নিরাপত্তা নীতিমালা
Safety Policy


ভূমিকাঃ

দৈনন্দিন কর্মকান্ডে স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ে আমরা প্রায়ই ঝুঁকির সম্মুখীন হই। কর্মক্ষেত্রে ঝুঁকির মধ্যে বিভিন্ন ধরনের আঘাতের সম্ভাবনাই বেশী থাকে। আর আঘাত প্রাপ্তির ঘটনা যে কোন সময় যে কোন অবস্থাতেই ঘটতে পারে এবং একে সম্পূর্ণ নির্মূল করতে না পারলেও যথাযথ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে কমিয়ে আনা যেতে পারে। কর্মক্ষেত্রে বেশীরভাগ দূর্ঘটনারই কারণ হচ্ছে অজ্ঞতা, অবহেলা এবং অসতর্কতা। ছোট বড় সকল আঘাতকেই সমান গুরুত্বের সাথে দেখতে হবে কারণ-আজকের ছোট সমস্যা ভবিষ্যতে বড় সমস্যার আকার ধারণ করতে পারে। যেকোন কর্মকান্ডে একজন ব্যক্তির নিরাপত্তার (Safety) ব্যাপারে যেমন সবাই সতর্ক দৃষ্টি দিয়ে থাকে। তেমনিভাবে ফ্যাক্টরীতে কর্মরত সকল শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের ব্যাপারে সরকার কর্তৃক সুনির্দিষ্ট নীতিমালা মেনে চলার জন্য সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের প্রতি নির্দেশ রয়েছে। 

উক্ত নির্দেশ বাস্তবায়নের জন্য .......................................-.-এর কর্তৃপক্ষ পরিবেশগত, ব্যক্তিগত, সমষ্টিগত যন্ত্রপাতির নিরাপদ ব্যবহার, বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা নিরাপদ রাখা এবং অগ্নি দূর্ঘটনা থেকে নিরাপদ থাকার প্রতি অধিক গুরুত্ব দেওয়ার একটি লিখিত নীতিমালা বাঞ্চনীয়।

পরিধিঃ......................................-এর কর্তৃপক্ষ যে যে বিষয়ে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা চালু রয়েছে এবং সর্বদা নিশ্চিত করা বাঞ্চনীয় তা নি¤েœ উল্লেখ করা হলঃ
    অগ্নি নিরাপত্তা (Fire Safety);
    ভূমিকম্প নিরাপত্তা (Earthquake Safety);
    বন্যা (Flood Safety);
    বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা (Electrical Safety);
    ব্যক্তিগত বা সমষ্টিগত নিরাপত্তা (Personal/Collective Safety);
    মেশিন চালনার নিরাপত্তা (Mechanical Safety);
    নিড্ল ব্যবহারের নিরাপত্তা (Needle Safety); 
    পরিবেশগত নিরাপত্তা (Environmental Safety);

 


অগ্নি নিরাপত্তা

আগুনের কারণে যে ধরনের ক্ষয়-ক্ষতি হয় তা কখনও আন্দাজ করা যায় না। অগ্নিকান্ড থেকে নিরাপত্তা থাকার দু’টো উপায় রয়েছে। যেমন-(ক) আগুনের সুত্রপাত হতে না দেওয়া; এবং (খ) অগ্নিকান্ড হলে পরিকল্পনা মোতাবেক নির্বাপণ করে ক্ষয়-ক্ষতি রোধ করা। অগ্নিকান্ড রোধ কিংবা অগ্নি নির্বাপণের জন্য নি¤েœাক্ত পদক্ষেপগুলো অত্যন্ত জরুরীঃ

অগ্নি দূর্ঘটনা প্রতিরোধকল্পে করণীয় বিষয়সমূহঃ
“অসাবধানতাই অগ্নিকান্ডের প্রধান কারণ;
এক মুহুর্তের অসাবধানতা ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের সূচনা করতে পারে”।
    সম্ভাব্য অগ্নিকান্ডের স্থানগুলো চিহ্নিত করে টিমকে প্রস্তুত রাখা;
    Fire Alarm Switch Box এর গ্লাস ঠিক আছে কিনা দেখতে হবে। এ ধরনের এলার্ম এর জন্য Tumbler Switch ব্যবহার করতে হবে এবং Switch বক্সগুলো Exit-এর নিকটবর্তী স্থানে থাকতে হবে;  


    Gong Bell ঝুলানো আছে কিনা দেখতে হবে এবং Fire Hose Cabinet ঠিক আছে কিনা অর্থাৎ ট্যাংকে পানি আছে কিনা যাতায়াতের রাস্তা পরিস্কার আছে কিনা ইত্যাদি চেক করতে হবে;
    প্রত্যেকটি মেশিনের মটরগুলিতে মটরপুলি থাকতে হবে। ইন্সপেকশনের আগের দিনই সব ঠিক করে সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় প্রধানকে রিপোর্ট করতে হবে;
    অগ্নি নির্বাপণ কমিটিকে সর্বদা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র ব্যবহার সম্বন্ধে কাজের উপযোগী করে রাখা;
    Exit Light যতক্ষণ কাজ চলে ততক্ষণ চালিয়ে রাখতে হবে;
  Emergency Light ঠিক থাকতে হবে; 
    Fire Extinguisher-গুলি পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন ও সঠিক স্থানে ও ব্যবহার উপযোগী করে রাখতে হবে। | Monthly Checking Card ঠিক আছে কিনা দেখতে হবে;  
    Fire Mark ঠিক থাকতে হবে এবং Extinguisher-এর কাছে যাওয়ার পথে কোন বাঁধা থাকতে পারবে না।
    আগুন ছোট হোক বা বড় হোক সূচনাতেই তা নিভিয়ে ফেলার চেষ্টা করতে হবে এবং অবিলম্বে নিকটবর্তী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিভাগকে সংবাদ দিতে হবে;
    কারখানা নির্মাণের সময় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিভাগ অথবা বিজিএমই’র সেইফটি সেল থেকে অগ্নি নিরাপত্তা বিষয়ে পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে;
    ক্রটিপূর্ণ বৈদ্যুতিক ব্যবস্থাপনাই কারখানায় অগ্নিকান্ডের প্রধান কারণ। সুতরাং বৈদ্যুতিক ব্যবস্থাপনায় সনদপ্রাপ্ত ইলেকট্রিশিয়ান দিয়ে নিয়মিত বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থা পরীক্ষা করে অবিলম্বে ভাঙ্গা সুইচ ও ক্রটিপূর্ণ তার পরিবর্তন করতে হবে;
    কারখানার অভ্যন্তরে ধূমপান ও রান্না পরিহার করতে হবে;
    কারখানা বন্ধের সময় কারখানার অভ্যন্তরে নিরাপত্তা লাইট ব্যতীত অন্যান্য লাইট, ফ্যান ইত্যাদি বন্ধ রাখতে হবে;
    অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রসমূহ কার্যোপযোগী আছে কি না তা পরীক্ষা করতে হবে এবং নির্দিষ্ট সময় অতিক্রান্ত হলে পরিবর্তন করতে হবে;
    মন্ত্রাণালয়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক কারখানার নির্দিষ্ট সংখ্যক কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিভাগ অথবা বিজিএমইএ’র সেইফটি সেলকে দিয়ে অগ্নি প্রতিরোধ ও অগ্নি নির্বাপণ এবং প্রাথমিক চিকিৎসা ও উদ্ধার বিষয়ক প্রশিক্ষণ গ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে;
    কারখানার শ্রমিকদের মাসে অন্ততঃ ১ (এক) বার আপদকালীন বহির্গমন মহড়া অনুশীলন করতে হবে;
    স্টোর বা বন্ডেড ওয়্যার হাউজের ভিতর বৈদ্যুতিক সংযোগ রাখা উচিত নয়;
    কারখানার বিকল্প সিঁড়ি ব্যবহারোপযোগী আছে কি না তা নিয়মিত পরীক্ষা করতে হবে এবং ব্যবহারোপযোগী করে রাখতে হবে;
    কলাপসিবল গেটের চাবি এমন একজনের কাছে রাখার দায়িত্ব দিতে হবে যিনি আন্তরিক, দায়িত্বশী ও সাহসী। চাবি সংরক্ষক কারখানা চলাকালে দায়িত্বস্থল থেকে অন্যত্র যাবেন না। যতটুকু সম্ভব কলাপসিবল গেট পরিহার করতে হবে;
    কলাপসিবল গেটের একটি বিকল্প চাবি নিকটবর্তী তলায় ফ্লোর সুপারভাইজারের কাছে রাখতে হবে;
    প্রতিটি কারখানায় নিকটবর্তী ফায়ার সার্ভিস এবং ফায়ার সার্ভিস হেড কোয়ার্টার এর টেলিফোন নম্বর (ঢাকা-৯৫৫৫৫৫৫-৭, ৯৫৫৬৭৫৪ এবং চট্টগ্রাম-০৩১-৭১৬৩২৬-৭) সংগ্রহ করে দেয়ালে টাঙ্গিয়ে রাখুন। শুধুমাত্র অগ্নি দূর্ঘটনায় সরাসরি ১৯৯ এ ফোন করুন।

অগ্নি দূর্ঘটনা থেকে বাঁচতে ব্যক্তিগত নিরাপত্তাঃ
    কারখানায় আগুন লাগলে আতঙ্কিত হয়ে ছোটাছুটি করবেন না;
    আতঙ্কিত হয়ে লাফ দিবেন না;
    ধোঁয়ায় আটকে গেলে নাকে রুমাল বা কাপড় দিয়ে ঢেকে মাখা নিচু করে অথবা হামাগুড়ি দিয়ে বের হওয়ার পথ দেখে নিন এবং আস্তে আস্তে বের হয়ে যান;
    সিঁড়ি দিয়ে সারিবদ্ধভাবে নেমে আসুন;
    কেউ যদি অসুস্থ বা আহত হয় তাকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তর করুন।

হিট ও স্মোক ডিটেক্টরঃ
অত্র কারখানায় বিভিন্ন ফ্লোরে ৩৬৪টি হিট ও স্মোক ডিটেক্টর স্থাপন করা হয়েছে। এগুলো আগুন, তাপ বা কোন জায়গায় ধোঁয়ার উৎপন্ন হলে অগ্নি নিরাপত্তা হিসাবে কাজ করবে এবং তা রিসেপশন সেন্টারে রক্ষিত ফায়ার কন্ট্রোল এলার্ম প্যানেলে সংকেত দিবে এবং সেই অনুযায়ী কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

ফায়ার এলার্ম বেলঃ
আগুনের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে বিভিন্ন ফ্লোরে ফায়ার এলার্ম বেল রাখা আছে যা রিসেপশনে ফায়ার কন্ট্রোল এলার্ম প্যানেলের সাথে সংযুক্ত। কর্তৃপক্ষের সাথে সমন্বয় পূর্বক তা ভেঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

পাবলিক এড্রেস সিস্টেম (PA System)ঃ
অত্র কারখানায় পাবলিক এড্রেস সিস্টেম বিভিন্ন ফ্লোরে জোন করে রাখা আছে যা কেবল বিনোদনের জন্যই নয় বরং নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় দ্রæত নিদের্শনা দেয়ার কাজে ব্যবহার করা যাবে।


ভূমিকম্প নিরাপত্তা

ভূমিকম্প কি?
ভূমিকম্প হলো কোন পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই আকস্মিক এবং দ্রæত কম্পন যাহা ভূতলের নিচে শিলার ভাঙ্গন ও স্থানান্তর বা জায়গা বদলের কারণে ঘটে থাকে। ভূমিকম্প যে কোন সময় যে কোন স্থানে বছরের যে কোন দিন আঘাত করতে পারে।

ভূমিকম্প হলে মনে রাখতে হবেঃ
আপনার বাড়ীর দরজা, জানালা বা বেরুবার পথ বাড়ীর অন্যান্য অংশের চেয়ে শক্তিশালী নয়। ভূমিকম্পের সময় তুলনামূলক শক্ত স্থানে অবস্থান করতে হবে।

নিরাপত্তার স্বার্থে ভূমিকম্পের সময় আপনার করণীয়ঃ 
    ভূমিকম্পের সময় আপনি বাড়ীতে, অফিসে বা কারখানায় থাকলে চেষ্টা করবেন যত কম নাড়াচড়া করা যায় ততই ভালো এবং বসে পড়–ন;
    কম্পন না থামা পর্যন্ত যতক্ষণ নিরাপদ মনে করছেন না ততক্ষণ আপনি ঘরের ভেতরে থাকুন; 
    কম্পন থেমে গেলে দ্রæত সিঁড়ি (যদি দুইবা তার অধিক ফ্লোরে অবস্থান করেন) বেয়ে নেমে পড়–ন; 
    মনে রাখবেন লিফ্ট ব্যবহার করবেন না; 
    যদি আপনি বিছানায় শুয়ে থাকেন তবে লেপ বা তোষক শরীরে জড়িয়ে গুটিশুটি বা কুন্ডলি পাকিয়ে শুয়ে থাকুন এবং মাথায় বালিশ দিয়ে ঢেকে রাখুন;
    কোন মজবুত আসবাব থাকলে শক্ত করে ধরে থাকুন;
    ঘরের কোণ এবং কলাম ও বীমের তৈরী ভবন হলে কলামের গোড়ায় আশ্রয় নিন। কেননা নির্মাণের দিক দিয়ে এই গুলো শক্ত হয়;
    গ্যাস, তেল বা বৈদ্যুতিক চুলা, বয়লার, মেশিনারীজ, জেনারেটর ইত্যাদি দ্রæততার সাথে বন্ধ করুন;
    ধ্বংশস্তুপে আটকা পড়লে চোখ, মুখ ও নাক ঢেকে রাখুন এবং জোরে আওয়াজ করে অন্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করুন।

ঘরের ভিতর থাকলে করণীয়ঃ
    যেকোন ঝাঁকুনীতে পড়ে যেতে পারে এমন লম্বা আসবাবপত্র যেমন-আলমারী, সেলফ, ফাইল কেবিনেট, রেফ্রিজারেটর ইত্যাদি থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকতে হবে;
    বিল্ডিং-এর ভিতর পিলারের কাছাকাছি জায়গা তুলনামূলকভাবে বেশি নিরাপদ;
    আশে পাশের শক্ত আসবাবপত্র (টেবিল, ডেস্ক) নীচ অবস্থান নিতে হবে;
    ভ‚মিকম্প বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত ঐ অবস্থান থেকে দু’হাত দিয়ে মাথা ঢেকে রাখতে হবে;
    যদি টেবিল/ডেস্ক সরতে থাকে তাহলে তার সঙ্গে তাল রেখে নিজেকে সরাতে হবে। কোন অবস্থাতেই উঠে দৌড়াবেন না।

ভূমিকম্পের সময় আপনি যদি রাস্তায় বা বাহিরে থাকেনঃ
    কম্পনের সময় আপনি ভবন, বিদ্যুতের খুঁটি, গাছ, সড়কের বাতির খুঁটি ধরে থাকবেন না; 
    খোলা মাঠ বা ফাঁকা জায়গায় বসে থাকুন যতক্ষণ পর্যন্ত কম্পন শেষ না হয়;
    যদি গাড়ীতে থাকেন তবে খোলা স্থানে গাড়ী পার্ক করুন;
    গাড়ীতে থাকা অবস্থায় সিট বেল্ট বেধে বসে থাকুন;
    ব্রীজ, আন্ডারপাস, ফুট ওভারব্রীজ, ফ্লাইওভার ইত্যাদি স্থান গুলো দ্রæততার সাথে ত্যাগ করুন; 
    গাড়ীতে বিদ্যুতের তার ছিড়ে পড়লে গাড়ী থেকে বের হবেন না। সাহায্যের জন্য অপেক্ষা করুন।

গাড়িতে অবস্থানকালে করণীয়ঃ
    গাড়ী ব্রেক করা যাবে না। গতি মন্থর করে সমস্ত স্থাপনা (বিল্ডিং, গাছ, ব্রীজ, ওভারপাস) থেকে নিরাপদ দূরত্বে, ফাঁকা জায়গায় অবস্থান নিতে হবে;
    ভ‚মিকম্প বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত গাড়ীতেই থাকতে হবে;
    খুব ভালভাবে সতর্কতার সাথে খেয়াল করতে হবে আশে পাশে বৈদ্যুতিক খুঁটি, ছেঁড়া তার, গ্যাস বা অনুরূপ বিপদজনক কিছু রয়েছে কিনা;
    জরুরী সম্প্রচার শোনার জন্য গাড়ীর রেডিও সচল রাখুন।

ভূমিকম্পের পর আমার করণীয় কি?
    ভূমিকম্পের পর সম্ভাব্য পূণরায় ভূমিকম্প, ভূমিধ্বস অথবা সুনামি হতে পারে; 
    যতবার ভূমিকম্প হবে ততবার বসে পড়–ন, কারণ ভূমিকম্পের পর কয়েক মিনিট, ঘন্টা, কয়েক দিন এমনকি কয়েক মাস পড়েও ভূমিকম্প হতে পারে। এখনতো ভূমিকম্প হলেই সুনামির রেড এ্যালার্ট  জারি করা হয়;
    ভাঙ্গা বস্তুর হাত থেকে রক্ষা পেতে শক্ত লম্বা প্যান্ট, ফুল হাতা শার্ট, ফুল হাতা গেঞ্জি ব্যবহার করুন; 
    ভূমিকম্পের ফলে আপনি আহত হয়েছেন কি না তা পরীক্ষা করান এবং অন্যকেও প্রাথমিক চিকিৎসা নিতে সহায়তা করুন;
    ভূমিকম্পের পরপরই আপনার ভবন, অফিস, বাড়ী ভালোভাবে পরীক্ষা করান এবং নিরাপদ ঘোষণা  না করা পর্যন্ত দূরে অবস্থান করুন।


বন্যা

বন্যার জন্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থাসমূহঃ
    বন্যার আগাম খবর এবং সর্বশেষ পরিস্থিতি জানার ব্যবস্থা করা;
    সময়মত লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা; 
    যাবতীয় জিনিসপত্র, যন্ত্রপাতি বন্যার পানির বিপদ সীমার উপরের উচ্চতায় কোন স্থানে ষ্টোর করা;
    বন্যার সময় আত্মবিশ্বাসী হয়ে কাজ করা;
    প্রত্যেক ফ্লোরে ইউনিটে পূর্বাহ্নেই উদ্ধাকারী দল চিহ্নিত করা;
    বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ।


বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা


বৈদ্যুতিক তার থেকে আগুনের সুত্রপাত হওয়া একটি স্বাভাবিক ঘটনা। কারণ যতক্ষণ ইউনিট বা ফ্লোর চালু থাকে ততক্ষণ বৈদ্যুতিক ব্যবহার অব্যাহত থাকে। তাই এ বিষয়ে যে যে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরী তা নি¤েœ উল্লেখ করা হলঃ
    কাজের শুরু বা শেষে ফ্লোরের সমস্ত বৈদ্যুতিক সংযোগ বন্ধ করে রেজিষ্টারে লিপিবদ্ধ করতে হবে;
    Boiler Room Inspection উপযোগী হতে হবে এবং ঝঃবধস লাইনে ছিদ্র বা লিকেজ থাকবে না ও ন্যাকেট পাইপ থাকবে না;
    কোথাও কোন ন্যাকেট ওয়্যার (Naked Wire) থাকতে পারবে না;


    ডিবি বোর্ডে Danger Plate লাগানো থাকবে এবং এর আশে পাশে Treatment of Electric Shock  এর Poster থাকতে হবে;
    ডিবি বোর্ডগুলি পরিস্কার, পরিচ্ছন্ন ও আশে পাশে কোন মালামাল রাখা যাবে না। বোর্ড খোলা থাকতে হবে;
   Piece Iron সকেট থেকে বিচ্ছিন্ন না করে কর্মস্থল ত্যাগ করা যাবে না;
   Piece Iron বা Vacuum Iron পুরাপুরি ঠিক থাকতে হবে এবং Iron Stand এর উপর সর্বদা রাখতে হবে;
    সকল মেশিনের মটরপুলি কভার থাকতে হবে;
    কোন মটর, ফ্যান, মেশিনের বাজে শব্দ থাকতে পারবে না;
    কোন প্রকার ভাঙ্গা বা পোড়া Plug, Socket & Switch ব্যবহার করা যাবে না; 
    টিউব লাইটের Starter সঠিকভাবে থাকতে হবে এবং সমস্ত লাইট এক সঙ্গে জ্বলে উঠবে;
    রাতের বেলায় সকল নিরাপত্তা বাতি জালিয়ে রাখতে হবে;
    মটর বা মেশিনের তারগুলি সুন্দরভাবে ড্রেসিং করে রাখতে হবে;
    একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর সমস্ত চ্যানেলগুলি পরিস্কার করতে হবে এবং রেজিষ্টারে লিপিবদ্ধ করে রাখতে হবে; 
    কোন বৈদ্যুতিক তারে আগুন ধরে গেলে কিংবা তারের কোন অংশ থেকে ধোঁয়া বের হলে কি করণীয় তা বাংলা বা ইংরেজীতে লিখে টাঙ্গিয়ে রাখতে হবে।


ব্যক্তিগত বা সমষ্টিগত নিরাপত্তা

পোশাক শিল্পে কর্মরত সকল শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাদেরকে ব্যক্তিগত নিরাপত্তার প্রতি দৃষ্টি রাখা প্রাথমিক দায়িত্ব। প্রত্যেকে সচেতন থাকলেই দলগত কিংবা সমষ্টিগত নিরাপত্তা বজায় রাখা সম্ভব। নিরাপত্তার ব্যাপারে যে সমস্ত বিষয়ে দৃষ্টি দিতে হবে তা নি¤েœ উল্লেখ করা হলঃ

    কর্মস্থলের যাবতীয় নির্দেশাবলী সর্বদা সঠিকভাবে মেনে চলা;
    কাজ শুরু করার পূর্বে ঐ মেশিনের আদর্শ পরিচালনা পদ্ধতি সঠিকভাবে জেনে নিতে হবে;
    Piece Iron এ কিংবা ফিনিশিং সেকশনে কর্মরত প্রত্যেককে কাজ শুরু করার পূর্বে এবং কাজ শেষে ইলেকট্রিশিয়ানের সাহায্য নেওয়া;
    নতুন কোন শ্রমিককে তার কাজ সম্পর্কে ভালভাবে বুঝিয়ে কাজে নিয়োজিত করতে হবে;
    যেকোন ছোঁয়াচে রোগে আক্রান্ত হলে তড়িৎ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া;
    নিষিদ্ধ থিনার বা কেমিক্যাল খোলাখোলিভাবে ব্যবহার না করা;
    প্রাথমিক চিকিৎসায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ব্যক্তি কর্তৃক ইউনিট বা লাইনের আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তিদেরকে সময় নষ্ট না করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া;
    ক্যান্টিনে খাবার শেষে বর্জ্য দ্রব্য নির্দিষ্ট ডাষ্টবিনে রাখা;
    প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত অপারেটর দিয়ে বয়লার পরিচালনা করতে হবে এবং বয়লার রুমে অননুমোদিত ব্যক্তির প্রবেশ না করা;
    কাজ শুরু করার পূর্বে Personal Protective Equipment (PPE) সর্বদা ব্যবহার নিশ্চিত করা;
    টয়লেট ব্যবহার শেষে পানি ব্যবহার কার, ফ্ল্যাশ করা এবং পানির কল (টেপ) ভালভাবে বন্ধ করা; 
    মহিলাদের জন্য রক্ষিত ঝুঁড়িতে বর্জ্য দ্রব্য রাখা কোনভাবেই কমোডে নিক্ষেপ না করা;
    টিউব লাইটের শেডের উপর ডাষ্ট (Dust) জমতে না দেওয়া। কারণ য়ে সকল স্থানের ময়লা (Dust) সহজে আগুন ধরতে সাহায্য করে;
    সে সকল স্থানে আওয়াজ (Noise) হয় সে এলাকার সব শ্রমিককে ইয়ার প্লাগ বা ইয়ার মাফ ব্যবহার করা।

যন্ত্রপাতি বা মেশিন চালনার নিরাপত্তা

যন্ত্রপাতির নিরাপত্তা (Machinary Safety)ঃ একজন শ্রমিক যতক্ষণ ইউনিটে বা ফ্লোরে থাকে, ততক্ষণ কোন না কোন মেশিনের সাথে সম্পৃক্ত থাকে। তাই মেশিন সংক্রান্ত যে যে নির্দেশ পালন করতে হবে তা নি¤েœ উল্লেখ করা হলঃ 
    ¯œ্যাপ বাটন (Snap Button) মেশিনের বেল্ট কভার (Belt Cover) টপ কভার (Top Cover) না থাকিলে মেশিন চালানো যাবে না;
    ¯œ্যাপ বাটন (Snap Button) মেশিনে প্রতি চাপের সময় আঙ্গুল নিরাপদ স্থানে আছে কি না সেই দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে;
    যে সমস্ত মেশিন প্যাডেলের সাথে চেইন দ্বারা সংযোগ থাকে, সেই সমস্ত মেশিন চেইনের পরিবর্তে সুতা, তার কিংবা রশি দ্বারা সংযোগ করে মেশিন চালানো যাবে না;
    নাট বোল্ট নেই, ঝালাই খুলে গিয়েছে কিংবা অন্য কোন কারণবশতঃ মেশিনের টেবিল ষ্ট্যান্ড নড়াচড়া করে সেই সমস্ত মেশিনে কাজ করা যাবে না;
    প্যাডেল কিংবা ষ্ট্যান্ডের মধ্যে অপারেটর (Operator) এর শরীরের অংশ ক্ষত হতে পারে এমন কোন ধারালো অবস্থা থাকবেনা;
    মেশিন চালানোর সময় মেশিন কাঁপলে কিংবা অস্বাভাবিক কোন শব্দ হলে মেশিন চালানো যাবে না;
    মেশিন চলাকালীন সময়ে কারও সাথে কথা বলা যাবে না;
    অসুস্থ শরীরে কিংবা তন্দ্রা বা ঝিমুনি আসলে মেশিন চালানো যাবে না;
    ¯œ্যাপ বাটন মেশিনে রিপিট বা ¯œ্যাপের নীচের পার্ট দেওয়ার আগে উপরের পার্ট মোল্ডে দিতে হইবে;
    মেশিন চালাবার সময় শাড়ি, ওড়না, স্যালোয়ার কামিজ যাহাতে মেশিনের ঘূর্ণায়মান অংশের সঙ্গে জড়িয়ে না যায় সেদিকে সর্বদা লক্ষ্য রাখতে হবে;
    কাজ করার সময় চুল বা খোপা বা বেনী ভালভাবে বেঁধে কাজ করতে হবে। চুল খোলা অবস্থায় কাজ করা যাবে না;
    বাটন হোল (Button Hole), বাটন ষ্টীচ (Button Stitch), ওভারলক (Overlock), বারটেক (Bartack), মেশিনে সেফটি গগলস্ (Safety Glass) থাকতে হবে অথবা গগলস্ (Goggles) ব্যবহার করতে হবে;
    ওভারলক মেশিন এর অপারেটরকে অবশ্যই মুখোশ (Mask) পরিধান করতে হবে;  
    সকল সুইং মেশিনে নিড্ল সেফটি গাইড (Needle Safety Guide) থাকতে হবে;
    কাটিং মেশিনে কাজ করিবার সময় সর্বদা মেটাল হ্যান্ড গ্যøাভস (Metal Hand Gloves) ব্যবহার করতে হবে;
    কাটিং মেশিনের Base Plate Smooth থাকতে হবে।  
    কাঁচি (Scissor) কিংবা কাটার (Cutter) কে রশি দিয়ে এমনভাবে বেঁধে রাখতে হবে যাতে পড়ে গেলে কোন ভাবেই আঘাত প্রাপ্ত না হন।


নিডেল ব্যবহারের নিরাপত্তা

পোশাক শিল্পে নিডেল ব্যবহারের নীতিমালা অত্যন্ত সু²ভাবে পালন করা হয়ে থাকে। কারণ কোন ক্রেতা (Buyer) সংস্থা কর্তৃক বাজারজাতকৃত উৎপাদিত পোশাকের গুণগত মান স্বাস্থ্য সম্মত হয়েছে কি না তা নিশ্চিত করে থাকেন। নিড্ল এর কোন অংশ পাওয়া গেলে Buyer এর বিরুদ্ধে মামলা হতে পারে, ফলে ক্রেতা ও প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান উভয়েরই ব্যবসা হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে। যার দরুন বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে বায়ার এর কাছ থেকে Children Safety সম্বন্ধে একটি শর্ত আরোপ করে থাকে যা পালন করা পোশাক প্রস্তুতকারী বা সরবরাহকারীর জন্য অত্যন্ত জরুরী। নিড্ল এর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নি¤েœাক্ত নিয়ম পালন করতে হবেঃ


    ভাঙ্গা নিডেল এর ব্যবস্থা (Administration/Management);
    ব্যবহৃত নিডেল এর সংরক্ষণ (Preservation of used Needles);

ভাঙ্গা নিডেল এর ব্যবস্থা (Administration/Management)ঃ  ইুঁবৎ-এর চাহিদা পূরণ কিংবা নিজেদের খরচ নিরাপত্তার জন্য নি¤েœাক্তভাবে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবেঃ
    নিড্ল এর নমুনা মোতাবেক সঠিক মেশিনে ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। তা না করলে ভাঙ্গার হার বেড়ে গিয়ে পোশাক প্রস্তুতের খরচ (Rate) বৃদ্ধি পাবে;
    ভাঙ্গা নিড্ল খুঁজে বের করার জন্য যাতে অধিক সময় ব্যয় করতে না হয়, সেজন্য লাইন সুপারভাইজার কিংবা তদুর্ধ কর্মকর্তাগণ এবং অপারেটরগণকে সহযোগিতা করবে;
    ইউনিট মেকানিক্সগণ প্রতিনিয়ত দৃষ্টি রাখতে হবে যাতে কেউ অনুমোদিত সাইজের নিড্ল ইচ্ছে করলেই ব্যবহার করতে না পারে;
    ভাঙ্গা নিড্ল জমা দেওয়ার সময় সম্পূর্ণ অংশটি থাকতে হবে। কোন অংশ পাওয়া না গেলে উক্ত মেশিনের আশে পাশে চুম্বক মেশিন দ্বারা খুঁজে বের করতে হবে। তারপরেও না পাওয়া গেলে, রেজিষ্টারে লিপিবদ্ধ করতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট গার্মেন্টসকে নিড্ল ডিটেক্টর মেশিন দ্বারা পরীক্ষা করাতে হবে।

ব্যবহৃত নিডেল এর সংরক্ষণ (Preservation of Used Needles)ঃ  যে সমস্ত কারণে ব্যবহৃত নিড্ল পরিবর্তন করার প্রয়োজন হয় তা নি¤েœ উল্লেখ করা হলঃ
    একই নিড্ল দীর্ঘ সময় পর্যন্ত কাজ করলে তার তীক্ষèতা (Sharpens) কমে যায় কিংবা মাথার অংশ বেঁকে যায়। এ ধরনের নিড্ল ব্যবহার করলে ওয়াশের পর কাপড়ের সুতা কেটে যেতে পারে অথবা ছিদ্র হয়ে যেতে পারে, এ জন্য নিডেল পরিবর্তন করা প্রয়োজন; 
    দীর্ঘ সময় ব্যবহারের ফলে নিড্ল এর মাথা ভোতা বা মোটা হয়ে গেলে পোশাকে মার্ক দেখা দিতে পারে। তাতে পোশাক রিজেক্ট (Reject) হওয়ার সম্ভাবনা বেশী। এ ধরনের পরিস্থিতি হওয়ার পূর্বেই নিড্ল পরিবর্তন করে তা একটি স্বচ্ছ কোটার মধ্যে রাখতে হবে। যাতে কোটা না ভেঙ্গে কেহ বের করতে না পারে; 
    কোন নতুন স্টাইলের কাজ শুরু করার পূর্বে নিড্ল পরিবর্তন করা জরুরী হয়ে পড়তে পারে। তাই উপরোক্ত নিয়মে নিড্ল পরিবর্তন করে তা সংরক্ষণ করতে হবে; 
    সর্বমোট কত মাস বা বৎসর পর্যন্ত পরিবর্তিত নিড্ল সংরক্ষণ করতে হবে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করবেন; 
    নিড্ল সংক্রান্ত নীতিমালা সঠিকভাবে মেনে চলা সকলের জন্য বাধ্যতামূলক (Mandatory)। এ ব্যাপারে আলাদাভাবে নীতিমালা সবাইকে প্রদান করা হয়েছে।
    মেটাল বা ধাতবমুক্ত পরিবেশঃ কারখানায় যেকোন উৎপাদন প্রক্রিয়ায় মেটাল বা ধাতবমুক্ত রাখার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। অত্র কারখানায় দুটি মেটাল বা ধাতব সনাক্ত করা মেশিন (Needle Detector Machine) আছে। পাশাপাশি অফিসিয়াল যেকোন কাজে মেটাল বা ধাতব (স্টেপলার পিন, আলপিন) ইত্যাদি ব্যবহার করা যাবে না


পরিবেশগত নিরাপত্তা

পোশাক শিল্পের প্রধান উৎপাদন কেন্দ্র হচ্ছে ছোট, মাঝারী কিংবা বড় ফ্যাক্টরী। উক্ত ফ্যাক্টরীতে এক নাগাড়ে ৮-১০ ঘন্টা বিরামহীনভাবে কাজ করার উপযুক্ত পরিবেশ বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরী। কাজের পরিবেশ ভাল হলে শ্রমিকদের মন-মানসিকতা ভাল থাকবে এবং উৎপাদন ভাল হবে। স্বাস্থ্য-সম্মত পরিবেশ বজায় না রাখতে পারলে শ্রমিকদের শারীরিকভাবে অসুখ হওয়ার কারণে উৎপাদন ব্যাপকভাবে ব্যাহত হতে পারে। তাই পরিবেশ বজায় রাখার জন্য নি¤েœাক্ত বিষয়গুলোর জন্য সর্বস্তরের শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাগণকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।

কর্মস্থলঃ কর্মস্থল এমন হতে হবে যাতে শ্রমিকদেরকে অত্যন্ত ভীড় বা ঘেষাঘেষি করে বসতে না হয়। কর্মস্থলে পানি কিংবা পিচ্ছিল পদার্থ যাতে না থাকে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।

টয়লেট’র মানঃ শ্রমিকদের ব্যবহারের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক টয়লেট পুরুষ ও মহিলাদের জন্য আলাদাভাবে থাকতে হবে এবং প্রতিদিন পরিস্কার রাখতে হবে। এ ব্যাপারে নি¤েœাক্ত বিষয়গুলো পরিদর্শন তালিকার মাধ্যমে পরীক্ষা করতে হবেঃ
    পানির কল সচল আছে কিনা পরীক্ষা করা;
    ভাঙ্গা পানির কল মেরামত করে পানির অপচয় রোধ করতে হবে;
    পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা ও দুর্গন্ধমুক্ত রাখা;
    পানির ব্যবস্থা থাকা;
    ফ্ল্যাশ কাজ করা;
    পানির টেপ লিক না করা;
    আলো এবং বাতাসের ব্যবস্থা থাকা;
    দরজা সঠিকভাবে বন্ধ হওয়া;
    মেয়েদের টয়লেটে ঢাকনা ওয়ালা ঝুড়ির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা;
    প্রতিটি টয়লেটে সাবান, তোয়ালে, সেন্ডেল মজুদ রাখা;
    অপ্রয়োজনীয় মালামাল না রাখা;  
    মাকড়সার জাল না থাকা; এবং 
    টয়লেট সব সময় শুকনা রাখা।

বায়ু চলাচল ও তাপমাত্রাঃ 
    প্রতিটি কর্মকক্ষে তাপমাত্রা সহনীয় পর্যায়ে রাখিতে হইবে এবং  প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি কর্মকক্ষে নির্মল বায়ু প্রবাহের সুবিধার্থে পর্যাপ্ত সংখ্যক বিপরীতমুখী জানালার ব্যবস্থা থাকিতে হইবে;
    যেখানে ভেন্টিলেটরের ব্যবস্থা রাখা সম্ভবনয় সেইখানে এক্সজস্ট ফ্যান (Exhaust Fan) স্থাপন করতে হবে; 
    প্রতিটি কর্মকক্ষে অন্তত একটি তাপপরিমাপক যন্ত্র (থার্মোমিটার) সচল অবস্থায় রাখিতে হইবে এবং উহা যথাযথ মানসম্পন্ন হইতে হইবে এবং কর্মকক্ষের দেয়ালের দৃশ্যমান স্থানে উহা স্থাপন করিতে হইবে।
    কর্মস্থলে কোনভাবেই অসহনীয় তাপমাত্রা যাতে না থাকে সেজন্য অতিরিক্ত ফ্যান বা বেøায়ারের ব্যবস্থা থাকতে হবে। 
    যেকোন পার্শ্বে রৌদ্রের আলো পড়ে তাপমাত্রা যাতে অতিমাত্রায় বৃদ্ধি না হতে পারে সে জন্য প্রয়োজনে কাপড়ের পর্দা ব্যবহার করতে হবে। 

আলোক ব্যবস্থাঃ 
    কর্মস্থলে কাজের ধরন অনুযায়ী পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করতে হবে;
    যেখানে শ্রমিকগণ কাজ করবেন সেখানে মেঝে হইতে ১.০ মিটার উচ্চতায় কমপক্ষে ৩৫০ লাক্স (Lux) আলোর ব্যবস্থা করতে হইবে।

পরিস্কার পরিচ্ছন্নতাঃ 
    কর্মস্থলে যাতে ধুলা বালি যাতে না থাকে সেজন্য পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার ব্যাপারে ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগতভাবে উদ্যোগ নিতে হবে। 
    অপ্রয়োজনীয় দ্রব্য নির্দিষ্ট স্থানে রেখে প্রতিদিন পরিস্কার করতে হবে যাতে চলাচলে কোন বিঘœ সৃষ্টি করতে না পারে। 
    দেওয়ালের কোন স্থানে Damp হয়ে গেলে যথা সময়ে চুনকাম করা।
    বাস্তবায়নের জন্য প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে বা কর্মকক্ষে উৎক্ষিপ্ত ধূলা-বালি ও ধোঁয়ার কার্যকর নির্গমনের লক্ষ্যে ‘ডাস্ট সাকার’সহ উপযুক্ত নির্গমন যন্ত্র স্থাপন করিতে হইবে এবং উহা এমনভাবে স্থাপন করিতে হইবে যেন কোনক্রমেই 
ধূলা-বালি বা ধোঁয়া কর্মকক্ষে বিস্তার করিতে না পারে।

বিশুদ্ধ খাবার পানিঃ 
    কারখানায় কর্মরত কর্মকর্তা বা কর্মচারীদেরকে সার্বক্ষণিকভাবে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করতে হবে; এবং তা পানির সুপেয়তা পরীক্ষা আইসিডিডিআরবি (ICDDRB), বুয়েট (BUET) ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (Department of Public Health & Engineering) হতে সংগ্রহ করতে হবে;
    প্রতিটি বিভাগ বা ফ্লোরে পর্যাপ্ত সংখ্যক বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা রাখতে হবে;
    প্রত্যেক শ্রমিক যাতে নিজস্ব বোতলের মাধ্যমে পানি সংগ্রহ করতে পারে তা নিশ্চিত করা;
    বেসিন, গøাস নিয়মিত পরিষ্কার করা।

শব্দ নিয়ন্ত্রণঃ  
    কারখানার যে সকল মেশিন উচ্চ শব্দ সৃষ্টি করে সেগুলো এমনভাবে স্থাপন করতে হবে যেন সেস্থানে কর্মরত বা আশে-পাশের লোকদের ক্ষতিগ্রস্থ না করতে পারে; 
    যে সকল মেশিন চালনার সময় মানব দেহের শব্দের গ্রহণযোগ্য মাত্রার (৮০ ডিবি) চেয়ে বেশী শব্দ সৃষ্টি করে, সে সকল মেশিনের অপারেটরদের উক্ত শব্দ মাত্রা প্রতিরোধকারী এয়ারম্যাফ (Ear Muff) বা এয়ার প্লাগ (Air Plug) ব্যবহার করতে হবে; 
    উক্ত মেশিন সন্নিবেশিত কারখানায় পরিদর্শনকারী দর্শণার্থী বা কর্মকর্তাগণের জন্য অতিরিক্ত আরো ৫ (পাঁচ) টি এয়ারম্যাফ (Ear Muff) বা এয়ার প্লাগ (Air Plug) সংরক্ষণ করতে হবে; 
    সকল কারখানার ফ্লোরগুলোতে কোন ভারী যন্ত্র চালনা, ব্যবহার, সরানো বা প্রতিস্থাপনের সময় খেয়াল রাখতে হবে যে, সৃষ্ট শব্দ যেন মাত্রাতিরিক্ত শব্দ দূষণ না ঘটাতে পারে;
    কাজের সময় কর্মীরা অযথা গল্প, কথাবার্তা বা চেঁচামেচি করবে না। এতে উক্ত ফ্লোরে শব্দ দূষণের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে উৎপাদন হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এ ব্যাপারে সেকশন ইনচার্জ, লাইনচীফ, সুপারভাইজারগণ প্রতিনিয়ত দৃষ্টি রাখবেন; 
    কারখানা এলাকায় যানবাহনসমূহের হর্ণ বাজানো সীমিত রাখতে হবে এবং মেইন গেটের পার্শ্ববর্তী এলাকা ব্যতিত অন্যান্য এলাকায় হর্ণ বাজানো নিষিদ্ধ; 
    একই বিল্ডিং বা ইমারতের বিভিন্ন ফ্লোরে গার্মেন্টস কারখানা ও শব্দ সৃষ্টিকারী কোন ইউনিট অবস্থান করলে সর্বদা লক্ষ্য রাখতে হবে যে, এগুলো যেন শব্দ দূষণ সৃষ্টি করে অন্যান্য কারখানার কর্মীদের কাজে কোনরূপ অসুবিধা সৃষ্টি না করতে পারে;
    কারখানার শব্দ এবং বায়বীয় বর্জ্যরে নিঃসরণ মাত্রা যথাক্রমে শব্দ দূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০০৬ এবং পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা, ১৯৯৭ এ বর্ণিত মানমাত্রার মধ্যে থাকতে হবে।

ধূমপান বা নেশা জাতীয় দ্রব্য নিষিদ্ধঃ ধূমপান বা যেকোন নেশা জাতীয় দ্রব্য স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক। ধূমপান অগ্নিকান্ডের জন্য অন্যতম কারণ। পোশাক শিল্পের জন্য এটা ক্ষতিকর। মূলতঃ পোশাক শিল্পে আমরা ফেব্রিক্স ব্যবহার করি, যা দাহ্য সহজেই পুড়তে পারে। সুতরাং ......................................এর কর্তৃপক্ষ কার্যস্থানে সকল ধরনের ধূমপান বা যেকোন নেশা জাতীয় দ্রব্য নিষিদ্ধ করেছে। আমরা নি¤েœাক্ত নীতিমালার মাধ্যমে তা পালন করে থাকি।
    ...................................... একটি ধূমপানমুক্ত পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা; 
    ফ্যাক্টরীর অভ্যন্তরে ধূমপান বা অন্য যেকোন নেশা জাতীয় দ্রব্য পান করা বা খাওয়া কঠোরভাবে নিষিদ্ধ;
    কোন শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাগণ ধূমপানের সাথে সর্¤úকিত বিষয় যেমন-বিড়ি, সিগারেট, দিয়াশলাই, তামাক, গুল ইত্যাদি নিয়ে ফ্যাক্টরীতে প্রবেশ করতে পারবে না; 
    ধূমপানের বিরুদ্ধে জনমত গড়তে কোম্পানী মাঝে মাঝে তার শ্রমিক কর্মচারীদের নিয়ে জনসচেতনতামূলক সভার আয়োজন করবে;
    ফ্যাক্টরীর অভ্যন্তরস্থ কোন জায়গায় কাউকে ধূমপান করতে দেখলে তাৎক্ষণিকভাবে তা সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় প্রধান বা ব্যবস্থাপক প্রশাসনকে জানাতে হবে।

পানি নিষ্কাশনঃ 
সুষ্ঠুভাবে পানি নিষ্কাশনের জন্য ......................................-এর কর্তৃপক্ষ নি¤œলিখিত পদক্ষেপ নিয়েছেনঃ
    কারখানার উৎপাদন প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন ইউনিট হতে সৃষ্ট তরল বর্জ্য পরিশোধনাগার (ইটিপি)-এর জন্য নির্ধারিত ড্রেনেজ লাইন ব্যতিত অন্যকোন বাইপাস লাইনের মাধ্যমে নির্গমন করা যাবে না। 
    যেকোন সময় তাৎক্ষণিক সংগৃহীত নমুনার মানমাত্রা পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা, ১৯৯৭ এ উল্লেখিত মানমাত্রার মধ্যে হতে হবে। যেকোন সময় তরল বর্জ্য পরিশোধনাগার (ইটিপি) বা এর কোন ইউনিট অকার্যকর হলে সাথে সাথে সংশ্লিষ্ট উৎপাদন ইউনিট (যেমন-ডাইং, ফিনিশিং ইত্যাদি) বন্ধ করতে হবে। 
    তরল বর্জ্য পরিশোধনাগার (ইটিপি) সংস্কার করে এর কার্যক্ষমতা সম্পন্ন নিশ্চিত হওয়া সাপেক্ষে বন্ধ ইউনিট পূণরায় চালু করা যাবে।
    কখনো স্থানীয় জনসাধারণ বা সরকারী কর্তৃপক্ষ হতে অত্র কোম্পানীর বিরুদ্ধে পানি দূষণের অভিযোগ উত্থাপিত হলে পরিচালক তা দ্রæত রোধ করার ব্যবস্থা করবেন এবং পরবর্তীতে একটি তদন্ত পর্ষদ গঠনের মাধ্যমে উহার সঠিকতা, কারণ ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
    জেনারেটর Spent Lubricating Oil এবং Oil Filter পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান ব্যতিরেকে অন্য কোন Vendor এর কাছে বিক্রয় করা যাবে না।

বিবিধঃ
অতিরিক্ত ওজনঃ
(১)    কোন প্রতিষ্ঠানের কোন পুরুষ বা মহিলাকে নি¤œবর্ণিত ওজনের অতিরিক্ত ওজন বিশিষ্ট কোন দ্রব্য, যন্ত্রপাতি, হাতিয়ার বা সরঞ্জাম কাহারো সাহায্য ব্যতীত হাতে বা মাথায় করিয়া উত্তোলন, বহন বা অপসারণের উদ্দেশ্যে নিয়োগ করা যাইবে না, যথা:
(ক) প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ     ....... ৫০ কিলোগ্রাম; এবং
(খ) প্রাপ্ত বয়স্কা মহিলা     ....... ৩০ কিলোগ্রাম।
(২)    পরিবহণের জন্য ব্যবহৃত রাস্তা অবশ্যই এমনভাবে বাঁধামুক্ত হইতে হইবে যাহাতে শ্রমিকের হোঁচট খাইবার সম্ভবনা না থাকে এবং কোন মতেই উহা পিচ্ছিল হইতে পারিবে না;

তবে শর্ত থাকে যে, যেক্ষেত্রে ওজন বহন করিয়া উপরে উঠাইতে হয় সেই ক্ষেত্রে উপরি উক্ত পরিমাণ কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ অনুযায়ী পরিদর্শকের নির্দেশ মোতাবেক কম করিতে হইবে যাহা-
ক) প্রাপ্ত বয়স‹ পুরুষের ক্ষেত্রে     ..... ৪০ কিলোগ্রাম এবং 
খ) প্রাপ্ত বয়স্কা মহিলাদের ক্ষেত্রে    ..... ২৫ কিলোগ্রামের অধিক হইবে না।

(৩)    কোন মালিকের বা প্রতিষ্ঠানের কাজে, কিশোর বা কিশোরী ও অন্তঃসত্ত¡া অবস্থায় কোন মহিলাকে কোন দ্রব্য, সরঞ্জাম বা যন্ত্রপাতি হাতে বা মাথায় করিয়া বহন, উত্তোলন বা অপসারণের জন্য নিয়োজিত করা যাইবে না।

অভ্যান্তরিণ অগ্নি মহড়া পরিচালনার শিডিউলঃ
১.    প্রতি মাসে একবার ডে ফায়ার ড্রিল পরিচালনা করা হয়।
২.    প্রতি ৩ (তিন) মাসে একবার নাইট ফায়ার ড্রিল পরিচালনা করা হয়।
৩.    প্রতি ৬ (ছয়) মাসে একবার এফএসসিডিএ থেকে ফায়ার ড্রিল পরিচালনা করা হয়।
 

 

 

rmg

Related Template

Follow us on Facebook


rmgjobs.com-Free Job Posting Website


Declaration:

RMGJobs.com is so excited to announce that, Here You get most latest update Government & Bank jobs Circular in Bangladesh. You Can also find here all types of private sector jobs circular for all sector & worker jobs circular for RMG sector. Most Common compliance issues in rmg sector of bangladesh & HR Policy Manual - Human Resource Solutions are also available here.


Related Search Tags:

নিরাপত্তা নীতিমালা, Safety Policy, Safety Policy template, Safety Policy template download, free download Safety Policy, Safety Policy template bangla, germents textile Safety Policy bangla, Safety Policy pdf, Safety Policy example, Safety Policy of a company, importance of Safety Policy, types of Safety Policy, Safety Policy sample, Safety Policy and procedures manual, Safety Policy guidelines, Safety Policy for garments, Safety Policy for textile