উদ্দেশ্যঃ .................................-এর কর্তৃপক্ষ কর্মঘন্টার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ অনুসরণ করে থাকে। শ্রম আইনের আলোকে শ্রমিক-কর্মচারীদের কর্মঘন্টা শুরু ও সমাপ্তি, অধিকাল কর্মের সময়, দৈনিক বা মধ্যাহ্ন ভোজের বিরতিকাল এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এই নীতিমালার উদ্দেশ্য হল- সংশ্লিষ্ট সকলকে কাজের সময়, বিরতি ও সাপ্তাহিক ছুটির সম্বন্ধে অবগত করা এবং তা পালন নিশ্চিত করা।
বিঃ দ্রঃ কারখানার প্রয়োজনে সরকারী নীতিমালা মেনে অতিরিক্ত কাজ করানো যেতে পারে।
দৈনিক কর্মঘন্টাঃ সাধারণত দৈনিক ৮ ঘন্টার অধিক সময় কাজ করবেন না বা তাকে দিয়ে কাজ করানো যাবে না।
তবে শর্ত থাকে যে, ধারা ১০৮ এর বিধান সাপেক্ষে একজন প্রাপ্ত বয়ষ্ক শ্রমিক দৈনিক ১০ (দশ) ঘন্টা পর্যন্ত কাজ করতে পারবেন এবং এক্ষেত্রে অধিককাল কাজের জন্য তার মূল মজুরীর দ্বিগুণ হারে ভাতা পাবেন।
অতিরিক্ত কর্মঘন্টাঃ
.................................-এর কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত কাজ করানোর নীতিমালা বাংলাদেশ শ্রম ও শিল্প আইন অনুযায়ী অনুসরণ করা হয়।
* অধিককাল কাজ পুরোপুরি কর্মীদের ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল। কোন শ্রমিককে বলপ্রয়োগে অতিরিক্ত কাজ করানো যাবে না। কোন বিভাগ এ ব্যাপারে কাউকে জোর জবরদস্তি করতে পারবে না।
* কর্মীদের যে কোন সময় অতিরিক্ত সময়ের কাজ প্রত্যাখ্যান করার অধিকার থাকবে।
* আমরা অতিরিক্ত সময়ের কাজকে প্রতিদিন সর্বোচ্চ ২ (দুই) ঘন্টা সময়ে সীমাবদ্ধ রাখতে চেষ্টা করব এবং সপ্তাহে চেষ্টা করব সর্বোচ্চ ১২ (বার) ঘন্টা সময়ে সীমাবদ্ধ রাখতে।
* অতিরিক্ত সময়ের কাজের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে পূর্বেই এ ব্যাপারে শ্রমিকদের অবগত করা হবে এবং যারা স্বপ্রণোদিত হয়ে কাজ করতে আগ্রহী একমাত্র তাদেরকে কর্মক্ষেত্রে রাখা হবে।
* কোন আকস্মিক এবং অনিবার্য কারণে অতিরিক্ত সময়সহ সপ্তাহে ৬০ ঘন্টার বেশী কর্ম ঘন্টার প্রয়োজন দেখা দিলে এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের সংগে কর্মীদের সহযোগিতার মনোভাবকে ইতিবাচক ভাবে মূল্যায়ন করা হবে।
* অতিরিক্ত সময়ের সকল পাওনা মূল বেতনের দ্বিগুণ হার হিসাবে পরিশোধ করা হবে এবং এই পাওনা বেতনের সাথে পরিশোধ করা হবে।
অতিরিক্ত ভাতা পরিশোধের সূত্রঃ মূল মজুরী ২০৮ ২ অতিরিক্ত কর্মঘন্টা = অতিরিক্ত মজুরীর টাকা।
বিশ্রাম বা আহারের জন্য বিরতিঃ
* দৈনিক ৫ (পাচ) ঘন্টার অধিক কাজ করতে বাধ্য থাকবেন না যদি না উক্ত দিনে তাকে আহার বা বিশ্রামের জন্য ৩০ মিনিট (আধা ঘন্টা) বিরতি দেওয়া হয়।
* দৈনিক ৬ (ছয়) ঘন্টার অধিক কাজ করতে বাধ্য থাকবেন না যদি না উক্ত দিনে তাকে আহার বা বিশ্রামের জন্য ১ (এক) ঘন্টা বিরতি দেওয়া হয়;
* ৮ ঘন্টার অধিক কাজ করালে ২ দফা বিরতি দিতে হবে।
সাপ্তাহিক কর্মঘন্টাঃ
* কোন প্রাপ্ত বয়ষ্ক শ্রমিক সাধারণতঃ সপ্তাহে ৪৮ (আটচল্লিশ) ঘন্টার অধিক সময় কাজ করবেন না বা তাকে দিয়ে কাজ করানো যাবে না।
* ধারা ১০৮ এর বিধান সাপেক্ষে কোন প্রাপ্ত বয়ষ্ক শ্রমিক সপ্তাহে ৪৮ ঘন্টার অধিক সময়ও কাজ করতে পারবেন।
তবে শর্ত থাকে যে, কোন সপ্তাহে উক্তরূপ কোন শ্রমিকের মোট কর্ম সময় ৬০ (ষাট) ঘন্টার অধিক হবে না এবং কোন বৎসরে ইহা গড়ে প্রতি সপ্তাহে ৫৬ (ছাপ্পান্ন) ঘন্টার বেশী হবে না।
সাপ্তাহিক ছুটি ঃ প্রতি সপ্তাহে ১ দিন (শুক্রবার) ছুটি দেওয়া হয়।
ক্ষতিপূরণমূলক সাপ্তাহিক ছুটি ঃ আইনের বিধান মোতাবেক বিধিমালা প্রণয়নের দ্বারা কোন কারখানাকে এই আইনের আওতা থেকে অব্যহতি দেয়ার ফলে কোন শ্রমিক উক্ত ধারার (১) উপধারা মোতাবেক প্রাপ্য সাপ্তাহিক ছুটি থেকে বঞ্চিত হলে যত শীঘ্র সম্ভব (পরবর্তী ৩ দিনের মধ্যে) বঞ্চিত ছুটির সমসংখ্যক ক্ষতিপূরণমূলক ছুটি মঞ্জুর করতে হবে।
বাৎসরিক কর্মঘন্টা ঃ বৎসরে গড়ে সপ্তাহে ৫৬ ঘন্টার বেশী কাজ করানো যাবে না।
মহিলা শ্রমিকের জন্য সীমিত কর্মঘন্টাঃ
কোন মহিলা শ্রমিককে তার অনুমতি ছাড়া রাত ১০ টা হতে ভোর ৬ টা পর্যন্ত কাজ করানো যাবে না।
অভার টাইম দালিলিকরণ ফ্লো-চার্টঃ
সুপারভাইজারের দায়িত্ব¡ঃ যদি কর্ম দিবস চলাকালীন সময় সুপারভাইজার যদি মনে করে অতিরিক্ত কাজ করানো দরকার আছে তাহলে সে তার ফ্লোর ইনচার্জকে জানাবে। সুপারভাইজারের চাহিদা মোতাবেক ফ্লোর ইনচার্জ যদি মনে করে অতিরিক্ত কাজ করানো দরকার তাহলে সে তার এ.পি.এম-কে জানাবে। এ.পি.এম ফ্লোরের পি.এম মহাদয়ের কাছে অতিরিক্ত কাজ করানোর জন্য অনুমতি চাইবে। পি.এম জি.এম (উৎপাদন)-এর কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে পূণরায় এ.পি.এম-কে জানাবে। তার পর এ.পি.এম ফ্লোর ইনচার্জকে যারা অতিরিক্ত কাজ করতে ইচ্ছুক তাদের নামের তালিকা দেওয়ার জন্য। ফ্লোর ইনচার্জ সুপারভাইজারকে দিয়ে ফ্লোরের শ্রমিক-কর্মচারীদের একটি অতিরিক্ত কাজের নামের তালিকা করাবে। যেখানে শ্রমিক-কর্মচারীদের সম্মতি সাপেক্ষে তালিকাটি হবে। কারণ বাংলাদেশ শ্রম আইনে আছে কোন শ্রমিক-কর্মচারীকে তাদের সম্মতি না নিয়ে অতিরিক্ত কাজ করানো যাবে না। শ্রমিক-কর্মচারীদের সম্মতি সাপেক্ষে যে অতিরিক্ত কাজের তালিকা তৈরী হবে সেই তালিকা সুপারভাইজার নিজে সই করে তার ইনচার্জ এর কাছে হস্তান্তর করবে।
ইনচার্জ-এর দ্বায়িত্বঃ ফ্লোর ইনচার্জ তার সুপারভাইজার-এর কাছ থেকে পাওয়া অতিরিক্ত কাজের তালিকাটি গ্রহণ করবে এবং তা তিনি নিজে যাচাই করে দেখবে কাউকে জোরপূর্বকভাবে অতিরিক্তি কাজ করানে াহচ্ছে কি না। এই রকম যদি কেউ থেকে থাকে তাহলে তাকে অতিরিক্ত কাজের তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। আর যদি যাচাই করে দেখা যায় অতিরিক্ত কাজের জন্য তালিকা ভুক্ত সকল শ্রমিক-কর্মচারীর সম্মতি আছে তাহলে ফ্লোর ইনচার্জ তার সই করার পর তালিকাটি তার এপি এম এর কাছে হস্তান্তর করবে।
এ.পি.এম-এর দ্বায়িত্বঃ এ.পি.এম শ্রমিক-কর্মচারীর অতিরিক্ত কাজের তালিকাটি পাওয়ার পর যত দ্রæত সম্ভব তার
পি.এম-এর কাছে হস্তান্তর করবে।
পি.এম-এর দ্বায়িত্বঃ ফ্লোরের পি এম শ্রমিক-কর্মচারীদের অতিরিক্ত কাজের তালিকাটি হাতে পাওয়ার পর তিনি তার সুপারভাইজার এবং ইনচার্জকে ডাকবেন এবং জিজ্ঞাসা করবেন এই তালিকায় যাদের নাম আছে তাদের সম্মতিক্রমে তালিকা করা হয়েছে কি না? যদি সুপারভাইজার এবং ইনচার্জ বলে হ্যাঁ সবার সম্মতিক্রমে এই অতিরিক্ত কাজের তালিকাটি করা হয়েছে তাহলে পি.এম তার নিজে সই করে বিকাল ৪.০০ ঘটিকার মধ্য জি.এম (উৎপাদন) মহাদ্বয়ের কাছ থেকে অনুমদন এনে তা এ্যাডমিন সেকশনে জমা দিবে।
এ্যাডমিন এর দ্বায়িত্বঃ এ্যাডমিন ফ্লোরের শ্রমিক-কর্মচারীদের অতিরিক্ত কাজের তালিকাটি হাতে পাওয়ার পর তা ফ্লোরে গিয়ে চেক করবে। চেক করে তার সই দিয়ে ফ্লোরের সুপারভাইজার দ্বারা টাইম সেকশনে হস্তান্তর করবে।
টাইম কিপার এর দ্বায়িত্বঃ টাইম কিপার সমস্ত অতিরিক্ত কাজের ঘন্টা টাইম কার্ডে লিখবে এবং রেজিষ্টরে সুন্দরভাবে সংরক্ষণ করবে। টাইম কার্ডে এমনভাবে সংরক্ষণ করতে হবে যাহাতে শ্রমিক-কর্মচারী সহজেই বুঝতে পারে যে তার অতিরিক্ত কাজের ঘন্টা ঠিক আছে। যদি ফ্লোরে সারা মাস অতিরিক্ত কাজ হয় তার রেকর্ড রেখে মাস শেষে বেতন শীট করার জন্য এইচ.আর এন্ড কমপ্লায়েন্স সেকশনে জমা দিবে।
এইচ আর এন্ড কমপ্লায়েন্স সেকশনের দ্বায়িত্বঃ এইচ.আর এন্ড কমপ্লায়েন্স সেকশনের দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত পে-রুল অফিসার সুন্দরভাবে অতিরিক্ত কাজের ঘন্টাসহ মাসের শেষে বেতন শীট তৈরী করবে। এবং এইচ.আর এন্ড কমপ্লায়েন্স সেকশনের অন্য অফিসার সেই অতিরিক্ত কাজের তালিকাটি সুন্দরভাবে নুন্যতম এক বছর সংগ্রহ করে রাখবে।
উপসংহারঃ .................................--এর কর্তৃপক্ষ সব সময় অতিরিক্ত কাজ করানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ শ্রম আইন মেনে চলেই আমাদের ফ্যাক্টরীতে অতিরিক্ত কাজ করানো হয় এবং তা অবশ্যই শ্রমিক-কর্মচারীদের সম্মতি ক্রমে।
.................................- কোন জোর-পূর্বক কাজে বিশ্বাসী নয় এবং জোর-পূর্বক কাজ সব সময় পরিত্যাগ করে।