসে গড়ে সে প্রতিদিন কাজের জন্য যে বেতন বা মজুরী পেয়েছে তার সমপরিমাণ মজুরী তাকে দেয়া হয়। এক্ষেত্রে ওভারটাইম ভাতা বা উৎসব ভাতা পেয়ে থাকলে তা হিসাবে গণ্য হয় না।
খ) অর্ধ বেতনে ছুটির ক্ষেত্রে প্রতিদিন কাজের জন্য অনুচ্ছেদ ‘ক’ এ উল্লেখিত বেতনের দৈনিক হিসাবে অর্ধেক মজুরী পায়।
** শ্রমিকেরা আবেদন করলে ছুটিতে গমণের সময় তাদেরকে অগ্রিম মজুরী দেওয়ার ও বিধান আছে। প্রয়োজন অনুসারে শ্রমিকেরা অগ্রিম মজুরী নিয়ে থাকে।
ছুটি বর্ধিতকরণঃ
* ছুটিতে যাওয়ার পর কর্মচারী/শ্রমিকগণ যদি ছুটির মেয়াদ বৃদ্ধি করতে চায় এবং যদি বর্ধিত মেয়াদের জন্য ছুটি পাওনা থাকে তবে তাকে ছুটির মেয়াদ শেষ হওয়ার যথেষ্ট আগে কর্তৃপক্ষের নিকট ছুটির মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আবেদনপত্র পাঠাতে হবে।
* ছুটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও যদি পরবর্তী ১০ দিনের মধ্যে কর্মচারী/শ্রমিকগণ কাজে যোগদান না করে এবং যথা সময়ে কাজে যোগদান না করার কারণ সম্পর্কে কর্র্তৃপক্ষকে সন্তুষ্টিমূলক জবাব দিতে না পারলে চাকুরীর শর্ত হারাবে।
* বিনা অনুমতিতে ১০ দিন অনুপস্থিত থাকার পর কোন কর্মী যদি কর্তৃপক্ষকে সন্তোষজনক জবাব দিতে পারে, তবে তাকে অনুমোদিত ছুটির দিন ব্যতীত বাকি দিনগুলো বিনা বেতনে ছুটি মঞ্জুর করা হবে।
ছুটি নেয়ার পদ্ধতিঃ
* ছুটি প্রার্থী ব্যক্তিকে কোম্পানীর নির্ধারিত ফরমে ছুটির জন্য আবেদন করতে হবে;
* ছুটির আবেদনপত্র পূরণ করে প্রথমে যার যার বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের কাছে জমা দিতে হবে;
* বিভাগীয় প্রধান ছুটির সুপারিশ করে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য প্রশাসন বিভাগে পাঠাবেন;
* প্রশাসন বিভাগ চূড়ান্ত অনুমোদনের যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
ছুটি অনুমোদনকারীঃ
* ব্যবস্থাপনা পরিচালক সকল বিভাগের বিভাগীয় প্রধানদের ছুটি অনুমোদন করবেন;
* প্রশাসন বিভাগের প্রধান বিভাগীয় প্রধানদের ছাড়া অন্যান্য সকলের ছুটি অনুমোদন করবেন;
* বিভাগীয় প্রধানগণ স্ব-স্ব বিভাগের ছুটি অনুমোদন করবেন।
উপসংহারঃ একটি নীতিমালার সুষ্ঠু বাস্তবায়নই হচ্ছে তার সাফল্য। .................................... তার সকল নীতিমালা কঠোরভাবে অনুসরণ করে এবং উত্তরোত্তর উৎকর্ষ সাধনে স্বচেষ্ট আছে।