স্মারক নং-______/এইচ.আর.ডি/০৮/২০__ইং তারিখঃ ___/__/___ইং
এতদ্বারা _____________________________-এর সকল শ্রমিগণের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, আগামী _____________ইং, রোজঃ _______________ সকাল __________ টা থেকে _________ ঘটিকা পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন সেকশনের শ্রমিকদের নিয়ে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এবং (সংশধিত শ্রম আইন ২০১৩ এবং সংশধিত শ্রম আইন ২০১৮) এর নিমোক্ত বিষয়সমুহের আলোকে এক সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে।
উক্ত প্রশিক্ষণে উল্লেখিত বিভাগ/সেকশনের সকল শ্রমিকদেরকে অংশ গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।
তারিখঃ _________________ইং
প্রশিক্ষণের বিষয় ঃ প্রাথমিক চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা ।
ভেন্যু/স্থান ঃ প্রশিক্ষণ কক্ষ
প্রশিক্ষণের সময়ঃ সকাল ____ঘটিকা
প্রশিক্ষকঃ _____________(অফিসার, মেডিক্যাল)।
পরিদর্শকঃ _____________________(এ্যাডমিন, এইচ আর এন্ড কমপ্লায়েন্স)।
প্রশিক্ষণ কর্মশালায় আলোচ্য বিষয়সমূহঃ
১. প্রাথমিক চিকিৎসার সংজ্ঞা, ২.প্রাথমিক চিকিৎসার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য, ৩.প্রাথমিক চিকিৎসকের সংজ্ঞা,৪. প্রাথমিক চিকিৎসকের দায়িত্ব ও কর্তব্য, ৫. প্রাথমিক চিকিৎসা পদ্ধতি,৬. প্রাথমিক চিকিৎসা বক্সে রক্ষিত সরঞ্জামাদির পরিচিতি ও এর ব্যবহার বিধি, ৭. সি পি আর, ৮. উপসংহার।
অতএব, উল্লেখিত সেকশন/ বিভাগের সকল কর্মকর্তাগণের নির্ধারিত সময়ে প্রশিক্ষণ কক্ষে উপস্থিত থাকার জন্য পরামর্শ দেওয়া হইল।
ধন্যবাদান্তে,
_______________________ এর পক্ষে-
সহকারী মহাব্যবস্থাপক
(এ্যাডমিন,এইচ আর এন্ড কমপ্লায়েন্স)
অনুলিপিঃ
০১) সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগীয় প্রধান;
০২) অফিস ফাইল;
০৩) নোটিশ বোর্ড
প্রাথমিক চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা
প্রাথমিক চিকিৎসা কিঃ
কোন অসুস্থ ব্যক্তিকে রেজিস্টারকৃত ডাক্তারের কাছে বা হাসপাতালে নেওয়ার পূর্বে যে চিকিৎসা প্রদান করা হয় তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা বলে। এই চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে কোন অসুস্থ ব্যক্তিকে অনাকাঙ্খিত ঝুঁকি থেকে রক্ষা করা যায়। বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ (৮৯ ধারার উপধারা-২) অনুযায়ী একটি কারখানায় প্রতি ১৫০ জন শ্রমিকের জন্য একটি প্রাথমিক চিকিৎসা বক্স ও একজন প্রাথমিক চিকিৎসক নিয়োজিত থাকবে।
প্রাথমিক চিকিৎসার (Aim & Objective) লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ঃ
প্রাথমিক চিকিৎসার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলোকে ৩টি ধাপে ভাগ করা হয়েছে-
# রোগীকে আকস্মিক মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করা বা মৃত্যুর ঝুঁকি মুক্ত করা।
# রোগীর অবস্থার অবনতি রোধ করা।
# অবস্থার উন্নতি সাধন করা।
প্রাথমিক চিকিৎসকের সংজ্ঞাঃ
কোন অসুস্থ ব্যক্তিকে যে কোন অনাকাঙ্খিত ঝুঁকি থেকে রক্ষা করার জন্য প্রাথমিক অবস্থায় যে ব্যক্তি চিকিৎসা প্রদান করেন সে প্রাথমিক চিকিৎসক হিসেবে পরিচিত।
প্রাথমিক চিকিৎসকের মূল দায়িত্ব ও কর্তব্যসমূহ কি কি ঃ
প্রাথমিক চিকিৎসকের মূল দায়িত্ব ও কর্তব্যসমূহ নিম্নে উল্লেখ করা হলো-
# প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া;
# চিকিৎসা বাক্সের হেফাজত করা;
# রেজিস্টার খাতা মেইনটেইন করা ;
# সবসময় বাক্সে চিকিৎসার সরঞ্জাম ও ঔষধ পরিপূর্ন রাখা ও
# প্রাথমিক চিকিৎসক সনাক্তকারী বিশেষ পোশাক পরিধান করা।
# একজন প্রাথমিক চিকিৎসকের যে সকল মানবিক গুন থাকা উচিৎ তা হলো ঃ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, ধৈর্য্য, উপস্থিত বুদ্ধি, দায়িত্ববোধ, উন্নত মনমানসিকতা, শৈল্পিক নিপুণতা।
প্রাথমিক চিকিৎসা পদ্ধতিঃ
কোন ব্যক্তি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তার রোগের লক্ষণ -এর উপর ভিত্তি করে প্রাথমিক চিকিৎসার কিছু পদ্ধতি
অনুসরন করা হয়। রোগের ভিন্নতার উপর ভিত্তি করে কিছু প্রাথমিক চিকিৎসা পদ্ধতি নিম্নে দেওয়া হলো ঃ-
কেউ অজ্ঞান হলে তাৎক্ষণিক করনীয় বিষয়গুলি হলোঃ
# তাকে একটা সমতল ভূমিতে শুইয়ে দিন এবং তার পাশে হাঁটু গেড়ে বসুন। কপালে হাত দিয়ে আস্তে আস্তে মাথাটি কাত করে দিন । তার মুখটি হা করে দিন । শ্বাস- প্রশ্বাসের ব্যবস্থা করুন।
# তার চিবুক তুলে ধরুন যাতে চোয়াল সামনের দিকে যায়। মুখ খুলুন এবং নাকে দুই আঙ্গুল দিয়ে চাপ দিয়ে ধরুন।
# বড় একটা নিশ্বাস নিন এবং আপনার ঠোঁট তার মুখে চেপে ধরুন । এরপর আস্তে আস্তে তার মুখে শ্বাস ছেড়ে দিন।
# নিশ্বাসের সঙ্গে তার বুক উঠা-নামা করছে কিনা লক্ষ্য করুন। যদি উঠে তাহলে আপনার মুখটি সরিয়ে নিন। কিছুক্ষণ সময়ের মধ্যে পর পর শ্বাস প্রশ্বাস দিন এবং তার হার্ট বিট লক্ষ্য করুন।
হার্ট বিট পরীক্ষাঃ
# প্রথমে রোগীর হার্ট চিহ্নিত করুন এবং ঘাড়ের মাঝামাঝি অংশ ধরুন।
# এক হাতের গোঁড়ালি ঘাড়ের মাঝামাঝি অংশের নিচে রাখুন এবং পাঁজরের নিচে ২ থেকে ৩ ইঞ্চি পর্যন্ত চাপ দিন, তারপর চাপ বন্ধ করুন।
# প্রতি সেকেন্ডে ২-৩-৬ বার চাপ দিন এবং একবার দম নিন । এভাবে মোট ৫ বারের পর একবার করে দম দিন যতক্ষণ না পর্যন্ত হার্ট বিট ফিরে আসে।
# হার্ট বিট ফিরে পেলে চাপ বন্ধ করুন , কিন্তু কৃত্রিম শ্বাস প্রশ্বাস দেয়া বন্ধ করবেন না , যতক্ষণ না পর্যন্ত শ্বাস নিতে পারছে।
# রোগীকে যথাশীঘ্র হাসপাতালে নেবার ব্যবস্থা করুন।
বিদ্যুতায়িত হলেঃ
# বিদ্যুতায়িত ব্যাক্তিকে মাটিতে শুইয়ে মাথা এক পাশে কাত করে দিন।
# কম্বল দিয়ে তাকে ঢেকে রাখুন যাতে সে উষ্ণ থাকে ।
# যদি সে পিপাসার্ত বোধ করে তবে তার ঠোঁট ভেজা কাপড় দিয়ে ভিজিয়ে দিন।
# যদি সে অজ্ঞান হয়ে যায় তবে তার শ্বাস প্রশ্বাস লক্ষ্য করুন ।
# তাকে হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করুন।
পুড়ে গেলেঃ
# সাথে সাথে পোড়া অংশটি ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে নিন এবং যতক্ষণ জ্বালা না কমে ততক্ষণ আস্তে আস্তে পোড়া অংশে পানি ঢালুন।
# যদি ফোস্কা পড়ে তবে এক টুকরা পরিস্কার কাপড় ( তুলা নয় এমন ) দিয়ে জায়গাটি ঢেকে রাখুন।
# ফোস্কা ফাটাবেন না ।
# কোন প্রকার ক্রীম অথবা লোশন পোড়া জায়গার উপর লাগাবেন না।
কাপড়ে আগুন লাগলে করণীয় ঃ
# অগ্নি নির্বাপক দ্বারা আগুন নিভিয়ে ফেলুন ।
# ঢিলা ঢালা কাপড় হলে খুলে ফেলুন কিšতু যেসব কাপড় পোড়ার উপরে লেগে আছে তা খুলবেন না ।
# পানির সাহায্যে পোড়া অংশটি ঠান্ডা করুন , ভুলেও পোড়া অংশে ঘষা দিবেন না।
# তুলা ছাড়া অন্য কিছু দিয়ে পোড়া অংশটি ঢেকে রাখুন।
# কি পরিমান আঘাত পেয়েছে তা বুঝে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করুন।
প্রচুর রক্তক্ষরন হলে ঃ
# যদি প্রচুর রক্তক্ষরণ হয় তবে আহত অংশটি তুলে ধরুন এবং চারপাশে চাপ দিন যতক্ষণ না পর্যন্ত রক্ত বন্ধ হয়।
# কিছুক্ষনের জন্য চাপ বন্ধ করুন এবং রুমাল জাতীয় কোন কাপড় পেচিয়ে নিন।
# ক্ষত অংশের চারপাশে রুমালটি বেধে নিন এবং একটি গজের মাধ্যমে ক্ষতটিকে ব্যান্ডেজ করুন (ক্ষতটি পরিষ্কারের চেষ্টা করবেন না)।
# রোগীকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান।
কেটে গেলে ঃ
# ডেটল বা সেভলন দ্বারা জায়গাটি পরিস্কার করে নিন।
# যদি ৫ মিনিটে রক্ত পরা বন্ধ না হয় তবে একটি প্যাড ক্ষতটির উপর কিছুক্ষণ চাপ দিয়ে রাখুন ।
# ড্রেসিং করে জায়গাটি বেঁধে রাখুন এবং পরিস্কার রাখুন।
নাকে রক্ত আসলে ঃ
# তাকে একটা বেসিনের সামনে নিয়ে মিনিট দশেক নাকে চাপ দিয়ে রাখুন । টেনে রক্ত ভিতরে নেওয়া হতে তাকে বিরত রাখুন।
# এরপরও যদি রক্ত বন্ধ না হয় তবে একটি ভেজা কাপড় তার নাকে ২ মিনিটের জন্য চেপে ধরুন এবং এরপর আবার নাকে চাপ দিয়ে রাখুন ।
# রক্ত পড়া বন্ধ হবার ঘন্টা চারেক পর্যন্ত নাক দিয়ে বাতাস বের করতে বারন করুন।
CPR (CARDIO PULMONARY RESUCITATION)
উদ্দেশ্যঃ যে কোন কারণে কোন ব্যক্তির শ্বাসতন্ত্র বা হৃদযন্ত্রের কার্যকলাপ ব্যহত হলে বা অতি অল্প সময়ের জন্য বন্ধ হয়ে গেলে তা পুনরায় সচল করা।
যে সকল কারনে হয় ঃ
# অত্যধিক ভয় পেলে ;
# বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হলে ;
# অত্যাধিক গরমে থাকলে ;
# অধিক ঘাম হলে ;
# রক্তক্ষরণ হলে ;
# পানিতে ডুবলে।
পদ্ধতিঃ
# প্রথমে অজ্ঞান ব্যক্তিকে চিৎ করে শুইয়ে দিতে হবে।
# মাথা যে কোন একদিকে কাত করে রোগীকে হা করিয়ে মুখের ভিতর পরিস্কার করে দিতে হবে।
# মাথা উপরের দিকে রেখে মুখের উপর একটা রুমাল দিয়ে সেবকের মুখ আড়াআড়ি ভাবে রেখে রোগীর থুঁতনিতে ধরে সজোরে নিশ্বাস ছাড়তে হবে। এরপর রোগীর ভিতরে যাওয়া বাতাস বের হওয়ার সময় দিতে হবে।
# অন্যজন বুকের বাম পাজরে পর পর তিন বার সজোরে চাপ দিবেন।
# উপরের ৩ নং ও ৪ নং পদ্ধতি পর্যায়ক্রমে চলতে থাকবে যতক্ষন না রোগী কাশি দিয়ে শ্বাস প্রশ্বাস শুরু করে। প্রতিবার বুকের চাপের পরই পর্যবেক্ষন করতে হবে যে, রোগীর হৃদযন্ত্র চালু হয়েছে কিনা।
রোগীর হৃদযন্ত্র এবং শ্বাসতন্ত্র চালু হলে রোগীকে চিৎ করে শুইয়ে রেখেই তার দুই পা অন্য একজন দাঁড়ানো ব্যক্তির হাঁটু বা কোমর পর্যন্ত তুলে রাখতে হবে যাতে রোগীর মস্তিষ্কে পর্যাপ্ত পরিমান রক্ত পৌঁছায়।
অবশেষে স্ট্রেচারে করে পায়ের দিকটা তুলনামূলক ভাবে উঁচুতে রেখে ফ্যাক্টরীতে কর্মরত ডাক্তারের নিকট বা নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে রোগীর পরবর্তী শুশ্রুষার ব্যবস্থা নিতে হবে।
উপসংহারঃ শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সমস্যা সমাধানকল্পে পালনীয় প্রতিটি বিষয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা কর্মীকে সঠিক জ্ঞান দানের জন্য সম্ভাব্য সাধারন নীতিমালা বা পদ্ধতি সম্পর্কে দক্ষ করে গড়ে তোলা।
প্রাথমিক চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রশিক্ষণের স্থির চিত্র
চিত্রঃ ০১ চিত্রঃ ০২ ( সংযুক্ত করতে হবে)
প্রাথমিক চিকিৎসার কাজে নিয়োজিত কর্মীদের সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ বিষয়ক সচেতনামূলক প্রশিক্ষণে অংশগ্রহনকারী কর্মীদের নামের তালিকা ঃ
তারিখ : স্থানঃ সময়ঃ
সহ: মহাব্যবস্থাপক
(প্রশিক্ষক) (এ্যাডমিন এন্ড এইচ আর)