কোম্পানির নাম -একটি ১০০% রপ্তানীমূখী পোশাক প্রস্তুতকারী ফ্যাক্টরী। অত্র প্রতিষ্ঠান তার পরিবেশ ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়ার চলমান উন্নয়ন বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের জাতীয় ও বিশেষায়িত সকল পরিবেশ আইন ও নীতিমালাই আমাদের পথ প্রদর্শক। বাংলাদেশ শ্রম আইন অনুযায়ী, শব্দ দূষণ বিধিমালা-২০০৬ ও ক্রেতাদের চাহিদার প্রতি লক্ষ্য রেখে পরিবেশগত নীতিমালা বিষয়ে একটি সুনির্দিষ্ট “শব্দ দূষণ নীতিমালা” অনুসরণ করে থাকে।
সর্বোপরি পরিবেশগত নীতিমালা প্রতিষ্ঠানের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি পরিবেশ সুরক্ষায় ইতিবাচক। আমরা বিশ্বাস করি পরিবেশ সুরক্ষায় আমাদের এই প্রচেষ্টা, যা আমাদের ক্রেতা, বিনিয়োগকারী ও কর্ম কৌশলীদের জন্য সহায়ক। নিন্মলিখিত “শব্দ দূষণ নীতিমালা” মাধ্যমে ফ্যাক্টরীকে একটি কোলাহল ও শব্দমুক্ত কর্মস্থল করার যথাসাধ্য চেষ্টা করা হয়ে থাকে।
শব্দ দূষণ পর্যবেক্ষণ নীতিমালাঃ
শব্দ দূষণ পরিবেশ দূষণ এর অন্যতম একটি মাধ্যম। যেহেতু ফ্যাক্টরীতে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন মেশিনের কার্যক্রম এর জন্য শব্দ উৎপন্ন হয়। শব্দ দূষণ নিয়মিত পর্যবেক্ষণের আওতায় রাখার জন্য সাউন্ড মিটার-এর সাহায্যে প্রতিদিন ফ্যাক্টরীর বিভিন্ন বিভাগে এবং ভারী ইলেকট্রনিক যন্ত্র (জেনারেটর, বয়লার, কম্প্রেসার, জ্যাকার্ড, উইন্ডিং, অটোপ্লাকেট ও ওয়াস মেশিন)-এর শব্দ পরিমাপ করা হয়।
ফ্যাক্টরীতে একজন পরিবেশ কর্মকর্তা রয়েছেন, যিনি শব্দ দূষণ যাতে নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে থাকে অথবা নির্দিষ্ট সীমার উপরে না যায় তা নির্ণয় করার জন্য সাউন্ড মিটারের সাহায্যে প্রতিদিন ফ্যাক্টরীর বিভিন্ন বিভাগে এবং ভারী ইলেকট্রনিক যন্ত্র (জেনারেটর, বয়লার, কম্প্রেসার, জ্যাকার্ড, উইন্ডিং, অটোপ্লাকেট ও ওয়াস মেশিন)-এর শব্দ পরিমাপ করে লিখিত রেকর্ড পেশ করেন এবং শব্দের মানমাত্রা সহনীয় পর্যায়ে রাখার জন্য নিন্মবর্ণিত ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকি।
জেনারেটর, বয়লার, কম্প্রেসার, জ্যাকার্ড, উইন্ডিং, অটোপ্লাকেট ও ওয়াস মেশিনে কর্মরত সকল অপারেটরদের জন্য আত্মরক্ষামূলক সরঞ্জাম যেমন-এয়ার মাফ, গ্লাভস্ এবং গামবুট ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়। তাছাড়া তার স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার জন্য কমপ্লায়েন্স বিভাগ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিশ্চিত করে থাকে।
প্রতিদিন শব্দ পরিমাপের রেকর্ড রেজিষ্টারে লিপিবদ্ধ করা হয়।
বাংলাদেশ শব্দ দূষণ বিধিমালা-২০০৬ অনুসারে
বিভিন্ন এলাকার সংজ্ঞাসমূহঃ
নীরব এলাকাঃ “নীরব এলাকা” অর্থ-হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত বা একই জাতীয় অন্য কোন প্রতিষ্ঠান এবং উহার চতুর্দিকের ১০০ মিটার পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকা এবং বিধি ৪-এ উল্লেখিত কর্তৃপক্ষ ঘোষিত বা চিহ্নিত এমন কোন এলাকা।
আবাসিক এলাকাঃ “আবাসিক এলাকা” অর্থ-কোন এলাকা যেখানে মানুষ পরিবার পরিজনসহ বসবাস করে।
মিশ্র এলাকাঃ “মিশ্র এলাকা” অর্থ-আবাসিক, বাণিজ্যিক বা শিল্প এলাকা হিসেবে একত্রে ব্যবহৃত একাধিক ধরনের এলাকা।
বাণিজ্যিক এলাকাঃ “বাণিজ্যিক এলাকা” অর্থ-ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে পণ্য বিনিময়ের লক্ষ্যে ব্যবহৃত দুই বা ততোধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, দোকানপাট, হাটবাজারও ইহার অন্তুর্ক্তূক্ত হইবে।
শিল্প এলাকাঃ “শিল্প এলাকা” অর্থ-এক বা একাধিক শিল্প ও কল-কারখানা রহিয়াছে এইরূপ এলাকা।
ব্যাখ্যাঃ
ক) ভোর ৬টা হতে রাত ৯টা পর্যন্ত ব্যাপ্ত সময় দিবাকালীন সময় হিসেবে চিহ্নিত হবে;
খ) রাত ৯টা হতে ভোর ৬টা পর্যন্ত ব্যাপ্ত সময় রাত্রিকালীন সময় হিসেবে চিহ্নিত হবে।
বিঃ দ্রঃ dB(A) Leq দ্বারা মানুষের শ্রবণীন্দ্রিয়ের সহিত সম্পর্কিত নির্দিষ্ট সময়ব্যাপী শব্দের গড় মাত্রাকে বুঝাইবে (Time Weighted Average) যাহা ডেসিবল অ-স্কেলে নির্দেশিত।
ব্যাখ্যাঃ পরিমাপকালে মোটযানটি স্থির অবস্থায় থাকিবে এবং ইহার ইঞ্জিনের শর্তাদি নি¤œরূপ হইবেঃ
ক) ডিজেল ইঞ্জিন সর্বোচ্চ ঘূর্ণনবেগের দুই তৃতীয়াংশে ভারশূণ্য ত্বরণ;
খ) গ্যাসোলিন/সিএনজি চালিত ইঞ্জিন সর্বোচ্চ ঘূর্ণনবেগের দুই তৃতীয়াংশে ভারশূণ্য ত্বরণ;
গ) মোটর সাইকেল সর্বোচ্চ ঘূর্ণনবেগ ৫,০০০ rpm অধিক হইলে উহার দুই-তৃতীয়াংশ এবং সর্বোচ্চ ঘূর্ণনবেগ ৫,০০০ rpm এর নিন্মে হইলে উহার তিন চুতুর্থাংশ।
নিন্মবর্ণিত স্থানে, ক্ষেত্রে, প্রচার-প্রচারণায় এবং অনুষ্ঠানে প্রযোজ্য হইবে না, যথাঃ-
মসজিদ, মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডা বা অন্য কোন ধর্মীয় উপসনালয়;
ঈদের জামাত, ওয়াজ মাহফিল, নাম-কীর্ত্তন, শবযাত্রা এবং জানাজাসহ অন্যান্য ধর্মীয় অনুষ্ঠানে;
সরকারী বা সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রচারকালে;
প্রতিরক্ষা, পুলিশ বাহিনী ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষের দাপ্তরিক কাজ সম্পাদনকালে;
স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস, বিজয় দিবস, ২১শে ফেব্রুয়ারী, ১লা বৈশাখ, মহররম বা সরকার কর্তৃক ঘোষিত অন্য কোন গুরুত্বপূর্ণ দিবসের অনুষ্ঠান চলাকালে;
আকাশযান ও রেলগাড়ী চলাচলের সময়;
এ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার ব্রিগেড ব্যবহারকালে;
ইফতার ও সেহ্রীর সময় প্রচারকালে;
প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের বা অন্য কোন বিপদে বা বিপদের আশংকায় বিপদ সংকেত প্রচারকালে;
মৃত্যু সংবাদ প্রচারকালে বা কোন ব্যক্তি নিখোঁজ থাকিলে বা গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হারানোর বিষয় প্রচারকালে; এবং
সরকার কর্তৃক সময়ে সময়ে, অব্যাহতিপ্রাপ্ত অন্য কোন কার্যক্রম সম্পাদনকালে।
কতিপয় ক্ষেত্রে শব্দের মানমাত্রা অতিক্রমঃ কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে, কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নীরব এলাকা ব্যতীত অন্যান্য এলাকায় নি¤œবর্ণিত অনুষ্ঠানে শব্দের মানমাত্রা অতিক্রমকারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করিতে পারিবেন, যথাঃ-
খোলা বা আংশিক খোলা জায়গায় বিবাহ বা অন্য কোন সামাজিক অনুষ্ঠান;
খোলা বা আংশিক খোলা জায়গায় ক্রীড়া প্রতিযোগীতা, কনসার্ট ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান;
খোলা বা আংশিক খোলা জায়গায় রাজনৈতিক বা অন্য কোন ধরনের সভা অনুষ্ঠান; এবং
বিভিন্ন ধরনের মেলা, যাত্রাগান ও হাট-বাজারের বিশেষ কোন অনুষ্ঠান।
বনভোজনের উদ্দেশ্যে কোন অনুষ্ঠান; (তবে শর্ত থাকে যে, আবাসিক এলাকা হতে অন্ততঃ ১(এক) কিলোমিটার দূরবর্তী কোন স্থানে যেখানে শব্দের মানমাত্রা অতিক্রমকারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা যাইবে)।
তবে শর্ত থাকে যে, জরুরী ক্ষেত্রে সময় স্বল্পতার উপযুক্ত কারণ উল্লেখপূর্বক অনুষ্ঠান আয়োজনের ১ (এক) দিন পূর্বে দরখাস্ত দাখিল করা যাইবে।