মূলনীতিঃ
______________________ শুরু থেকেই প্রতিশ্রুতি নিয়ে পথ চলা শুরু করে। কর্তৃপক্ষ এর প্রতিটি কারখানার উত্তরোত্তর উন্নতি সাধনের লক্ষ্যে একটি সুন্দর স্বাস্থ্যকর ও নিরাপদ কাজের পরিবেশ সৃষ্টিতে_______________-এর ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এ জন্য একটি সুষ্ঠ সুন্দর ও পরিপূর্ণ স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নীতিমালা প্রণয়ন এবং তা সঠিকভাবে কাজে পরিণত করাই মূলনীতি।
উদ্দেশ্যঃ
_____________________-এর জন্য একটি সুপরিকল্পিত বাস্তব সম্মত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নীতি লক্ষ্যকে সামনে রেখে নিম্নবর্ণিত বিষয়গুলির আলোকে স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নীতি প্রণয়নের ব্যবস্থা করা হয়।
ফ্যাক্টরীর অভ্যন্তরে এবং প্রতিটি বিভাগ স্বাস্থ্য-সম্মত কর্ম পরিবেশ তৈরি করা;
ফ্যাক্টরীর অভ্যন্তরে এবং প্রতিটি বিভাগ তার সন্নিহিত এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও দূষণমুক্ত রাখা;
ফ্যাক্টরীতে কর্মরত প্রতিটি শ্রমিক-কর্মচারীকে স্বাস্থ্য সচেতন করে গড়ে তোলা;
স্বাস্থ্য সম্পর্কিত নীতিমালা মোতাবেক সকল শ্রমিক কর্মচারীর জন্য হাসপাতাল, ডাক্তার ও প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা;
ফ্যাক্টরী ও কর্মরত সকল স্তরের শ্রমিক কর্মচারীর জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা;
অনাকাঙ্খিত বৈদ্যুতিক বা অগ্নি দূর্ঘটনা রোধে পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ প্রদান ও নিয়মিত অনুশীলন ব্যবস্থা চালু রাখা।
লক্ষ্যঃ
যেকোন দূর্ঘটনা হতে প্রতিষ্ঠানের সকল কর্মচারীকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা প্রদান এবং কর্মস্থলে একটি সুস্থ ও নিরাপদ পরিবেশের নিশ্চয়তা বিধান করাই এই নীতির লক্ষ্য। আর সেই লক্ষ্যেই একটি সুষ্ঠ ও পরিপূর্ণ স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নীতি প্রণয়ন এবং তা কার্যে পর্যবসিত করার কোন বিকল্প নেই।
অঙ্গীকারঃ
______________________-এ দূর্ঘটনামুক্ত একটি কর্ম পরিবেশ প্রদানে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা সব সময় অব্যাহত রাখবে। এছাড়া যেকোন ধরনের অনাকাঙ্খিত দূর্ঘটনা মোকাবেলায় সকল ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণেও এই প্রতিষ্ঠান অঙ্গীকারাবদ্ধ। তাছাড়া ফ্যাক্টরীতে ভালভাবে কাজ করার একটি স্বাস্থ্য-সম্মত পরিবেশ সৃষ্টি করতে __________________ আইএলও কনভেশন, ওয়ালড হেলথ এন্ড সেইটি এবং বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ (সংশোধিত-২০১৩) বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর।
স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নীতিমালা একই সূত্রে গাঁথা হলেও এর প্রকৃতি এবং কার্যক্রম অনেকটা ভিন্ন। তাই এই স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নীতিমালাটি দুইটি পর্বে উপস্থাপন করা হলঃ
ক) প্রথম পর্বঃ স্বাস্থ্য নীতিমালা; এবং খ) দ্বিতীয় পর্ব-নিরাপত্তা নীতিমালা।
স্বাস্থ্য নীতিমালা
বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ (সংশোধিত-২০১৩ইং) এর ধারা ৫১ থেকে ৬০ পর্যন্ত এবং বাংলাদেশ শ্রম বিধি-২০১৫ইং মোতাবেক বিধি ৪০ থেকে ৫২ এর মধ্যে স্বাস্থ্য রক্ষা ব্যবস্থার বিভিন্ন দিকগুলি বিশদভাবে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এছাড়াও শ্রমিকদের জন্য একটি বাস্তব সম্মত স্বাস্থ্য নীতিমালা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নিম্নে বর্ণিত বিষয়গুলির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
পরিস্কার পরিচছন্নতা (ধারা-৫১)ঃ সুষ্ঠ কাজের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য ফ্যাক্টরীর আভ্যন্তরীণ ও পারিপার্শ্বিক পরিষ্কার পরিচছন্নতা একান্ত প্রয়োজন। ফ্যাক্টরীকে সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে-
প্রতিষ্ঠানের মেঝে, কর্মকক্ষ, সিঁড়ি, যাতায়াতের পথ হইতে প্রতিদিন ঝাড়– দিয়ে ময়লা ও আবর্জনা উপযুক্ত পন্থায় অপসারণ করিতে হইবে;
প্রতিষ্ঠানের কর্মকক্ষের মেঝে সপ্তাহে অন্ততঃ একদিন ধৌত করিতে হইবে, এবং প্রয়োজনে ধৌত কাজে জীবাণু নাশক দিয়ে ধৌত করতে হবে;
প্রতিষ্ঠানের সকল আভ্যন্তরীণ দেয়াল, পার্টিশন, ছাদ, সিঁড়ি, যাতায়ত পথ-
ক) রং অথবা বার্নিশ করা থাকিলে, প্রত্যেক তিন বৎসরে অন্ততঃ একবার পূণঃ বা বার্ণিশ করিতে হইবে।
খ) রং অথবা বার্নিশ করা এবং বহির্ভাগ মসৃণ হইলে প্রতি ১৪ মাসে অন্ততঃ একবার উহা বিধি দ্বারা নির্ধারিত পন্থায় পরিষ্কার করিতে হইবে।
গ) উৎপাদন প্রক্রিয়া চলার সময় ফ্লোরের মেঝে ভিজে গেলে এবং পানি যতটুকু নিষ্কাশনযোগ্য সে পানি নিষ্কাশনের জন্য কার্যকর নিষ্কাশন ব্যবস্থা রাখা।
ঘ) অন্যান্য ক্ষেত্রে প্রতি ১৪ মাসে অন্ততঃ একবার চুনকাম বা রং করিতে হইবে। এবং
ঙ) উল্লেখিত কার্যাবলী সম্পন্ন করার তারিখ বিধি দ্বারা নির্ধারিত রেজিষ্টারে লিপিবদ্ধ করিয়া রাথিতে হইবে।
বায়ু চলাচল ব্যবস্থা ও তাপমাত্রা (ধারা-৫২)ঃ
প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি কক্ষে নির্মল বায়ু প্রবাহের জন্য পর্যাপ্ত বায়ু চলাচল ব্যবস্থা রাখিতে হইবে।
কক্ষের তাপমাত্রা এমনভাবে রাখতে হবে যাতে কর্মরত শ্রমিকদের স্বাস্থ্যের জন্য উপযুক্ত ও আরামে বা স্বাচ্ছন্দে কাজ করতে পারে।
কক্ষের দেয়াল, ছাঁদ এমনভাবে তৈরি করতে হবে যাতে তাপমাত্রা বৃদ্ধি না পায় এবং যতদূর সম্ভব কম হয়।
যেখানে বিশেষ ধরনের কাজের ফলশ্রæতিতে মাত্রাতিরিক্ত তাপ বৃদ্ধি পেতে পারে সেখানে এমন কার্যকর ও সুষ্ঠ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাতে কাজের ঘর থেকে গরম বাতাস বের হয়ে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য উপযোগী স্বাভাবিক আবহাওয়া বজায় থাকে। কারখানার জন্য পর্যাপ্ত বায়ু চলাচল ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং কারখানার প্রতি ফ্লোরে তাপমান যন্ত্র স্থাপন করা।
ধূলোবালি ও ধোঁয়া (ধারা-৫৩)ঃ
প্রতিষ্ঠানে উৎপাদন প্রক্রিয়া চলার কারণে যদি কোন ধুলা-বালি বা ধোঁয়া বা অন্য কোন দূষিত বস্তু এমন প্রকৃতির বা এমন পরিমাণে নির্গত হয় যে, উহাতে সেখানে কর্মরত শ্রমিকগণের পক্ষে স্বাস্থ্য হানির বা অস্বস্তিকর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তাহা হইলে কোন কাজের কক্ষে উহা যাহাতে জমিতে না পারে এবং শ্রমিকের প্রশ্বাসের সাথে শরীরে প্রবেশ-করিতে না পারে ইহার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে হইবে এবং এই উদ্দেশ্যে যদি কোন নির্গমন যন্ত্রপাতির প্রয়োজন হয়, তাহা হইলে উহা উক্ত ধূলা-বালি, ধোঁয়া বা অন্য দূষিত বস্তুও উৎসের যতদূর সম্ভব কাছাকাছি স্থানে স্থাপন করিতে হইবে, এবং ঐ স্থান যতদূর সম্ভব ঘিরিয়া রাখিতে হইবে।
প্রতিষ্ঠানে কোন অন্তর্দহ ইঞ্জিন চালানো যাইবে না উহার বাষ্পাদি নির্গমন পথ উম্মুক্ত বাতাসের দিকে হয়, এবং কোন অন্তর্দহ ইঞ্জিন কোন কর্ম কক্ষে চালানো যাইবে না যদি না শ্রমিকগণের স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর হইতে পারে উহা হইতে নির্গত এমন ধোঁয়া জনা না হওয়ার জন্য কার্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
বর্জ্য পদার্থ অপসারণ (ধারা-৫৪)ঃ
উৎপাদন প্রক্রিয়ার কারণে সৃষ্ট বিভিন্ন শিল্প বর্জ্য অপসারণ করার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হইবে।
কৃত্রিম আর্দ্রকরণ (ধারা-৫৫)ঃ
প্রতিষ্ঠানের বাতাসের আর্দ্রতা কৃত্রিম উপায়ে বৃদ্ধি করা, তাহা হইলে সেই উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত পানি সরকারী পানি সরবরাহ ব্যবস্থা হইতে অথবা অন্য কোন পানীয় জলের উৎস হইতে সংগ্রহ করিতে হইবে, অথবা উহা ব্যবহারের পূর্বে উপযুক্তভাবে শোধন করিতে হইবে।
অতিরিক্ত ভীড় (ধারা-৫৬)ঃ
কর্ম কক্ষে শ্রমিকগণের স্বাস্থ্য হানি হয় এই প্রকার অতিরিক্ত ভীড় করা যাইবে না।
কর্ম কক্ষে প্রত্যেক শ্রমিকের জন্য অন্ততঃ ৯.৫ কিউবিক মিটার পরিমাণ জায়গার ব্যবস্থা করিতে হইবে।
কর্ম কক্ষে সর্বোচ্চ কতজন লোক কাজ করিতে পারিবেন, তৎসম্পর্কিত একটি নোটিশ ফটকের কাছে লটকাইয়া দিতে হইবে।
তা ছাড়া প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, টেবিল ও অন্যান্য দ্রব্যাদি এমন ভাবে রাখতে হবে যেন প্রতিটি শ্রমিক প্রয়োজনীয় খোলামেলা পরিবেশে স্বাচ্ছন্দে কাজ করতে পারে।
আলোর ব্যবস্থা (ধারা-৫৭)ঃ
প্রত্যেক কারখানায় প্রতি অংশে, যেখানে শ্রমিকগণ কাজ করেন বা চলাচল করেন, সেখানে পর্যাপ্ত এবং উপযুক্ত প্রাকৃতিক অথবা কৃত্রিম আলোর ব্যবস্থা করা এবং তা সংরক্ষণ করিতে।
কারখানায় প্রতিটি কর্ম কক্ষ আলো ঢোকার জন্য ব্যবহৃত কাঁচের স্বচ্ছ জানালার ব্যবস্থা রাখা।
আলোর উৎস থেকে সরাসরি উৎসারিত চোখ ঝলসানো আলোকচ্ছটা এবং শ্রমিকের চোখের উপর চাপ পড়তে পারে বা দূর্ঘটনার কারণ হতে পারে এমন ছায়া সৃষ্টি হওয়া।
কর্ম কক্ষের বা স্থানের আলোক ব্যবস্থা মেঝ হইতে ১.০ মিটার উচ্চতায় কমপক্ষে ৩৫০ লাক্স (Lux) আলোর ব্যবস্থা থাকতে হবে।
পান করার পানি (ধারা-৫৮)ঃ
প্রত্যেক কারখানায় নিযুক্ত শ্রমিকদের ব্যবহারের জন্য সুবিধাজনক যথোপযুক্ত নির্দিষ্ট জায়গায় সর্বক্ষণ বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা করতে হবে এবং সে ব্যবস্থা চালু রাখতে হবে।
পানি সরবরাহের স্থানকে বাংলায় “পান করার পানি” কথাগুলি স্পষ্টভাবে লিখিয়া দিতে হইবে।
যে প্রতিষ্ঠানে সাধারণত ২৫০ জনের অধিক শ্রমিক কাজ করিয়া থাকেন উহার প্রতিটিতে প্রতি বৎসর ১ এপ্রিল হইতে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শ্রমিকদের ক্যান্টিন, খাবার ঘর এবং বিশ্রাম ঘরে পান করিবার জন্য যে পানি সরবরাহ করা হয় উহাপানি ঠাণ্ডাকরণ যন্ত্র (Water Cooler) অথবা অন্য কোন কার্যকর পন্থায় ঠান্ডা করিয়া সরবরাহ করিতে হইবে।
মাত্রাতিরিক্ত তাপ উদ্রেককারী যন্ত্রের সন্নিকটে কাজ করার কারণে শ্রমিকের শরীরে পানি শূণ্যতার সৃষ্টি হইলে, ঐ সকল শ্রমিকের জন্য ওরাল রিহাইড্রেশন থেরাপির ব্যবস্থা করিতে হইবে।
পান করিবার পানি সংরক্ষণের স্থানটি কোন প্রতিষ্ঠানে কোন ধৌতাগার, প্রক্ষালন কক্ষ অথবা শৌচাগার হইতে অন্যূন ৬ মিটার (২০ ফুট) দূরত্বে স্থাপন করিতে হইবে।
সরবরাহকৃত ভ‚গর্ভস্থ পানি বা অন্য কোনভাবে সরবরাহকৃ পানি বা টিউবওয়েলের পানি ব্যবহারের ক্ষেত্রে উহা আর্সেনিক, জীবানুমুক্ত ও খাবার উপযুক্ত কি না উহা অন্ততঃ বৎসরে ১বার বা পরিদর্শক কর্তৃক নির্দেশিত হইলে সরকারের “জনস্বাস্থ্য ও প্রকৌশল বিভাগ” বা সরকারের অন্য কোন প্রতিষ্ঠান বা সরকার কর্তৃক অনুমোদিত যেকোন প্রতিষ্ঠানের নিকট হইতে লিখিত প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করিতে হইবে।
শৌচাগার ও প্রক্ষালন কক্ষ (ধারা-৫৯)ঃ
প্রত্যেক কারখানায়-শ্রমিকগণের জন্য তারা কারখানায় থাকাকালীন সময়ে সহজে ব্যবহার করতে পারেন এমন সুবিধাজনক স্থানে পর্যাপ্ত পরিমাণ শৌচাগার ও প্রক্ষালন কক্ষের ব্যবস্থা রাখা।
পুরুষ এবং মহিলা শ্রমিকদের জন্য বেড়া দেয়া পৃথক পৃথক শৌচাগার ও প্রক্ষালন কক্ষের ব্যবস্থা রাখা। উপরোক্ত শৌচাগার ও প্রক্ষালন কক্ষসমূহে উপযুক্ত আলোর ব্যবস্থা এবং বায়ু চলাচল ব্যবস্থা এবং কোন শৌচাগার ও প্রক্ষালন কক্ষের মাঝখানে খালি জায়গা বা বায়ু চলাচল ব্যবস্থাসহ যাতায়াত পথ ছাড়া শ্রমিকদের কাজের ফ্লোরের সংলগ্ন না রাখা।
শৌচাগার ও প্রক্ষালন কক্ষসমূহ যথোপযুক্তভাবে স্বাস্থ্য সম্মত উপায়ে ময়লা পরিস্কারক অথবা জীবাণুনাশক অথবা উভয়টি দিয়ে সব সময় পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা।
শৌচাগার ও প্রক্ষালন কক্ষসমূহ ইট সুরকি দ্বারা তৈরী করা।
ধারা ৫৯ অনুযায়ী প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে নিম্নবর্ণিত সংখ্যক শৌচাগারের বন্দোবস্ত রাখিতে হইবে, যথা-
(ক) মহিলা শ্রমিকের ক্ষেত্রে, প্রথম ১০০ জন পর্যন্ত প্রতি ২৫ জনের জন্য ১টি করে এবং পরবর্তী প্রতি ৫০জনের জন্য ১টি করে;
(খ) পুরুষ শ্রমিকের ক্ষেত্রে, প্রম ১০০ জন পর্যন্ত প্রতি ৪০ জনের জন্য ১টি করে এবং পরবর্তী প্রতি ৬০ জনের জন্য ১টি করে।
আবর্জনা বাক্স ও পিকদানী (ধারা-৬০)ঃ
ধারা ৬০ অনুযায়ী প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে-
(ক) প্রতি ১০০ জন শ্রমিকের জন্য অন্তত একটি করিয়া পৃথক আবর্জনা ও পিকদানি বাক্স রাখিতে হইবে;
(খ) পিকদানি বালু ভর্তি থাকিতে হইবে এবং উহার উপরে বিøচিং পাউডার থাকিতে হইবে;
(গ) পিকদানিগুলি প্রতি ৭ দিন অন্তর একবার খালি করিয়া পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করিতে হইবে এবং দৈনিক অন্তত একবার উপরের এক স্তর বালি অপসারণ করিয়া পরিষ্কার করিতে হইবে;
(ঘ) আবর্জনা বাক্স প্লাস্টিকের তৈরি ও ঢাকনাসহ থাকিতে হইবে এবং উহাতে প্রতিদিন জমাকৃত আবর্জনা অপসারণ করিতে হইবে ও উভয় ক্ষেত্রে জীবাণুনাশক দ্বারা পরিষ্কার করিতে হইবে;
(ঙ) উক্ত পিকদানি ও আবর্জনা বাক্স কর্মকক্ষের দরজার সন্নিকটে স্থাপন করিতে হইবে এবং উহা এমনভাবে স্থাপন করিতে হইবে যাহাতে দুর্গন্ধ না ছড়ায় ও ময়লা আবর্জনা চোখে না পড়ে;
কোন ব্যক্তি কোন প্রতিষ্ঠানে পিকদানি ও আবর্জনা বাক্স ব্যতীত অন্য কোথাও থু থু বা আবর্জনা ফেলিবে না এবং এই বিধান সম্পর্কে নোটিস কারখানার ভিতরে উপযুক্ত স্থানে সহজে দৃষ্টিগোচর হয় এমনভাবে টাঙ্গাইয়া রাখিতে হইবে।
প্রাথমিক চিকিৎসাঃ ফ্যাক্টরীতে কর্মরত শ্রমিকের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার জন্য ১জন এমবিবিএস মেডিকেল অফিসার ও ২ মেডিকেল সহকারী এবং আলমারিতে পর্যাপ্ত ঔষধসহ একটি মেডিকেল রুম স্থাপনা করা হয়েছে। এছাড়াও প্রতি ১৫০ জন শ্রমিকের জন্য একটি করে প্রাথমিক চিকিৎসা বক্স রয়েছে এবং প্রতিটি বক্সে ঔষধ/দ্রব্যাদি মজুদ থাকবে। প্রতিটি ফাষ্ট এইড বাক্স-এ উল্লেখিত ঔষধপত্রের সাথে তাদের ব্যবহার বিধি লেখা থাকবে। প্রতিটি বাক্সের দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রাথমিক চিকিৎসায় পারদর্শী কমপক্ষে ২ জন শ্রমিকের নাম ও ছবি বাক্সের উপরে/সুবিধাজনক স্থানে প্রদর্শিত হবে। ফ্যাক্টরীতে যে কোন অনাকাঙ্খিত দূর্ঘটনায় শ্রমিকদেরকে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত শ্রমিকেরা প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করবে। প্রাথমিক চিকিৎসা বক্সে নিম্নবর্ণিত সরঞ্জামাদি সংরক্ষিত রয়েছে। যেমন-
(ক) ১২টি (০.৫ আউন্স) জীবাণুমুক্ত তুলার প্যাকেট;
(খ) ১২টি মাঝারি আকারের জীবাণুমুক্ত তুলার প্যাকেট;
(গ) ১২টি বড় আকারের জীবাণুমুক্ত তুলার প্যাকেট;
(ঘ) ২৪টি ছোট জীবাণুমুক্ত ব্যান্ডেজ;
(ঙ) পোড়ার ক্ষেত্রে ব্যবহার্য ১২টি বড় আকারের জীবাণুমুক্ত ব্যান্ডেজ;
(চ) ১২টি (৪" চওড়া) রোলার ব্যান্ডেজ;
(ছ) ১২টি (২" চওড়া) রোলার ব্যান্ডেজ;
(জ) ৬টি ত্রিকোণাকৃতি ব্যান্ডেজ;
(ঝ) টুরনিকেট (রক্তপাত বন্ধ করিবার উপকরণ);
(ঞ) শতকরা ২ ভাগ আয়োডিনের এলকোহলিক দ্রবণ ভর্তি ১টি বোতল (৪ আউন্স);
(ট) এক জোড়া কাঁচি;
(ঠ) ১টি (৪ আউন্স) রেকটিফাইড স্পিরিট ভর্তি বোতল;
(ড) ২ প্যাকেট সেইফটি পিন;
(ঢ) হাড় ভাঙ্গার ক্ষেত্রে ব্যবহার্য ১২ টি বাঁশের/কাঠের চটি;
(ণ) বেদনানাশক ও এন্টাসিড বড়ি, পোড়ার ক্ষেত্রে ব্যবহার্য মলম এবং শল্য চিকিৎসার জীবাণুনাশক দ্রব্য;
(ত) খাবার স্যালাইন প্যাকেট ১২টি; এবং
(থ) ১টি প্রাথমিক চিকিৎসার প্রচারপত্র।
হাসপাতাল সুবিধাঃ শ্রমিকদের উন্নত স্বাস্থ্য এবং কর্মক্ষেত্রে যেকোন প্রকার দুর্ঘটনা ঘটলে দ্রæত চিকিৎসার জন্য ২৪ ঘন্টা এ্যাম্বুলেন্স সুবিধা সম্বলিত নিকটস্থ হাসপাতাল (আল হিকমা স্পেশালাইজড জেনারেল হাসপাতাল, জামগড়া, আশুলিয়া, সাভার, ঢাকা)-এর সাথে চুক্তি সম্পাদন করা আছে যার ভিত্তিতে ফ্যাক্টরী থেকে প্রেরিত কোন অসুস্থ শ্রমিকের চিকিৎসা সেবা প্রদান এবং পরবর্তীতে ফ্যাক্টরী কর্তৃক যাবতীয় বিল পরিশোধ করে থাকেন।
নিরাপত্তা নীতিমালা
ফ্যাক্টরীর অভ্যন্তরে বা নিরাপদ কর্মস্থল নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ফ্যাক্টরীতে অবস্থিত যন্ত্রপাতি এবং বিশেষ করে শ্রমিকদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তার ব্যাপারটি অগ্রাধিকার যোগ্য বিষয়, এ ব্যাপারে নিম্নবর্ণিত বিষয়গুলি করণীয় বলে গণ্য করতে হবে। যেমন-
অগ্নিকান্ড থেকে নিরাপত্তাঃ
অগ্নিকান্ড থেকে নিরাপত্তার জন্য প্রতিটি কারখানায় স্বয়ং সম্পূর্ণ নীতিমালা প্রণয়ন করা আছে যা সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবহিত করতে হবে।
ফ্যাক্টরীর আয়তন অনুযায়ী প্রতি ৫৫০ বর্গফুটের জন্য একটি অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র থাকবে যেগুলো প্রতি মাসে রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে এবং ফ্যাক্টরীর লক্ষ্যণীয় জায়গায় টানানো থাকবে।
ফ্যাক্টরীর কাজ চলাকালীন কোন অবস্থাতেই ফ্যাক্টরীর নির্গমন পথ বন্ধ রাখা যাবে না।
আগুন লাগার সাথে সাথে ফায়ার এ্যালার্ম বা গং বেল বাজাতে হবে।
মাসে অন্তত একবার অগ্নি প্রতিরোধের অনুশীলনের মাধ্যমে শ্রমিকদেরকে এই অনাকাঙ্খিত দূর্যোগের মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত করতে হবে।
সকল চলাচলের রাস্তা, বর্হিগমন পথ ও লেনগুলি হলুদ ও লাল রং দিয়ে স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করতে হবে।
জরুরী বর্হিগমন পরিকল্পনা লিখিত ও স্কেচের মাধ্যমে উল্লেখ যোগ্য জায়গায় টানাতে হবে এবং সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবার সম্যক ধারনা থাকতে হবে।
বিভাগ অনুযায়ী আত্মরক্ষামূলক সরঞ্জামাদি (PPE)-এর ব্যবহারঃ
কর্মস্থলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রতিটি সেকশন/বিভাগে কাজ করার পূর্বে নি¤œলিখিত আত্মরক্ষামূলক সরঞ্জামাদি ব্যবহার নিশিত করতে হবে। যেমন-
নিটিং বিভাগ ঃ ইয়ার প্লাগ, মাস্ক, স্কার্ফ, এপ্রোণ।
ওয়াশিং বিভাগ ঃ রাবার এপ্রোণ, ইয়ার প্লাগ, গামবুট, গগলস্, হ্যান্ড গ্লাভস্, মাস্ক।
কেমিক্যাল বিভাগ ঃ রাবার এপ্রোণ, হ্যান্ড গ্লাভস, কেমিক্যাল মাস্ক, গ্লাভস ও গামবুট।
সুইং বিভাগ ঃ এপ্রোণ, রাবার ম্যাট, নিডেল গার্ড, আই গার্ড, মাস্ক, মটর পুলি কভার, গ্লাভস, মাথার স্কার্ফ।
ফিনিশিং বিভাগ ঃ এপ্রোণ, মাস্ক, স্কার্ফ, ফিঙ্গার গার্ড, গ্লাভস, গগলস ইত্যাদি।
উইন্ডিং বিভাগ ঃ এপ্রোণ, ইয়ার প্লাগ, মাস্ক ও স্কার্ফ।
লিংকিং বিভাগ ঃ এপ্রোণ, মাস্ক, স্কার্ফ।
জ্যাকার্ড বিভাগ ঃ এপ্রোণ, মাস্ক, স্কার্ফ, ইয়ার মাফ।
এমব্রয়ডারী বিভাগ ঃ এপ্রোণ, মাস্ক, স্কার্ফ, ইয়ার মাফ।
জেনারেটর রুম ঃ রাবার ম্যাট, মাস্ক, ইয়ার মাফ।
বয়লার রুম ঃ রাবার ম্যাট, মাস্ক, ইয়ার মাফ।
মেইনটেন্যান্স বিভাগ ঃ এপ্রোণ, হেলম্যাট, বেল্ট, গগলস্, গ্লাভস্, বুট, মাস্ক, ইয়ার প্লাগ, ইয়ার মাফ ইত্যাদি।
বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতিঃ
সমস্ত বৈদ্যুতিক সংযোগ নিরাপদভাবে করতে হবে।
কোথাও কোন খোলা তার, ইনসুলিশন টেপযুক্ত তার থাকবে না।
কোথাও কোন বাতি ফিউজ হলে তা সাথে সাথে বদলাতে হবে যেন আলোর স্বল্পতা না হয়।
মেইন সুইচ বোর্ডগুলি যথাযথভাবে চিহ্নিত করে সেগুলো সব সময় Accessible (সুগম) রাখতে হবে যেন প্রয়োজনের সময় ব্যবহার করতে কেউ বাধা প্রাপ্ত না হয়।
মেইন সুইচ বোর্ডের উল্লেখ যোগ্য সুইচগুলোর “ON” এবং “OFF” এর Direction মার্কিং করে রাখতে হবে।
মেশিনের সাথে সংযুক্ত তার এবং অন্যান্য বৈদ্যুতিক তার এমনভাবে বিন্যস্ত করতে হবে যেন অপারেটরদের স্বাভাবিক কাজ বাধাগ্রস্থ না হয়।
সমস্ত এ্যালার্ম সিস্টেম যথাযথভাবে চিহ্নিত করতে হবে এবং বৈদ্যুতিক সংযোগ কেটে দেয়া অবস্থায় এগুলোর বিকল্প ব্যবস্থা রাখতে হবে।
বিদ্যুৎ চলে গেলে ফ্যাক্টরীতে পর্যাপ্ত আলোর জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক Emergency Light এর ব্যবস্থা করতে হবে।
প্রতিটি বিদ্যুৎ লাইন বোর্ড অর্থাৎ MDB, SDB, Pannel Board-এর প্রতিটি লাইন অত্যন্ত সুন্দর, আলাদা, এমোনাইট শীট দ্বারা পৃথক করিতে হইবে।
প্রতিটি বিদ্যুৎ লাইন বোর্ড অর্থাৎ MDB, SDB, Pannel Board-এর ভিতরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক পর্যায়ে রাখতে হবে।
কোন ধরনের বাইপাস লাইন ও লুজ তার ব্যবহার করা যাবে না।
একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর প্রতিটি বিদ্যুৎ লাইন বোর্ড অর্থাৎ MDB, SDB, Pannel Board-এর লাইন পরিষ্কার, মেইনটেন্যান্স করতে হবে এবং রেজিষ্টার লাইন পরিষ্কার, মেইনটেন্যান্স করার তারিখ উল্লেখ করতে হবে।
প্রতিটি বিদ্যুৎ লাইন বোর্ড অর্থাৎ MDB, SDB, Pannel Board-এর নীচে রাবার ম্যাট দিতে হবে।
বৈদ্যুতিক বিপদ সম্পর্কে সতর্কতাঃ
প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ সরবরাহের লাইন এবং সকল বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি যথাযথ আকৃতির এবং পর্যাপ্ত শক্তিসম্পন্ন হইতে হইবে এবং এমনভাবে নির্মিত, সংরক্ষিত ও কার্যকর হইতে হইবে যাহাতে উহা কোন ব্যক্তির দৈহিক ঝুঁকির কারণ না হয়।
বিভিন্ন স্টোরঃ
স্টোর ফ্যাক্টরীর একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। উৎপাদনের পূর্বে বিভিন্ন এক্সসেরিজ-এর যোগান ও মজুদ করে রাখতে হয়। মালামাল এমনভাবে রাখতে হবে যাতে কম জায়গায় অধিক মালামাল সুশৃংখলভাবে রাখা যায়। যেমন-
বিভিন্ন প্রকারের সুতা, গার্মেন্টস্-এর বডি এবং ডেমেজ বডি Pallet এর উপর Stack করে রাখতে হবে। স্থপিকৃত অথবা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা যাবে না;
বায়ার অনুযায়ী এবং Style, Order ও Colour অনুযায়ী Stack করে রাখতে হবে;
ডেমেজ বডি পৃথক Stack এ রাখতে হবে। Stack গুলি ৬ ফুট পর্যন্ত উঁচু রাখতে হবে;
Stack এর সারির মাঝখানে চলাচলের রাস্তা রাখতে হবে;
প্রতিটি Stack এ Bin card থাকতে হবে। Accessories নির্ধারিত Rack এ গুছিয়ে রাখতে হবে;
প্রতিটি Rack এর মাঝখানে চলাচলের স্থান রাখতে হবে।
কোন অবস্থাতেই Aisles Mark Ges Fire Extinguisher, Fire Hose, পানির ড্রাম, ইস্কেপ প্ল্যান ইত্যাদির রাস্তা কোন মালামাল রেখে বন্ধ করা যাবে না;
অপ্রয়োজনীয় কার্টুন, প্যাকেজ সামগ্রী প্রভৃতি জমিয়ে রাখা যাবে না;
ফেব্রিক্স স্টোরে বিদ্যুৎ লাইন রাখা যাবে না;
প্রতিদিন কাজ শুরুর পূর্বে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করতে হবে।
ভবন, যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য কাঠামোর নিরাপত্তাঃ
বাস্তবায়নের সময় পরিদর্শক ভবন, পথ, যন্ত্রপাতি বা প্লান্টসহ উক্ত ধারায় উল্লিখিত বিষয়গুলি ব্যতীত কোন প্রতিষ্ঠানের কোন দেওয়াল, চিমনি, সেতু, সুড়ঙ্গ, রাস্তা, গ্যালারী, সিঁড়ি, র্যাম্প, মেঝে, প্লাটফরম, মাচা, রেলপথ বা বৈদ্যুতিক বা যান্ত্রিক পদ্ধতির যানবাহন চালানোর রাস্তা বা অন্য কোন কাঠামো, উহা স্থায়ী বা অস্থায়ী যে রকমই হউক না কেন, বিবেচনায় আনিবেন যেন ইহা মানুষের জীবন বা নিরাপত্তার জন্য বিপজ্জনক না হয়।
যন্ত্রপাতি ঘিরে রাখাঃ
উৎপাদন কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে হয়। বিভিন্ন যন্ত্রপাতি মানুষ দ্বারা চালিত। তাই তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপসমূহ গ্রহণ করতে হবে। গতি সম্পন্ন থাকার সময় এবং ব্যবহারের সময় প্রত্যেক কারখানায় নিম্নোক্ত যন্ত্রপাতিসমূহ পর্যাপ্ত নির্মাণ ব্যবস্থা দ্বারা দৃঢ়ভাবে ঘিরে রাখতে হবে। প্রধান চালিকা যন্ত্রের প্রতিটি চলমান অংশ এবং প্রধান চালিকা যন্ত্রের সাথে সংযুক্ত প্রতিটি ঘূর্ণায়মান চাকা।
ঘূর্ণায়মান যন্ত্রপাতিসমূহ নিরাপদভাবে ঘিরে রাখতে হবে।
ইলেকট্রিক জেনারেটর, মোটর ও রোটারী কনভার্টরের প্রতিটি অংশ।
যেকোন যন্ত্রপাতির প্রতিটি বিপজ্জনক অংশ।
শর্ত হচ্ছে, কোন যন্ত্রের কোন অংশ উপরোল্লিখিত বিধি মোতাবেক নিরাপদ অবস্থায় রয়েছে কিনা অথবা নিরাপদ ব্যবস্থাধীনে সংস্থাপিত হয়েছে কিনা তা নির্ণয় করার সময় সংশ্লিষ্ট যন্ত্র সঠিকভাবে চালু আছে কিনা তা বিবেচনায় আনা হবে না, বিধি মোতাবেক যন্ত্রটি চালু করা। প্রতিটি সংলগ্ন স্ক্রু, বোল্ট এবং ঘূর্ণায়মান চাকার প্রতিটি চাবি বা পিনিয়ন, শ্রমিক যার সংম্পর্শে আসার সম্ভাবনা আছে, অনুরূপ সংম্পর্শে আসা রোধ করার জন্য দৃঢ়ভাবে ঘিরে রাখা ব্যবস্থা করা।
চলমান যন্ত্রপাতিতে বা উহার নিকট কাজ করা (বিধি-৫৭)ঃ
যন্ত্রপাতি চালনা, পরীক্ষা বা মেরামতের কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের তালিকা ফরম-২৩ অনুযায়ী লিপিবদ্ধ করিয়া সংরক্ষণ করিতে হইবে।
চালু যন্ত্রপাতি পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা চালনা করা সম্পর্কে পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ না থাকিলে এবং অনুরূপ চালু যন্ত্রপাতির কাজ সংশ্লিষ্ট বিপদ-আপদ সম্পর্কে বাস্তব জ্ঞান না থাকিলে কোন ব্যক্তিকে নিয়োগ করা যাইবে না।
চলমান যন্ত্রপাতিতে কাজ করাইবার জন্য নির্দিষ্ট শ্রমিককে ঝুঁকি ভাতা প্রদান করিতে হইবে ও মালিক তাহাকে প্রয়োজনীয় আঁটসাট পোশাক ও ব্যক্তিগত নিরাপত্তা উপকরণ সরবরাহ করিবেন।
উপ-বিধি (৩) এ উল্লিখিত পোশাক হিসাবে কমপক্ষে একজোড়া মোটা সুতি কাপড়ের আঁটসাট প্যান্ট এবং আঁ টসাট হাতাকাটা জামা থাকিবে এবং নূতন পোশাক সরবরাহ করা হইলে পুরানো পোশাক বা শ্রমিকের চাকরি অবসান করা হইলে উক্ত সরবরাহকৃত পোশাক মালিককে ফেরত প্রদান করিতে হইবে।
কোন মহিলা বা শিশুকে কোন যন্ত্রের কোন অংশ চালু থাকা অবস্থায় সেখানে পরিস্কার করা, তেল লাগানো বা বিন্যস্ত করা বা সংযোজনের কাজ করতে দেয়া যাবে না।
বিপজ্জনক যন্ত্রপাতির কাজে তরুণ ব্যক্তিদের নিয়োগঃ
১৮ বৎসরের নিচে কোন ব্যক্তিকে, পর্যাপ্ত শক্তি বা অন্য যে কোনভাবে চালিত বা চালককে সংকেত দেওয়ার জন্য চালিত হউক না কেন, নিয়োগ করা যাইবে না;
যন্ত্রপাতি সংক্রান্ত দুর্ঘটনা এবং এসব দুর্ঘটনা থেকে সতর্কতা অবলম্বন সম্পর্কিত সম্পূর্ণ প্রশিক্ষণ না দেয়া পর্যন্ত কোন তরুণ শ্রমিককে কোন যন্ত্রে কাজ করতে দেয়া।
যন্ত্রের কাজ সম্পর্কে যথেষ্ট প্রশিক্ষণ না পাওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট যন্ত্রের কাজ সম্পর্কে পুরোপুরি জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কোন ব্যক্তির তত্ত¡াবধানে কাজ না করলে তাকে কাজ করতে দেয়া হয় না।
যন্ত্রপাতি স্থাপন এবং চলাচলের রাস্তাঃ
প্রতিষ্ঠানের কোন স্থানে যন্ত্রপাতি স্থাপনের ক্ষেত্রে দেওয়াল হইতে যন্ত্রের দূরত্ব কমপক্ষে ১ মিটার বা (৩৯ ইঞ্চি) হইতে হইবে এবং স্থাপিত যন্ত্র বা যন্ত্রসারির পাশে কমপক্ষে ১ মিটার বা (৩৯ ইঞ্চি) প্রশস্ত চলাচলের রাস্তা থাকিতে হইবে।
নতুন যন্ত্রপাতি বাক্সবন্দী রাখাঃ
সংস্থাপিত স্ক্রু, বেল্ট বা চাবি, আবর্তনশীল চালক দন্ড, টাকু, চাকা বা দাত ওয়ালা চাকা এমনভাবে গ্রথিত, বাক্সবন্ধ অবস্থায় রাখা যাতে বিপদমুক্ত থাকতে পারে;
সব যন্ত্রে তী² অভিক্ষিপ্তাংশ বা পেঁচানো অংশ বা অন্য কোন দাঁতালো যন্ত্র বা ঘর্ষণ-গিয়ারসমূহ যেগুলো চালু অবস্থায় সবসময় বিন্যাসের প্রয়োজন হয় না সেগুলো নিরাপদ দূরত্বে রাখা।
মেঝে, সিঁড়ি এবং প্রবেশপথঃ প্রত্যেক কারখানায় -
মেঝে, সিঁড়ি এবং চলাচল পথ মজবুত করে নির্মাণ এবং সুষ্ঠুভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় এবং কখনও নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে সিঁড়ি, চলাচল পথ ও গ্যাংওয়েতে উপযুক্ত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
শ্রমিকগণ যেসব জায়গায় কাজ করে থাকেন সে সব জায়গায় নিরাপদে প্রবেশের জন্য যুক্তিসঙ্গতভাবে বাস্তব ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
উপসংহারঃ সভ্যতার ক্রমবিকাশের সাথে সাথে গার্মেন্টস শিল্পের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে। বাংলাদেশের তৈরি পোষাক শিল্পের মান ইতিমধ্যেই বহির্বিশ্বে একটি স্বতন্ত্র পরিচয় খুঁজে পেতে সক্ষম হয়েছে। তাই এই শিল্পের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের এই গতিকে ত্বরান্বিত করতে হলে, এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে প্রথমেই দৃষ্টিপাত করতে হবে এর প্রাণ শক্তির দিকে। আর তা হলো এই শিল্পে কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারী। একটি স্বাস্থ্য সম্মত কর্ম পরিবেশ, জান-মালের নিরাপত্তা, উৎপাদন বাড়াতে প্রতিটি শ্রমিক-কর্মচারীকে নিজ কর্মে আরো অনুপ্রাণিত করবে।