ভূমিকাঃ ..........................................-এর ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ দেশের প্রচলিত শ্রম আইন অনুসারে উৎপাদনের প্রয়োজনে অতিরিক্ত সময় নির্ধারণ এবং অতিরিক্ত সময়ের মজুরী প্রদান করে থাকে। শ্রমিকদের অতিরিক্ত কাজের মজুরী সুষ্ঠু ও সঠিকভাবে প্রদানের জন্য .......................................-একটি নির্দিষ্ট নীতমালা প্রণয়ন করেছে।
.................................-এর কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত কাজের নীতিমালা বাংলাদেশ শ্রম ও শিল্প আইন অনুযায়ী অনুসরণকরা হয়ে থাকেঃ
অধিককাল কাজ পুরোপুরি কর্মীদের ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল। কোন শ্রমিককে বলপ্রয়োগ বা জোরপূর্বক অতিরিক্ত কাজ করানো যাবে না। কোন বিভাগ এ ব্যাপারে কাউকে জোর বলপ্রয়োগ বা জোরপূর্বক করতে পারবে না।
কর্মীদের যে কোন সময় অতিরিক্ত সময়ের কাজ প্রত্যাখ্যান করার অধিকার থাকবে।
আমরা অতিরিক্ত সময়ের কাজকে প্রতিদিন সর্বোচ্চ ২ (দুই) ঘন্টা সময়ে সীমাবদ্ধ রাখতে চেষ্টা করি এবং সপ্তাহে চেষ্টা করি সর্বোচ্চ ১২ (বার) ঘন্টা সময়ে সীমাবদ্ধ রাখতে।
অতিরিক্ত সময়ের কাজের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে পূর্বেই এ ব্যাপারে শ্রমিকদের অবগত করা হবে এবং যারা স্বপ্রণোদিত হয়ে কাজ করতে আগ্রহী একমাত্র তাদেরকে কর্মক্ষেত্রে রাখা হবে।
কোন আকস্মিক এবং অনিবার্য কারণে অতিরিক্ত সময়সহ সপ্তাহে ৬০ ঘন্টার বেশী কর্ম ঘন্টার প্রয়োজন দেখা দিলে এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কর্মীদের সহযোগিতার মনোভাবকে ইতিবাচকভাবে মূল্যায়ন করা হয়।
অতিরিক্ত সময়ের সকল পাওনা মূল বেতনের দ্বিগুণ হার হিসাবে পরিশোধ করা হয় এবং এই পাওনা বেতনের সাথে পরিশোধ করা হয়ে থাকে।
অতিরিক্ত কাজ করানোর জন্য শ্রমিক তালিকা প্রতিদিন বিকাল ৪ ঘটিকার মধ্যে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকদেরকে জানাতে হবে।
প্রত্যেক মাসের ৭ তারিখের মধ্যে অতিরিক্ত কাজের ভাতা পরিশোধ করতে হবে।
প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য কাজের সময়ের নোটিশ এবং উহার প্রস্তুতিঃ
১) প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে উহাতে কর্মরত প্রাপ্ত বয়ষ্ক শ্রমিকগণ কোন্ কোন্ সময় কাজ করিবেন ইহা পরিষ্কার করিয়া লিখিয়া একটি নোটিশ দ্বারা ৩৩৭ এর বিধান অনুযায়ী প্রদর্শিত হইবে এবং প্রতিষ্ঠানে শুদ্ধভাবে রক্ষিত হইবে।
২) উক্ত নোটিশ প্রদর্শিত সময় এই ধারার বিধান অনুযায়ী পূর্বেই স্থির করিতে হইবে এবং উহা এমন হইবে যেন উক্ত সময়ে কর্মরত শ্রমিকগণকে ধারা ১০০, ১০১, ১০২, ১০৩ এবং ১০৫ এর বিধানের খেলাপ করিয়া কাজ না করানো হয়।
৩) যে ক্ষেত্রে কোন প্রতিষ্ঠানের সকল প্রাপ্ত বয়ষ্ক শ্রমিককে একই সমূহে কাজ করিতে হয় সে ক্ষেত্রে মালিক উক্ত সময়সমূহ সাধারণভাবে স্থির করিবেন।
৪) যে ক্ষেত্রে কোন প্রতিষ্ঠানের সকল প্রাপ্ত বয়ষ্ক শ্রমিককে একই সময়ে কাজ করিতে হয় না, সে ক্ষেত্রে মালিক উক্তরূপ শ্রমিকগণকে তাহাদের কাজের প্রকৃতি অনুসারে বিভিন্ন দলে ভাগ করিবেন এবং প্রত্যেক দলের শ্রমিক সংখ্যা নির্ধারণ করিয়া দিবেন।
৫) যে দলকে কোন পালা পদ্ধতিতে কাজ করিতে হয় না, সে দলকে কোন সময় কাজ করিতে হইবে, তাহা মালিক নির্দিষ্ট করিয়া দিবেন।
৬) যে ক্ষেত্রে কোন দলকে পালা পদ্ধতিতে কাজ করিতে হয়, এবং রিলেগুলি অনির্দিষ্ট পর্যায়ক্রমিক পালা পরিবর্তনের অধীনে নয়, সে ক্ষেত্রে উক্তরূপ প্রত্যেক দলের রিলেকে কোন সময় কাজ করিতে হইবে তাহা মালিক নির্দিষ্ট করিয়া দিবেন।
৭) যে ক্ষেত্রে কোন দলকে পালা পদ্ধতিতে কাজ করিতে হয় এবং রিলেগুলি পূর্ব নির্দিষ্ট পর্যায়ক্রমিক পালা পরিবর্তনের অধীন সে ক্ষেত্রে মালিক পালার একটি স্কীম প্রণয়ন করিবেন। যেখানে কোন দলের রিলেকে কোন দিনের কোন সময়ে কাজ করিতে হইবে তাহা জানা যাইবে।
৮) এই ধারার অধীন কাজের সময় সম্পর্কিত কোন নোটিশের দুইটি কপি কোন প্রতিষ্ঠানের কাজ শুর হইবার পূর্বে অনুমোদনের জন্য পরিদর্শকের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে।
৯) উক্ত নোটিশের একটি কপি পরিদর্শক, উহা প্রাপ্তির এক সপ্তাহের মধ্যে, কোন সংশোধন প্রয়োজন হইলে উহা নির্দেশ করিয়া মালিকের নিকট ফেরত পাঠাইবেন এবং মালিক উক্তরূপ সংশোধন, যদি থাকে, অবিলম্বে কার্যকর করিবেন, এবং প্রতিষ্ঠানের রেকর্ডে উক্তরূপ অনুমোদন সংরক্ষণ করিবেন।
১০) কোন প্রতিষ্ঠানের কাজের পদ্ধতিতে কোন পরিবর্তনের প্রস্তাবে যদি নোটিশের পরিবর্তন প্রয়োজনীয় হইয়া পড়ে তাহা হইলে প্রস্তাবিত পরিবর্তনের পূর্বে উহার দুইটি কপি পরিদর্শকের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে এবং পরিদর্শকের পূর্ব অনুমোদন ব্যতীত উক্তরূপ কোন পরিবর্তন কার্যকর করা যাইবে না।
১১) কোন প্রতিষ্ঠানে কোন দিনের কাজের নির্ধারিত সময়ের আধা ঘন্টা পরে যদি কোন শ্রমিক কাজে হাজির হন তাহা হইলে মালিক উক্ত শ্রমিককে উক্ত দিনের কাজে নিয়োগ করিতে অস্বীকার করিতে পারিবেন। (বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬; ধারা-১১১)
দৈনিক কর্ম ঘন্টাঃ
* কোন প্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিককে দৈনিক আট ঘন্টার বেশি কাজ করানো যাবে না।
শর্ত হচ্ছে, ১০৮ ধারার বিধান সাপেক্ষে কোন কারখানায় একজন প্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিক দৈনিক ৮ ঘন্টার বেশি কাজ করতে পারেন কিন্তু দশ ঘন্টার অতিরিক্ত পারবেন না (বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬; ধারা-১০০)।
সাপ্তাহিক কর্ম ঘন্টাঃ
* কোন কারখানায় কোন প্রাপ্ত বয়স্ক শ্রমিককে সপ্তাহে ৪৮ চল্লিশ ঘন্টার বেশী কাজ করানো যাবে না বা কাজ করতে দেয়া যাবে না ।
* ১০৮ ধারার বিধান সাপেক্ষে একজন প্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিক দিনে ৮ ঘন্টার বেশী বা সপ্তাহে ৪৮ ঘন্টার বেশী কাজ করতে পারেন।
তবে শর্ত হচ্ছে, প্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিকদের কাজের মোট ঘন্টার পরিমাণ কোন সপ্তাহে ৬০ ঘন্টার বেশী বা কোন এক বছরে প্রতি সপ্তাহে গড়ে ৫৬ ঘন্টার বেশী হতে পারবে না।
আরোও শর্ত থাকে যে, বিশেষ বিশেষ শিল্পের ক্ষেত্রে, সরকার লিখিত আদেশ দ্বারা আরোপিত শর্তে, এধারার বিধান শিথিল করিতে অথবা উহা হইতে এককালীন সর্বোচ্চ ছয় মাস মেয়াদের জন্য অব্যাহতি দিতে পারিবে যদি সরকার এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, জনস্বার্থে/অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে উক্ত শিথিল/অব্যাহতি প্রয়োজনীয় (বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬; ধারা-১০২)।
* প্রতিদিন সর্বাধিক ২ ঘন্টা (সর্বাধিক ১২ ঘন্টা প্রতি সপ্তাহে) অতিরিক্ত কাজ করানো যেতে পারে।
সাপ্তাহিক ছুটিঃ
* কোন কারখানায় কোন প্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিককে শুক্রবার কাজ করতে দেয়া যাবে না, যদি না-উক্ত শুক্রবারের পূর্ববর্তী বা পরবর্তী ৩ দিনের কোন ১দিন তিনি ছুটি ভোগ করে থাকেন বা ছুটি ভোগ করবেন; এবং
উপরোক্ত মতে, কারখানার নোটিশ বোর্ডে একটি নোটিশ টানিয়ে দিতে হবে। শর্ত হচ্ছে, ছুটির দিন এমনভাবে নির্ধারণ করা যাবে না যাতে একজন শ্রমিককে পুরো ১ দিনের ছুটি ভোগ ছাড়াই একটানা ১০ দিনের বেশী কাজ করতে হয়।
* প্রদত্ত নোটিশ অনুসারে আলোচ্য শুক্রবার অথবা এর বিকল্প ছুটির যেটি আগে হয় তার কমপক্ষে ১ দিন আগে বাতিল করা যেতে পারে।
অতিরিক্ত কাজ (ওভারটাইম) ভাতাঃ
* কোন কারখানায় কোন শ্রমিক কোন দিনে ৮ ঘন্টার বেশি বা সপ্তাহে ৪৮ ঘন্টার বেশি কাজ করলে উক্ত অতিরিক্ত কাজের জন্য তিনি তার সাধারণ মজুরীর দ্বিগুণ হারে ভাতা পাবেনঃ
অতিরিক্ত ভাতার সূত্রঃ মূল মজুরী ২০৮ ২ অতিরিক্ত কর্মঘন্টা = অতিরিক্ত মজুরীর টাকা।
শর্ত হচ্ছে, এ উপধারা মোতাবেক ওভারটাইম বাবদ ভাতা হিসাব করার সময় বোনাস বা বোনাসের পরিবর্তে অন্য কিছু অতিরিক্ত পেয়ে থাকলে তা হিসাবের অন্তর্ভুক্ত হবে না।
* অতিরিক্ত কাজের সময় দুই কপি অতিরিক্ত কাজের ঘন্টা পে-¯িøপে লিপিবদ্ধ করতে হবে এবং কারখানা প্রধান বা তৎকর্তৃক অনুমোদিত কোন ব্যক্তি তাতে স্বাক্ষর করবেন এবং অতিরিক্ত সময়ের কাজ শেষ হওয়ার পর এর একটি কপি শ্রমিককে প্রদান করতে হবে।
উপসংহারঃ দৈনন্দিন ও অতিরিক্ত কাজের কর্ম ঘন্টা ঠিক রেখে প্রতিদিন উৎপাদন প্রক্রিয়া সুচারুভাবে সম্পন্ন হওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত কাজের নীতিমালা যথাযথভাবে মেনে চলতে বদ্ধ পরিকর।