(কোম্পানির নাম) স্বনামধন্য ১০০% রপ্তানীমুখী পোশাক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান। কর্তৃপক্ষ ফ্যাক্টরীর অভ্যন্তরে ও বাহ্যিক পরিবেশ সুন্দর ও দূষণমূক্ত রাখার ক্ষেত্রে বদ্ধ পরিকর। এ লক্ষ্যে কর্তৃপক্ষ কারখানায় ব্যবহৃত যেকোন ধরনের বর্জ্য জাতীয় দ্রব্য, পদার্থ নিষ্কাষণ ও নিঃসরণের ক্ষেত্রে একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা অনুসরণ করে থাকে।
(কোম্পানির নাম) -এ বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত যেকোন কাঁচামাল বা অন্যান্য বস্তু বা শক্তির অপচয় রোধের জন্য নিন্মে উল্লেখিত নীতিমালা মেনে চলে থাকে। যেমন-
পানিঃ পানি আমাদের জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। পানি ছাড়া এক মুহুূর্ত চলা অসম্ভব। কিন্তু আমাদের ভাবতে হবে যে পানির উৎস অসীম নয়। কাজেই পানি ব্যবহারের সাথে সাথে এর অপচয় রোধ করা অতীব জরুরী। প্রতিটি মানুষের উচিত পানির অপচয় কমানো এবং এর বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তোলা। .............................. -এ কর্মরত সকল মেম্বার এবং অফিসে ব্যবহার্য (ব্যক্তিগত ও ইন্ডাষ্ট্রিজ-এর কাজে ব্যবহৃত) পানির অপচয় রোধে বদ্ধ পরিকর এবং কারখানাতে পানির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও পানির অপচয় রোধ কল্পে এই নীতি প্রয়োগে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
পরিকল্পনাঃ প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত সকল শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের জন্য এই নীতি প্রযোজ্য হবে। পানির সুষ্টু ব্যবহার ও অপচয় রোধকরণের মাধ্যমে পরিবেশ, কোম্পানীর আর্থিক সাশ্রয় ও স্বাস্থ্যকর কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য যে সমস্ত নীতিমালা গ্রহণ করা হয়েছে। যেমন-
* বিশুদ্ধ খাবার পানি শুধুমাত্র পান করার জন্য। বিশুদ্ধ খাবার পানি যেখানে সেখানে ফেলবেন না। পানির প্রতিটি ফোঁটার সদ্ব্যবহার করতে হবে।
* ভ‚-গর্ভস্থ পানির ব্যবহার কমাতে হবে এবং বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের পাশাপাশি পানি সাশ্রয়ী কল ব্যবহার করতে হবে।
* অটো সেন্সর ফ্লাশযুক্ত টয়লেট, পানির ট্যাপ, যেখানে পানির ফ্লো রেটমাত্র ১.৫ লিটার/ঘন্টা থাকবে।
* ব্যবহৃত পানি পরিশোধন করার মাধ্যমে পূণঃ ব্যবহার করতে হবে।
* প্রাকৃতিক পানির সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে সকল পর্যায়ে পানির অপচয় রোধ করতে হবে।
* পানি ব্যবহারের কার্যকারিতা বাড়াতে যেকোন লিক দ্রæত সারানো, যন্ত্রপাতি মেরামত, সরু ধারার কল এবং নির্দিষ্ট পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে।
* কর্মচারীবৃন্দকে প্রশিক্ষণ এবং শিক্ষিত করার মাধ্যমে পানি বাঁচানো বা অপচয় রোধ করা যেতে পারে।
* প্রতিদিন পানির ব্যবহার এবং সংরক্ষণ মনিটরিং করে তা রেজিষ্টারে লিপিবদ্ধ করতে হবে এবং প্রতিদিনের ডাটা বিশ্লেষণ করে পানির ব্যবহার তুলনামূলক কমিয়ে আনতে হবে।
* নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর একটি লক্ষ্য স্থাপন করতে হবে এবং সেই লক্ষ্য সবাইকে অবহিত করতে হবে।
* টয়লেট লিক অনেক সময় নীরবে হয়ে থাকে। বছরে অন্তত একবার টয়লেট লিক চেক করতে হবে।
* টয়লেট ট্যাংকে রং ছিটিয়ে দেয়া যেতে পারে। যদি ফ্লাশ ছাড়াই বোউলে রং মিশ্রিত পানি আসে তবে বুঝতে হবে তাতে লিক রয়েছে।
* মেইনটিন্যান্স পারসোনেল যেন পানির সাথে যুক্ত সকল যন্ত্র এবং কলগুলো পরীক্ষা করে তা নিশ্চিত করা।
বিবিধঃ
* যদি বাথ রুমের শাওয়ার ২০ সেকেন্ড’র কম সময়ে একটি বালতি ভরতে পারে তবে শাওয়ার হেডটি বদলাতে হবে।
* মাসে ১৫০ গ্যালন সেভ করা সম্ভব যদি ১ থেকে ২ মিনিটের মধ্যে গোসল শেষ করা যায়।
* সরু ধারার পানির কল স্থাপন করলে যথার্থ পানির ব্যবহার নিশ্চিত হয়।
* যখন ওয়াশ করা হয় তখন লোড অনুয়ায়ী পানির লেভেল মিলিয়ে নিতে হবে।
* ডার্ক কলারের কাপড় ঠান্ডা পানিতে ওয়াশ করলে পানির অপচয় রোধ হয়।
* কলের মুখে পানি সেভিং নেট ব্যবহার করা।
* বিশুদ্ধ পানি পান করবে এবং পানি যেখানে সেখানে ফেলবে না। গ্যাস ধোঁয়ার জন্য অতিরিক্ত পানি নষ্ট করবো না। পানির টেপ অবশ্যই ব্যবহারে পরে বন্ধ করে রাখবে।
* বাথরুমের পানির কলগুলি ব্যবহারের পর অবশ্যই বন্ধ করে দিবে এবং কোথাও পানির পাইপে লিক হলে তা কর্তৃপক্ষকে জানাবে।
* হাত ধোয়ার বেসিনে এবং ডাইনিং হলে ব্যবহারের পর পানির টেপ অবশ্যই বন্ধ করে দিবে।
* সম্ভব হলে ব্যবহৃত পানিকে বিশুদ্ধ করে পূণঃরায় ব্যবহার করা যায়।
* বৃষ্টির পানিকে সংরক্ষণ করে পরবর্তীতে ব্যবহার করে পানির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা যায়।
বিদ্যুৎঃ
* দিনের আলোর সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
* বিদ্যুৎ খরচ কমাতে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী বাল্ব ও সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে হবে।
* উৎপাদনের জন্য সর্বাধুনিক যন্ত্রপাতি বা মেশিনারিজ ব্যবহার করতে হবে।
* যেখানে যতটুকু বিদ্যুতের প্রয়োজন ততটুকু বিদ্যুৎই ব্যবহার করবে। অপ্রয়োজনে বাতি, ফ্যান বা এসি চালু/খোলা রাখবে না।
* কখনো মেশিনের সুইচ অন করে মেশিন ত্যাগ করবে না। মেশিন হতে উঠে গেলে অবশ্যই মেশিনের বিদ্যুৎ কানেকশন অফ করে দিবে।
* ছুটির পরে বা লাঞ্চে দুপুরের খাবারের বিরতির সময় অবশ্যই বাতি ফ্যান অফ করে দিবে যাতে অযথা বিদ্যুৎ ব্যয় না হয়।
* পুরানো যন্ত্রপাতি পরিবর্তন করে এবং সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ করে বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা যায়।
কাপড়ঃ
* কাপড় কাটার পূর্বে মার্কিং ঠিক মত কাপড়ের সাথে সঠিকভাবে বসেছে কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে যাতে অযথা কাপড় নষ্ট না হয়।
* কাপড় কাটার সময় ধীরে কাপড় কাটতে হবে যাতে কাপড় নষ্ট না হয়।
* কাপড় লে করার সময় সঠিক মাপ দিয়ে লে করবে যেন অযথা কাপড় অপচয় না হয়।
* অবশেষে টুকরো কাপড়, ঝুট নষ্ট না করে এর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা।
এক্সেসরিজঃ
* বায়ারের অর্ডার অনুযায়ী এক্সেসরিজ সংগ্রহ করে এক্সেসরিজ স্টোরে রাখতে হবে।
* বায়ার, অর্ডার নম্বর, স্টাইল ও কালার অনুযায়ী আলাদা আলাদাভাবে স্টিকার লাগিয়ে রাখতে হবে।
* কাপড়ে এক্সেসরিজ লাগানোর পূর্বেই এর সঠিক রং, সাইজ ও অন্যান্য জিনিস নির্ধারিণ করে এক্সেসরিজ লাগাবে যাতে ভুল না হয় এবং বেশী না লাগে বা না বদলাতে হয়।
* এক্সেসরিজ যাতে যেখানে সেখানে পড়ে না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে এবং এগুলি নির্দিষ্ট একটি পাত্রে রেখে পূণঃ ব্যবহারের ব্যবস্থা করতে হবে।
* বায়ারের অর্ডার অনুযায়ী সুতা সংগ্রহ করতে হবে।
* কাজ শেষ হওয়ার সাথে সাথে অতিরিক্ত লেবেল, সুতা, জিপার, ফিতা, বুতাম ইত্যাদি স্টোরে জমা দিতে হবে।
বস্তর পূণঃ ব্যবহারঃ
০১) ফ্যাক্টরীর অনেক জিনিস বা বস্তু আছে যা পূণঃ ব্যবহার করা যায় সুতরাং ঐ গুলি যাতে পূণঃ পূণঃ ব্যবহার করা যায় তার ব্যবস্থা করতে হবে। যেমন- সূতা, গামটেপ, পলিথিন ইত্যাদি।
০২) কাগজ অবশ্যই উভয় পৃষ্ঠা ব্যবহার করবে (যখন সম্ভব)।
জ্বালানীঃ গাড়ি, জেনারেটরে বা অন্যান্য মেশিনে ব্যবহৃত জ্বালানী সঠিক পরিমাণে প্রদান করা এবং উক্ত জ্বালানী পরিপূর্ণ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। অযথা গাড়ি বা কোন মেশিন চালিয়ে রাখা যাবে না।