ভূমিকাঃ .................................-এর কর্তৃপক্ষ বরাবর শ্রম আইনের প্রতি শ্রদ্ধা ও আনুগত্যশীল হয়ে সকল শ্রমিকের পাওনাদি পরিশোধের ব্যাপারে আন্তরিক। ................................. তৎকর্তৃক নিযুক্ত প্রত্যেক শ্রমিককে, শ্রম আইনের অধীন পাওনাদি পরিশোধ করিতে এবং কোম্পানী সকল শ্রমিকের মজুরী পরিশোধ করিবার জন্য দায়ী থাকে। চাকুরীর অবসান, ছাঁটাই, ডিসচার্জ, অপসারন, পদত্যাগ, অবসর, বরখাস্ত অথবা অন্য যেভাবেই হউক না কেন, কোম্পানী শ্রমিকের আইনানুগ পাওনাদি পরিশোধ করে থাকে।
অব্যাহতিঃ যখন কোন মালিক কর্তৃক স্থায়ী শ্রমিকের কোনরূপ অপরাধ ছাড়া তার চাকুরির সমাপ্তি ঘটানো হয় তখন তাকে অব্যাহতি বলা হয়। এটি মালিকের অধিকার, মালিক যেকোন সময় তার কারখানার স্বার্থে এবং প্রয়োজন মনে করলে শ্রমিকের প্রাপ্য টাকা পয়সা প্রদান করে যেকোন শ্রমিককে চাকুরি হইতে অব্যহতি দিতে পারে।
.................................-এ কর্মরত সকল শ্রমিকের যে সকল পাওনাদি আইন সম্মত উপায়ে পরিশোধ করে থাকে তাহা নিন্মরূপঃ
শ্রমিকের যে মজুরীকাল সর্ম্পকে তাহার মজুরী প্রদেয় হয়, সেই কাল শেষ হওয়ার পরবর্তী মাসের ৭ (সাত) কর্ম দিবসের মধ্যে তাহার মজুরী পারিশোধ করা হয়ে থাকে;
মজুরী কর্ম দিবসের মধ্যে পরিশোধ করা হয়ে থাকে;
মজুরী প্রচলিত মুদ্রায় পরিশোধ করে থাকে;
মজুরীর সাথে অতিরিক্ত কর্ম ঘন্টার ভাতাও পরবর্তী মাসের সাত কর্ম দিবসের মধ্যে পরিশোধ করে থাকে;
কোম্পানী লে-অফ করিলে আইনানুগ পদ্ধতিতে পাওনাদি পরিশোধ করিতে প্রতিশ্রæতি বদ্ধ;
কোন শ্রমিককে সাময়িক বরখাস্ত করিলে তাদেরকে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৩) এবং শ্রম বিধি মালা অনুযায়ী পাওনাদি পরিশোধ করা হয়;
যদি কোন শ্রমিক কোন মালিকের অধীন অবিচ্ছিন্নভাবে অন্তত ২ (দুই) বছরের অধিককাল চাকুরীরত থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন, তবে কোম্পানী তাহাকে শ্রম আইন অনুযায়ী মৃত্যুজনিত সুবিধা প্রদানে প্রতিশ্রুতি বদ্ধ;
প্রয়োজনের অতিরিক্ততার কারনে প্রতিষ্ঠান কোন শ্রমিককে ছাঁটাই করলে শ্রম আইন অনুযায়ী সুবিধা প্রদান করে;
প্রতিষ্ঠান যদি কোন শ্রমিককে শারিরীক ও মানসিক অক্ষমতার কারণে ডিসচার্জ করে, তাহলে তাহাকে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৩) এবং শ্রম বিধি মালা অনুযায়ী পাওনাদি পরিশোধ করে;
প্রতিষ্ঠান কোন শ্রমিককে যদি শ্রম আইন অনুযায়ী বরখাস্ত করে থাকে তবে, তাহাকে শ্রম আইন অনুযায়ী পাওনাদি পরিশোধ করে।
প্রতিষ্ঠান যদি কোন শ্রমিককে অব্যাহতি প্রদান করে তবে, বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৩) এবং শ্রম বিধি মালা অনুযায়ী ১২০ দিনের চার মাসের নোটিশ বা নোটিশ মেয়াদের জন্য মজুরী প্রদান ও অন্যান্য সুবিধা প্রদান করে;
প্রতিষ্ঠানের কোন শ্রমিক যদি চাকুরী থেকে ইস্তফা দেন এবং তাহার চাকুরীর মেয়াদ ৫ (পাঁচ) বছর হইতে ১০ (দশ) বছরের নিচে হয় বা ১০ (দশ) বছরের বেশি হয়, তবে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৩) এবং শ্রম বিধি মালা অনুযায়ী পাওনা পরিশোধ করে;
প্রতিষ্ঠানের কোন শ্রমিক যদি চাকুরী থেকে ইস্তফা দেয় এবং তাহার বার্ষিক ছুটি পাওনা থাকে, তবে প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৩) এবং শ্রম বিধি মালা অনুযায়ী পাওনাদি পরিশোধ করে;
প্রতিষ্ঠানের কোন শ্রমিকের বয়স ৬০ (ষাট) বৎসর পূর্ণ হইলে তিনি চাকুরী হইতে স্বাভাবিক অবসর গ্রহণ করিলে শ্রম আইন অনুযায়ী তাহার সকল সুবিধাদি প্রদান করে।
প্রতিষ্ঠানের কোন মহিলা কর্মী প্রসূতি কল্যাণ সুবিধা পাইবার অধিকারী হইলে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৩) এবং শ্রম বিধি মালা অনুযায়ী ১৬ সপ্তাহ মাতৃকল্যাণ ছুটি ও ঐ সময়ের জন্য আর্থিক সুবিধা প্রদান করে থাকে।
উপসংহারঃ ................................. সর্বদা শ্রম আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই অত্র কোম্পানীতে কর্মরত শ্রমিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরকে অব্যাহতি করার ক্ষেত্রে শ্রম আইনের বিধানকে অনুসরণ করে থাকে।
পদ্ধতিঃ একজন স্থায়ী শ্রমিককে মালিক অবশ্যই ১২০ দিন বা চার মাস আগে শ্রমিককে নোটিশ দিবেন অথবা আদেশটি সাথে সাথে কার্যকর করতে চাইলে নোটিশের পরিবর্তে ১২০ দিনের মজুরি দিয়ে দিবেন।
সুবিধাঃ অব্যাহতি বা টার্মিনেশনের মাধ্যমে শ্রমিকের চাকুরি অবসান করা হলে, যে দিন শ্রমিকের চাকুরি অবসান করা হয়েছে তার ৩০ কর্ম দিবসের মধ্যে শ্রমিক নিচের পাওনা পাওয়ার অধিকারী।
বকেয়া মজুরী এবং ওভারটাইমের ভাতা;
বর্তমান মাসের মজুরি এবং ওভারটাইমের ভাতা;
যদি অর্জিত ছুটি ভোগ করে না থাকে তাহলে পাওনা অর্জিত ছুটির মজুরী;
শ্রমিক যতদিন কাজ করেছে তার প্রতি পূর্ণ বছরের জন্য ৩০ দিনের মজুরী হারে ক্ষতিপুরণ অথবা গ্রাচ্যুইটি থাকলে এর মধ্যে যেটি বেশী হবে সেটি;
অব্যাহতির জন্য ১২০ দিন বা চার মাস পূর্বে যদি নোটিশ না দিয়ে থাকে তাহলে ১২০ দিন বা ৪ মাসের মজুরী;
প্রভিডেন্ট ফান্ডের বিধান থাকলে প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা।
বরখাস্ত বা ডিসমিসঃ বরখাস্ত বা ডিসমিস করা হচ্ছে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। সাধারনত অসদাচরণমূলক কাজের জন্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসাবে শ্রমিকের চাকুরির সমাপ্তি (ডিসমিস) ঘটাতে পারে।
পদ্ধতিঃ এক্ষেত্রে মালিক কর্তৃক নিচের কতিপয় পদ্ধতি অনুসরণ করবেন। যেমনঃ-
শ্রমিকের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগসমূহ লিখিতভাবে করবেন;
লিখিত অভিযোগের এক কপি শ্রমিককে দিবেন এবং জবাব দেওয়ার জন্য কমপক্ষে সাত দিন সময় দিতে হবে;
ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য পেশের সুযোগ দিবেন;
মালিক বা ম্যানেজার এরূপ আদেশ অনুমোদন করবেন।
এছাড়া অসদাচরণের দায়ে অভিযুক্ত শ্রমিককে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পর্কে তদন্ত সাপেক্ষে সাময়িক বরখাস্ত করা যেতে পারে এবং বিষয়টি কোন আদালতে বিচারাধিন না থাকলে বরখাস্তের মেয়াদ ৬০ দিনের বেশি হবে না। সাময়িক বরখাস্তকালীন সময়ে গড় মজুরী, মহার্ঘভাতা এবং এডহক বা অন্তঃবর্তিকালীন মজুরির অর্ধেক খোরাকি ভাতা হিসাবে পাবেন।
নিন্মলিখিত কারণে মালিক শ্রমিককে চাকুরি হতে বরখাস্ত করতে পারেন এবং উক্ত কাজগুলি অসদাচরণ বলে গণ্য হবেঃ
ক) উপরস্থের কোন আইন সঙ্গত বা যুক্তিসঙ্গত আদেশ মানার ক্ষেত্রে এককভাবে বা অন্যের সঙ্গে সংঘবদ্ধ হয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে অবাধ্যতা বা অমান্য করা;
খ) মালিকের ব্যবসা বা সম্পত্তি সম্পর্কে চুরি, আত্মসাৎ, প্রতারণা বা অসাধুতা;
গ) মালিকের অধীন তাঁর বা অন্য কোন শ্রমিকের চাকুরী সংক্রান্ত ব্যাপারে ঘুষ গ্রহণ বা প্রদান;
ঘ) বিনা ছুটিতে বা অভ্যাগত অনুপস্থিতি অথবা ছুটি না নিয়া এক সঙ্গে ১০ দিনের অধিক সময় অনুপস্থিতি;
ঙ) কর্মস্থলে অভ্যাসগত বিলম্বে উপস্থিতি;
চ) প্রতিষ্ঠানে প্রযোজ্য কোন আইন, বিধি বা প্রবিধানের অভ্যাসগত লংঘন;
ছ) প্রতিষ্ঠানে উচ্ছৃংখলতা বা দাঙ্গা-হাঙ্গামা, অগ্নিসংযোগ বা ভাংচুর;
জ) কাজে কর্মে অভ্যাসগত গাফিলতি;
ঝ) প্রধান পরিদর্শক কর্তৃক অনুমোদিত চাকুরী সংক্রান্ত, শৃংখলা বা আচরণসহ যেকোন বিধির অভ্যাসগত লংঘন;
ঞ) মালিকের অফিসিয়াল রেকর্ডের রদবদল, জালকরণ, অন্যায় পরিবর্তন, উহার ক্ষতিকরণ বা উহা হারাইয়া ফেলা।
শ্রমিক কর্তৃক পদত্যাগ বা রিজাইন করার নিয়মঃ
কোন স্থায়ী শ্রমিক সেচ্ছায় যদি কারখানা থেকে চাকুরী ছেড়ে চলে যেতে চায় অর্থাৎ পদত্যাগ বা রিজাইন দিতে চায় তবে তাকে অন্তত ৬০ দিন পূর্বে লিখিতভাবে প্রতিষ্ঠানের মালিককে পদত্যাগপত্র বা নোটিশ দিতে পারে। যদি নোটিশ দিতে না পারেন তবে তিনি তার মালিককে ৬০ দিনের মজুরি প্রদান করিবেন।
শ্রমিক কর্তৃক পদত্যাগ বা রিজাইন করলে শ্রমিক যে সমস্ত আর্থিক সুবিধাদি পাবেন তার বিবরণঃ
অব্যাহতি বা টার্মিনেশনের মাধ্যমে শ্রমিকের চাকুরী অবসান করা হলে যে দিন শ্রমিকের চাকুরীর অবসান করা হয়েছে তার ৩০ (ত্রিশ) কর্মদিবসের মধ্যে শ্রমিক নিচের পাওনা পেয়ে থাকেনঃ
* বকেয়া মজুরী এবং ওভারটাইমের ভাতা (যদি থাকে);
* বর্তমান মাসের মজুরী এবং ওভারটাইমের ভাতা;
* শ্রমিক যদি অর্জিত ছুটি ভোগ করে না থাকেন তাহলে পাওনা অর্জিত ছুটির মজুরী;
* শ্রমিক যতদিন কাজ করেছে তার প্রতি পূর্ণ বছরের জন্য ৩০ দিনের মজুরী হারে ক্ষতিপূরণ অথবা গ্রাচুইটি থাকলে এর মধ্যে যেটি বেশী হবে সেটি;
* অব্যাহতির জন্য ১২০ দিন বা ৪ মাস পূর্বে যদি নোটিশ না দিয়ে থাকে তাহলে ১২০ দিন বা ৪ মাসের মজুরী;
* প্রভিডেন্ট ফান্ডের বিধান থাকলে প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা (যদি থাকে)।